পানি সম্পর্কিত মু’যিযা
হোদায়বিয়াতে একবার ছাহাবায়ে কেরামরা পিপাসায় কাতর হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট আরজ করলেন। সহযাত্রীদের কারো নিকট পান করবার এবং আযূ করার মত পানির কোন ব্যবস্থা নেই, আপনি অযূ করার পর পাত্রে যে সামান্য পানি পড়ে আছে এখন এটাই শেষ সম্বল। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বীয় হস্ত মোবারক পাত্রের ভেতর ঢুকিয়ে দিলেন। সাথে সাথে তার আঙ্গুল হতে পানির স্রোত বইতে লাগল। সকল সাহাবারা তৃপ্তির সাথে পানি পান করে অযূ করলেন। হযরত জাবের (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল, সাহাবাদের সংখ্যা কত ছিল? তিনি বললেন, আমাদের সংখ্যা পনেরশ ছিল বটে কিন্তু এ সংখ্যা যদি এক লক্ষও হত তবুও সকলের প্রয়োজন মিটাতে ঐ পানিই যথেষ্ট ছিল।
অনুরূপ একটি মু’যিযা হযরত মূসা (আঃ) হতেও প্রকাশ পেয়েছিল। তিনি হাতের ছড়ি দ্বারা পাথরের উপর আঘাত করা মাত্র তা হতে পানি প্রবাহ শুরু হত। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মু’যিযাটি হযরত মূসা (আঃ) এর মু’যিযা হতেও উত্তম ছিল। কেননা, পাথর হতে পানি বের হওয়া কোন অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন—
وَإِنَّ مِنَ الْحِجَارَةِ لَمَا يَتَفَجَّرُ مِنْهُ الْأَنْهَارُ ۚ وَإِنَّ مِنْهَا لَمَا يَشَّقَّقُ فَيَخْرُجُ مِنْهُ الْمَاءُ
অনুবাদঃ আর কোন পাথর তো এরূপও আছে যেগুলো হতে নহরসমূহ ফুটে প্রবাহিত হয় এবং ঐ পাথর গুলোর মধ্যে কোন কোনটি এমনও আছে, যা ফেটে যায় অনন্তর এগুলো হতে পানি বের হয়ে আসে। (সূরা বাকারাঃ ৭৪)
পক্ষান্তরে চর্ম মাংস হতে পানি বের হয়ে প্রবাহিত হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাছাড়া মূসা (আঃ) এর সে মু’যিযার ক্ষেত্রে লাঠি দ্বারা পাথরের উপর আঘাত করতে হত, কিন্তু পেয়ারা নবী (সাঃ) এর ক্ষেত্রে কোন প্রকার আঘাত ছাড়াই আঙ্গুল হতে পানি প্রবাহিত হত। (ছহীহ বুখারী ও মুসলিম)