নিকোলা আনেলকা

নিকোলা সেবাস্তিয়েন আনেলকা (জন্ম ১৪ মার্চ ১৯৭৯):
আনেলকা ইয়েভলিনের লে শেনেতে জন্মগ্রহণ করেন, তার বাবা-মা ১৯৭৪ সালে মার্টিনিক থেকে স্থানান্তরিত হন। পরে তারা প্যারিসের কাছে ত্রাপে বসতি স্থাপন করেন।তিনি একজন ফরাসি পেশাদার ফুটবল ম্যানেজার এবং সাবেক খেলোয়াড়, যিনি ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলেছেন। একজন খেলোয়াড় হিসেবে, তিনি নিয়মিতভাবে তার দেশের জাতীয় দলে অংশ নিতেন এবং প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে গোল করতেন। গোল করা এবং সহায়তা করার ক্ষমতার জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। তাকে একাধারে চটপটে এবং রুচিশীল খেলোয়াড় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার ভাল হেডিং ক্ষমতা, টেকনিক, শুটিং এবং বল ছাড়া সঠিক গতিবিধি ছিল। তিনি মূল স্ট্রাইকার এবং দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে উভয় ভূমিকায় খেলতে সক্ষম ছিলেন।শৈশবের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ধর্ম নিয়ে আলোচনা করার পর, আনেলকা ২০০৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং তার মুসলিম নাম হিসেবে “আবদুল-সালাম বিলাল” গ্রহণ করেন। আনেলকা বলেছেন যে তিনি প্রথমে মুসলিমদের রমজান মাসে দিনের বেলা রোজা রাখতেন, তবে পরে বুঝতে পারেন যে রমজানের পরই তিনি প্রায়ই চোট পেতেন, তাই তিনি আর কঠোরভাবে রোজা পালন করেন না।আনেলকা সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং মুসলিম নাম হিসেবে “বিলাল” বেছে নিয়েছেন।

ইসলাম গ্রহণ এবং তার পরবর্তী সময়:
নিকোলাস আনেলকা ২০০৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকাকালীন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার শৈশবের কয়েকজন বন্ধু যারা ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিলেন, তাদের সঙ্গে ধর্মীয় আলোচনা থেকেই আনেলকার ইসলামের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। তিনি তখন ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য আরও পড়াশোনা করেন এবং শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি তার নাম পরিবর্তন করে “আবদুল-সালাম বিলাল” রাখেন। আনেলকার ইসলাম গ্রহণ ছিল তার জীবনে একটি বড় পরিবর্তন। তিনি তার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করতে শুরু করেন। রমজান মাসে প্রথমে তিনি রোজা রাখতেন এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনে চলতেন। তবে খেলোয়াড় জীবনে শারীরিক চাহিদা থাকার কারণে তিনি রোজা রাখা কিছুটা কঠিন বলে মনে করেন। তিনি বলেন, রোজার পরপরই প্রায়ই চোট পেতেন, তাই তিনি পরবর্তীতে রোজা পালন খুব কঠোরভাবে না করার সিদ্ধান্ত নেন।
ইসলাম গ্রহণের পর আনেলকার জীবনে আরও কিছু পরিবর্তন আসে। তিনি আরব আমিরাতের কোনো ক্লাবে খেলার জন্যও প্রস্তুত ছিলেন এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছিলেন। তবে সেটি ঘটেনি এবং তিনি তুরস্কে কিছুদিন খেলেন, এরপর আবার ইংল্যান্ডে ফিরে এসে কয়েকটি ক্লাবে খেলার সুযোগ পান। তার মুসলিম জীবনে তিনি ধর্মীয় বিশ্বাস ও পেশাদার ফুটবলকে সমন্বিত করে এগিয়ে চলেন এবং একধরনের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেন। ইসলাম গ্রহণের পর আনেলকার ব্যক্তিগত জীবনেও বেশিরভাগ সময় শান্তিপূর্ণ ও সংযত ছিলেন, যদিও কখনও কখনও তিনি বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
ইসলাম গ্রহণের পর আনেলকা তার ধর্মীয় বিশ্বাসকে খুব গুরুত্ব দিয়ে পালন করতেন এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি অনুযায়ী চলার চেষ্টা করতেন। যদিও তিনি একজন পেশাদার ফুটবলার ছিলেন, তবুও তিনি তার বিশ্বাসকে প্রাধান্য দিয়ে চলতেন। আনেলকা তার ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি তার নিষ্ঠা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করেছেন। তিনি সব সময়ই তার নতুন জীবন এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি গর্ববোধ করতেন। তিনি বলেছেন যে ইসলাম তাকে জীবনে শান্তি এবং ভারসাম্য দিয়েছে, যা তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলেছে। আনেলকা বিভিন্নবার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাতব্য কার্যক্রম এবং সমাজসেবামূলক উদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন এবং ইসলামি দেশগুলোতে খেলতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, যদিও সেটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।

 

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।