গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
এমন চীৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দিল সে যে অল্প দূর দিয়ে যেতে থাকা খানের সৈন্যদলও তা শুনতে পেল । তারা সেখানে এসে চারজনকেই ধরে নিয়ে গেল খানের কাছে ।
খান জিজ্ঞাসাবাদ আরম্ভ করলেন।
“তোমরা বলছ যে চুরি যাওয়া উটটাকে তোমরা দেখে নি, তবে কেমন করে তার মালিককে তোমরা উটের নিখুঁত বর্ণনা দিতে পারলে?’ জিজ্ঞেস করলেন খান জ্ঞানীর ছেলেদের
বড় ভাই বলল: উটটা যে অনেক পথ হেঁটেছে তা ওর পায়ের ছাপ দেখে বুঝতে পারি আমি। ক্লান্ত হয়ে পড়া জীব পা টেনে টেনে চলে তাই পায়ের ছাপ পড়ে লম্বা লম্বা।’
মেজ ভাই বলল : ‘উটটা বাঁচোখ কানা বুঝলাম এইভাবে যে, উটটা যেতে যেতে কেবল ডানদিকের ঘাসপাতাগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে।’
ছোট ভাই বলল: ‘যদি পথের ওপর দলেদলে পিঁপড়ে দেখা যায় তবে কি আর বুঝতে বাকি থাকে যে উটটা মধু বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।’
খান অবাক হয়ে গেলেন তাদের পর্যবেক্ষণশক্তি আর যে আত্মমর্যাদা নিয়ে তারা তার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিল তা দেখে । কিন্তু তার ইচ্ছা হল আর একবার তাদের বুদ্ধি পরীক্ষা করার। একটা মিষ্টি বেদানাকে সবার অলক্ষ্যে রুমালে মুড়ে তিনজনকে দেখিয়ে বললেন:
“আমার হাতে কি?’
বড় ভাই বলল:”একটা কিছু গোল জিনিস ।
মেজ ভাই বলল:আর খুবই সুস্বাদু ?
‘এককথায়, হুজুর, আপনার হাতে আছে বেদানা ।
খানের মুখচোখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠল ।
ঠিক!’ চিৎকার করে বললেন তিনি । এমন সূক্ষ্মদৰ্শী লোক আর কখনও দেখি নি। তোমরা বয়সে তরুণ কিন্তু আমার দাড়িওয়ালা উজীরেরাও তোমাদের কাছে দাঁড়াতে পারবে না। এখানে তিন দিন থেকে যাও তোমরা, পালা করে আমার লোকেদের বিচার করবে, যদি তোমাদের বিচার ন্যায়সঙ্গত মনে হয় আমার, তাহলে তোমাদের উজীর করে নেব ।”
এই কথা শুনে পুরনো উজীরদের মনে প্রচণ্ড বিদ্বেষ জাগল ঐ তিন তরুণের প্রতি । যাতে নিজেদের রোজগার, ক্ষমতা ও থানের মনোযোগ তাদের প্রতি কমে না যায় সেজন্য তারা ঐ তিন তরুণের ক্ষতি করার চেষ্টা করতে লাগল সৰ্বরকমের।
প্রথম দিনে বিচারের কাজ চালাল বড় ভাই। দু’জন লোককে নিয়ে আসা হল তার কাছে ।একজল বলল:‘আমি গরীব মেষপালক। অভাবে পড়ে কাল আমি আমার সবচেয়ে ভাল ভেড়াটাকে কাটি, আজ সারাদিন বাজারে বসে বেঁচি সে মাংস। বিক্রির সমস্ত টাকাটা আমি থলিতে ভরে রাখি, আর এই লোকটি থলিটি চুরি করেছে আমার পকেট থেকে
অন্যজন ক্রুদ্ধভাবে নিজের দোষ অস্বীকার করতে লাগল;মেষপালক মিথ্যা বলছে। আমার কাছে একটা টাকার থলি আছে, কিন্তু সেটা আমার নিজের । ঠগটা শুধু শুধু আমার নামে বাজে কথা বলছে, বিচারে ও আমার টাকা জিতে নিতে চায় ।
বিচারক বলল : ‘থলিটা দাও দেখি । এখুনি বলে দেব এ টাকা কার ।
খানের ভৃত্যদের আদেশ দিল সে একপাত্র ফুটন্ত জল নিয়ে আসতে। সেই জলের মধ্যে সে থলি থেকে সব মুদ্র ফেলে দিল । মুহুর্তে জলের ওপর ভেসে উঠল চর্বির স্তর যেন ভেড়ার মাংস ফেলা হয়েছে জলে ।
গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।