ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাটকটি এ জায়গাতেই মঞ্চায়িত হল । বিরাট এক সেনাবাহিনী নিয়ে বাংলা বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পরাজিত হলেন , মাত্র ৩০০০ ব্রিটিশ ( ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ) সেনার কাছে । তিনি অবশ্য হাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন । তারই সভাসদদের বিশ্বাসঘাতকতার কারনে । মূল হাত ছিল হিন্দুদের , তাদের হাত শক্তিশালী করেছে কিছু ক্ষমতালোভী মুসলিম ।
এখান থেকেই পাকাপোক্তভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সূচনা । সুচতুর ব্রিটিশরা কিন্তু শুরু থেকেই জানতো তারা এখানে কাদের পাশে পাবে । তবে তারা এও জানতো দীর্ঘ সময় ধরে এ অঞ্চলে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় শান্তিতে একত্রে বসবাস করছে । এ অবস্থা বজায় থাকলে তারা বেশিদিন ভারত শাসন করতে পারবে না । অতএব অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে । তারা গোটা ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিল ।
লাভ হল দুইটা ।
১) সব সময় হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকবে । আর তারা আরামেই ভারতকে শোষন করতে পারবে ।
২) এ লড়াইয়ে ব্রিটিশরা সংখ্যাগরিষ্ঠ্য হিন্দু জাতিকেই পাশে পাবে । কারন মুসলিম অধীনে থাকার চেয়ে ব্রিটিশ অধীনে থাকাকেই লাভবান হিসেবে তাদের কাছে তুলে ধরা হবে ।
ব্রিটিশদের আরেকটা পরিকল্পনা ছিল এ অঞ্চলকে পদানত করে রাখার ব্যপারে । তা হল , মুসলিম শাসকদের বিকৃত করে উপস্থাপন করা । আর এর ফল আমরা আজও ভোগ করছি । আমরা কালপ্রিট জালালকে ( মুঘল সম্রাট আকবর ) চিনি গ্রেট হিসেবে । কিন্তু সত্যিকারের মহান শাসকদের চিনিই না , চিনলেও তাদের অত্যাচারী হিসেবে চিনি । যা তারা আদৌ নন ।
এর আরেকটা সূদুরপ্রসারী ফল বিদ্যমান । তা হল ভুল ইতিহাসের কবলে পরে মুসলিমরা নিজেরাই তাদের গৌরবময় ইতিহাসকে অস্বীকার করবে । নিজ ধর্মকে অস্বীকার করবে । এর জলজ্ব্যান্ত প্রমান আজকের মুসলিম সম্প্রদায় । কিন্তু আমরা নিজেরাও জানি না কতটা গৌরবময় আমাদের ইতিহাস ! কতটা মহান ছিলেন আমাদের শাসকরা !
আমাদের পরবর্তী পোস্টগুলো ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ে হবে । ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস , মহান সম্রাটদের গল্প , নোংরা ষড়যন্ত্র , সত্যিকারের ইতিহাস আর বানানো ইতিহাসের পার্থক্য নিয়ে হবে । কেউ যেনো একে শুধু ভারতের ইতিহাস না ভাবেন । এগুলো আসলে আমাদের মুসলিমদের নিজেদের ইতিহাস । আমদের গৌরবের ইতিহাস । আর আমাদের নিজেদের ভূখন্ড থেকে বঞ্চিত করার ইতিহাস …………… ।