নাসারা
তৎকালীন সময়ে নাসারা খ্রীষ্টানদের অবস্থা তাদের উৎসমূল ইহুদীদের চেয়ে কোন অংশে কম ছিল না। বরং ইহুদীদের চেয়েও তাদের অবস্থা আরো শোচনীয় ছিল। সারা দুনিয়ায় তারা নিজেদেরকে খ্রীষ্টান, খ্রীষ্ট ধর্মালম্বী এবং হযরত ঈসা (আঃ) এর অনুসারী বলে প্রচার করে বেড়ালেও বর্তমান তাদের ধর্মগ্রন্থ বলে কথিত ইঞ্জিল গ্রন্থ আল্লাহর প্রেরিত সে ইঞ্জিল নয় এবং হযরত ঈসা (আঃ) ও এ কিতাব তাদেরকে দিয়ে যান নি।
হযরত ঈসা (আঃ) এবং নিরলস প্রচেষ্টায় মাত্র একশ’ বিশ জন পুরুষ ও কয়েকজন স্ত্রী লোক তাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল। তার প্রতি বিশ্বাসীদেরকে লোক চক্ষুর অন্তরালে পালিয়ে বেড়াতে হত। ঈসা (আঃ)এর উপর ঈমান আনার কথা প্রকাশিত হয়ে পড়লে আর রক্ষা ছিল না। বর্তমানে সে বাইবেলকে তারা খ্রীষ্টানদের ধর্মগ্রন্থ বলে অনুসরণ করে চলেছে।
তারা হযরত ঈসা (আঃ) এর ঊর্ধ্বজগতে নিয়ে যাওয়ার সাড়ে তিনশ বছর পর পাদ্রীদের দ্বারা রচিত হয়েছে, যা ষোল আনাই মনগড়া মিথ্যা। খ্রীষ্টান ধর্মের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ত্রিত্ববাদ। অর্থাৎ পবিত্র পিতা আল্লাহ, পবিত্র পুত্র (ঈসা মাসীহ) ও পবিত্র আত্মা (মাতা-মারইয়াম)-এ তিনে মিলে খ্রীষ্টাবাদের খোদা।
খ্রীষ্টানদের বিশ্বাস অনুসারে, হযরত ঈসা (আঃ) আল্লাহর পুত্র ও অবতার। ইহুদী ও খ্রীষ্টান পুরোহিতদের হাতে পড়েই আসল ইঞ্জিল বিকৃত হয়ে ত্রিত্ববাদের জন্ম হয়েছে। তারা হযরত মারইয়াম (আঃ) কেও খোদায়ী প্রদানে কোন প্রকার কার্পণ্য প্রদর্শন করেনি।
খ্রীষ্ট ধর্মে বিস্তারিত ও সুষ্পষ্ট এমন কোন বিধান কখনও ছিল না, যা দিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যসমূহের সমাধান বা যার উপর কোন সভ্যতার ভিত স্থাপিত হতে পারে। খ্রীষ্ট ধর্মের অপূর্ণ বিধানের আলোকে রাষ্ট পরিচালনাও সম্ভব নয়।
কেননা, এ ধর্মের বিধান না স্পষ্ট আর না সম্পূর্ণ। ইঞ্জিল নামে বাইবেলের যে উপদেশমালা বর্তমানে খ্রীষ্টানদের মাঝে প্রচলিত আছে, তাতে এমন কিছু বিধান ছিল যার উপর ভিত্তি করে তাওহীদের আকীদা বিশ্বাসের একটা প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত হলেও পাওয়া যেত, কিন্তু সেন্টপলের হাতে পড়ে বাইবেল পরিবর্তন হতে হতে যে দুর্দশা কবলিত হ্যাঁ, তাতে খ্রীষ্ট ধর্ম ও তাদের ধর্মগ্রন্থ বলে কথিত বাইবেল এ বৈশিষ্ট্যটুকুও তাতে আর রইল না। কেননা, সেন্টাল প্রতিমা পূজার জাহেলী পরিবেশে প্রতিবালিত ছিল।
প্রতিমা পূজার জাহেলী পরিবেশের যে কদাচার হতে তার উত্থান সে খ্রীষ্ট ধর্মে সেসবেরই অনুপ্রবেশ ঘটায়। মোট কথা, ঈসা (আঃ) আসমানে তুলে নেয়ার পর খ্রীষ্ট ধর্ম বিভিন্ন বিষয়ের সংমিশ্রণে এক ধর্মীয় মিশ্রণে পরিণত হয়।