দাড়িদাদু আর মুখোশ মানুষেরা — ঊর্মি পর্ব-২

দুর্গাপূজা আসতে আর ৭ দিন, কাল মহালয়া। আমাদের জীবনে এখন খুশির সময়-আনন্দের সময় প্রতীক্ষার সময়। মনমেজাজ ফুরফুরে হয়ে ওঠার কথা- নতুন জামার গন্ধ, কাশফুল, বর্ষাশেষের মেঘলা দুপুর ছাড়িয়ে রোদ্দুরের লুকোচুরি। কিন্তু আমার সময় বড্ড কঠিন যাচ্ছে। লোকজন কে যে বন্ধু আর কে যে শত্রু ঠিক বুঝতে পারছি না! কে যে কখন কার মুখোশ পরে অন্য ভেক ধরে আক্রমণ চালাবে বুঝতে পারছিনা। ফলে চেনা পরিচিত লোকজনকেও সহজে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার আত্মরক্ষার অস্ত্র বলতে আমার প্রিয় হাতুড়িটা (থর-এর মতো বিশাল না হলেও মোটামুটি ভালই শক্তিশালী )।

বাইরে প্রচুর চেঁচামেচি হচ্ছে, চারপাশের দেওয়াল, আসবাবপত্র দেখে মনে হচ্ছে বাড়িতেই আছি, তবু মনের সংশয় কাটে না… জানালার বাইরে থেকে পরিচিত গলায় যে আমার নাম ধরে ডাকছে সে কি সত্যি নাকি আরো একটা ফাঁদ? যাচাই করতে আমি এগিয়ে গিয়ে জানালা খুলি, মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে আসে; ভাগ্যিস শেষ মুহূর্তে জানালার সামনে থেকে খাটের কোণে সেঁধিয়ে গেছিলাম তাই এ যাত্রায় বেঁচে গেছি। তারপর সাবধানে হাতুড়িটা বের করে জানালার এপার থেকে লোকটার খুলিতে ঠিক জায়গায় মারি যাতে চিড় ধরার আওয়াজ ওঠে, সে নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পরার আগেই আর একবার হাতুড়ির আলতো টোকা। এবার দু-ফাঁক হয়ে যাওয়া মাথার ভিতরটা আমি উঁকি মেরে দেখে নিই। অতঃপর প্রশান্তিতে ভরে ওঠে মন- আরেকটি শত্রু নিকেশ।

যদিও আমার এই কাণ্ডকারখানায় অতিষ্ঠ বাড়ির লোকজন (যারা X-men দেখেনি বলে এরকম হতে পারে বলে বিশ্বাস করে না!!!) আমার ও আমার হাতুড়ির ভয়ে তটস্থ হয়ে আছেন, কারণ আমি যখন তখন যার তার খুলিতে হাতুড়ি মেরে দেখে নিচ্ছি ভিতরটা- আসল না নকল?
পুনশ্চঃ খুলি ফাটার পর আবার জোড়াও লাগছে, তারা বোধহয় ঠিক মরে যাচ্ছে না। স্বপ্ন তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়া এবং এ-সম্বন্ধে ডিটেল না থাকার জন্য দুঃখিত।

গল্পের প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!