ধণী কৃপণের কাণ্ড
সাংসারিক জীবনে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কিছুটা কৃপণ হওয়ার প্রয়োজন। যা আমাদানী হয় সবকিছু খরচ করার অভ্যাস রয়েছে অনেক মুসলমানের।
মাড়োয়রী মহাজনদের অর্থ খরচ করার নির্দিষ্ট নীতি আছে। এ নীতির বড় কঠোর।
এরূপ এক বিত্তমান মাড়োয়ারী মহাজন ছিল। সে একবার অসুস্থ হলো।
কিন্তু দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোন চিকিৎসা করালো না। লোকজন এসে চিকিৎসার করার জন্যে অনেক অনুরোধ করলো কিন্তু সে রাজি হলো না। অবশেষে রোগ যখন বেড়ে গেল তখন মরে যাওয়ার ভয়ে আত্মীয়-স্বজন কান্নাকাটি করতে লাগলো।
অবশেষে মহাজন চিকিৎসা করাতে কত টাকা খরচ হবে জানতে চাইলো।
ডাক্তার ফি, ওষুধ-পত্র ইত্যাদি মিলিয়ে আনুমানিক খচর তাকে বলা হল।
মহাজন বললো, এরপর মরতে কত খরচ হবে?
লোকেরা বলল, মৃত দেহ পোড়াতে মাত্র এক মন কাঠ প্রয়োজন হবে!
মহাজন দেখলো চিকিৎসা করার চেয়ে মরে যাওয়ার খরচ কিছুটা কম হয়। সুতরাং মরে যাওয়াই ভাল। তাতে খরচ কম হবে। টাকা বেঁচে যাবে। অতএব এ লোককে মহাজন না বলে (বিরাট এক জিন) বলাই শ্রেয়।
উল্লিখিত ঘটনাটি সত্য হোক বা মিথ্যা হোক সেটা আমাদের তা দেখার বিষয় নয়। কিন্তু তাদের খরচ করার নীতিটা এ ঘটনার প্রায় কাছাকাছি।
মুসলমানদের অর্থ ব্যয়ের অভ্যাসের পরিবর্তন হয় না কেন? আমদানীর সব কিছু খরচ করে যখন অভাবগ্রস্থ হয়ে যায় তখন শয়তান তাকে হারাম পথে উস্কিয়ে দেওয়ার সুযোগ পায়।
কৃপণ হওয়াতে লজ্জার কিছু নেই। আপনারা যাকে কৃপণ হওয়া বলেছেন শরীয়ত সেটাকে আমানতদারী বলে থাকে।
শরীয়ত মতে কৃপণ সে ব্যক্তি যে (একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ মালিক হওয়া সত্তেও) যাকাত দেয় না, হজ্জ করে না কোরবানী করে না, ফেতরা দেয় না, অভাবী লোককে সাহায্য করে না।
সুতরাং এসব খরচ করার মনোভাব থাকার পর কোন শরীয়ত মতে কৃপণ থাকতে পারে না।
এরপর নিজের এবং পরিবারের সদস্য স্ত্রী ও সন্তান দের জন্যে সে পরিমাণ খরচ করতে হবে যে পরিমাণ খরচ না করলে দৈহিকভাবে কষ্ট হবে অথবা বিপদে পড়ে যাবে। কোন শখের জিনিস ক্রয় করা হারাম। কারণ তোমার সম্পদ মূলত তোমার নয়। এগুলো তোমার কাছে আল্লাহ পাকের আমানতস্বরূপ রয়েছে। যে সকল ক্ষেত্রে নির্দেশ রয়েছে শুধু সে সকল ক্ষেত্রে খরচ করতে পার।
অন্যাথায় দুনিয়াতে ভোগান্তি হবে এবং পরকালেও রয়েছে আমানত খেয়ানত করার অপরাধে কঠোর শাস্তি।
(এফাতুল য়্যাওমিয়্যাহ খণ্ড-২ পৃষ্ঠা- ১০)