পিতা ও পুত্রের মিলন (হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনী)-১ম পর্ব
হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা ক্ষমা লাভের পরে আল্লাহ্র দরবারে শুকরিয়া আদায় করল এবং এস্তেগফার পা্ঠ করল। অতপর ছিলজাস, নামক এক ভাইকে সকলে নির্বাচন করল যে, সে দ্রুত গিয়ে পিতাকে ইউসুফ (আঃ)-এর খরব জানিয়ে দিবে। ছিলজাস ঘোড়ার চেয়ে দ্রুত পথ চলার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল। তাই তাঁকে এক্ষেত্রে নির্বাচন করা হল।
ইয়াহুদ হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর দরবারে আরজ করে বলল, ভাই! পিতা সম্পূর্ণ অন্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এমতাবস্থায় তাঁকে এতদূরে নিয়ে আসা বড়ই কঠিন ব্যাপার। হযরত ইউসুফ (আঃ) তখন নিজের একটি জামা ইয়াহুদের হাতে দিয়ে বললেন, তোমরা এই জামাটি তাঁর চোখে লাগিয়ে দিও তাহলে তাঁর অন্ধত্ব দূর হয়ে যাবে। তখন তাঁর পক্ষে এখানে আসা সহজ হবে।
ছিলজাস হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর জামাটি নিয়ে দেশের দিকে রওয়ানা হন। পিতা বেশ কিছু দিন যাবত খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় কাটিয়েছেন। কিন্তু গত দিন থেকে তাঁকে খুবই আনন্দিত দেখচ্ছিল। তিনি লোকজন ডেকে বার বার বলছিলেন, আমি ইউসুফ (আঃ)-এর ঘ্রাণ পাচ্ছি। আল্লাহ্ মেহেরবানীতে হয়ত শীঘ্রই আমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করতে যাচ্ছি। তিনি এ সমস্ত কথা বলতে থাকেন এবং ফাঁকে ফাঁকে নফল নামাজের নিয়ত করে দাঁড়িয়ে যান।
ছিলজাস একদিনের মধ্যে গিয়ে সে পিতার নিকট পৌঁছল। পিতার সেই শোক ঘরে পৌঁছে বলল, প্রিয় পিতা! আমাদেরকে ক্ষমা করুন। আমারা আপনার নিকট ইতোপূর্বে যা কিছু বলেছি সবই মিথ্যা। ইউসুফকে বাঘে খায় নাই আমরা তাঁকে বিক্রি করে দিয়েছিলাম। ইউসুফ ভাগ্যক্রমে, তাঁর স্বপ্ন অনুযায়ী সে আজ মিশর রাজ্যের রাজ অধিরাজ। সে আপনাকে তাঁর রাজমহলে নিয়ে যাবার জন্য আমাকে প্রেরণ করেছে। আপনি অতি সত্ত্বর তৈরি হয়ে নিন। ইউসুফ আগামী পরশু দিনের মধ্যে সেখানে পৌঁছার কথা বলে দিয়েছে। আপনাকে নিয়ে সেখানে পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার। হযরত ইয়াকুব (আঃ) ইউসুফের জীবিত থাকার খবর শুনে হাসিমুখে ছিলজাস কে বুকে জড়িয়ে ধরলেন এবং জিজ্ঞাস করলেন তুমি কি সত্য কথা বলছ? ছিলজাস বলল, পিতা জীবনে আর কোন দিন মিথ্যা কথা বলব না।
সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
পিতা ও পুত্রের মিলন (হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনী)-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন