দায়িত্ব পালনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর তৎপরতা
নমরুদের শোচনীয় মৃত্যুর পড়ে রাজ্যের চিন্তাশীল ও বিচক্ষণ ব্যাক্তিবর্গের একটি দল হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর নিকট চলে আসেন। তারা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কে রাজ তখতে সমাসীন হবার জন্য অনুরোধ করেন। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বলেন, রাজকার্য আমার মুখ্য দায়িত্ব নয়। দাওয়াতী কার্য যা আমার উপর অর্পিত আছে তা সমাধা করে রাজকার্য পরিচালনা করার অবকাশ আমার নেই। যদি আমি কখনও নিজ দায়িত্বের বোঝা কিছুটা লাঘব করতে পারি, সে দিন এ বিষয় চিন্তা করব এখন নয়।
এই বলে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) সিরিয়ার পথে রওয়ানা করলেন। নবীর সঙ্গীদের মধ্যে থেকে কতকে নবীর সাথে সিরিয়া যাবার আগ্রহ প্রকাশ করল। নবী তাদেরকে নিয়ে রওয়ানা করলেন। প্রথমে তিনি সিরিয়ার অন্তর্গত রহিয়া আসে পৌছলেন। সেখানে কয়েকদিন থেকে বহু সংখ্যক মানুষকে দ্বীনের তালিম দিলেন। অতপর তিনি ফোরাত নদীর তীরে আসে পৌছেন। সেখানে দাওয়াতের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে দ্বীনী শিক্ষা দেন। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পড়ে তিনি হলব নামক এক শহরে এসে পৌঁছেন।
সেখানে তিনি দ্বীন প্রচার করেন এবং বহু ভক্ত তৈরি করেন। অতপর তিনি চীন যাত্রা করেন। চীনে তিনি এক বিরাট এলাকা সফর করেন এবং মানুষকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করেন। চীনে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে তাকে বহু বাধাগ্রস্ত হতে হয়েছে। সেখানের অধিকাংশ মানুষ ছিল জংলী জাতের। অতএব তাদের মধ্যে ইসলামের কথা বলতে গেলে তারা নবীর প্রতি আক্রমণ করে। নবী অতি সান্ত মেজাজে তাদের সাথে শত্রুতার পরিবর্তে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হন। যাতে শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে থেকে বহুলোক ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় গ্রহন করে।
অতপর নবী দামেস্কে আসেন। দামেস্কের মানুষ অনেকেই পূর্বে ইসলাম কবুল করেছিল। এবার নবীকে পেয়ে তারা ইসলামের জীবন যাপন পদ্ধতি সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলেন। ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে সেখানে একটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেন।
দামেস্ক থেকে তিনি তীর শহরে আসেন। সেখানকার মানুষ শিক্ষাদীক্ষায় খুবই অনগ্রসর ছিল। তারা নবী অ তার সঙ্গীদের আগমনের খবর পেয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পাহাড়ে পালিয়ে গেল। সেখানে অল্প সময় থেকে নিতি কেনানে যাত্রা করলেন। কেনানের মানুষ ছিল সমকামী। পুরুষে পুরুষে ও নারীতে নারীতে মিলন করত। তারা ডাকাতী ও চুরিতেও খুব পারদর্শী ছিল। এখানে হযরত লুৎ (আঃ) – এর বংশধরেরা বাস করত। হযরত লুৎ (আঃ) – এর বদদোয়ায় এ কওমের উপর গজব নাজিল হয়েছিল। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এখান থেকে সোজা বায়তুল মোকাদ্দাস তাশরীফ আনেন। হযরত সায়েরা ও হযরত হাজেরা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) – কে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হলেন।
আল্লাহ তা’য়ালার অপার মহিমা, যেদিন নবী নিজ ঘরে পৌঁছেন ঐ দিন রাতে হাজেরার সাথে সহবাসের মাধ্যমে হযরত ইসমাইল (আঃ) – এর নূর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর পৃষ্ঠদেশ হতে হাজেরার রেহেমে চলে আসে। পরের দিন সায়েরা বিবি হাজেরার চেহারার উজ্জ্বলতা দেখে অনুমান করে ফেললেন যে হাজেরা গর্ভবতী হয়েছেন।