তালুত ও জালুতের ঘটনা – পর্ব ৪
তা হল তৌরাতসহ হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত হারূন (আঃ)-এর পরিত্যক্ত বরকতময় জিনিসসমূহ যে পবিত্র সিন্দুকে রক্ষিত আছে- যা তোমাদের চোখের সামনে ফেরেশতারা তা বহন করে তোমাদের কাছে নিয়ে আসবে। এটা হবে তালুত আল্লাহর পক্ষ হতে প্রেরিত হওয়ার সত্যতার প্রমাণ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে-
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِ أَن يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌ مِّمَّا تَرَكَ آلُ مُوسَىٰ وَآلُ هَارُونَ تَحْمِلُهُ الْمَلَائِكَةُ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَةً لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
অর্থঃ তাদের নবী তাদেরকে বলেন, তার বাদশাহ হওয়ার নিদর্শন হল যে, তোমাদের কাছে এ সিন্দুকটি আসবে যাতে তোমাদের রবের পক্ষ হতে সান্ত্বনার বস্তু রয়েছে এবং মূসা (আঃ) ও হারূনের বংশধরেরা পরিত্যাগ করে গিয়েছে এমন কিছু উদ্বৃত্ত বস্তু রয়েছে। এ সিন্দুকটি ফেরেশতারা বহন করে আনবেন। এতে তোমাদের জন্য পূর্ণ নিদর্শন রয়েছে যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সূরা বাকারাঃ আয়াত-১৪৮)
পবিত্র কোরআনে এ সিন্দুককে তাবুত শব্দে উক্ত হয়েছে। এ এক বরকতময় সিন্দুক। হযরত মূসা (আঃ) ও অন্যান্য নারীরা জিহাদের সময় এক বরকতময় সিন্দুক রেখে জিহাদ করতেন। আল্লাহ এর বরকতে তাদেরকে বিজয় দান করতেন। হযরত মূসা (আঃ)-এর পর হতে এ সিন্দুক বনী ইসরাইলীদের সাথে সাথে থাকত। জালুত বনী ইসরাইলদের পরাজিত করে সিন্দুকটি সাথে নিয়ে গিয়েছিল।
এক বর্ণনায় আসছে যে, এ সিন্দুকে তৌরাত গ্রন্থ লিপিবদ্ধ দুটি তখতী এবং তখতীর কিছু টুকরা ছিল। অধিকন্তু হযরত মূসা (আঃ)-এর লাঠি এবং হযরত মূসা ও হযরত হারূন (আঃ)-এর পাগড়ী জুতা প্রভৃতি ছিল। জালুত এ সিন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে ফিলিস্তিনে তাদের মন্দিরে রেখে দিল। আল্লাহ তায়ালা যখন এ সিন্দুক বনী ইস্রাইলীদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা করলেন তখন আমালিকাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এমন এমন অবস্থা সৃষ্টি করে দিলেন যে তারা সিন্দুকটি ফিলিস্তিন হতে বের করে দিতে বাধ্য হয়। সিন্দুকটি মন্দিরে দুটি প্রতিমার পাশেই রেখেছিল। তারা মূর্তি
পূজা শেষ করে মন্দির বন্ধ করে নিজ নিজ গৃহে চলে যেত। পরদিন সকালে ঘুম হতে উঠে যখন মন্দিরে যেত তখন দেখতে পেত যে, তাদের উপাস্য দু’মূর্তি মুখ নিচের দিকে রেখে উল্টে পড়ে রয়েছে। তখন তারা পুনরায় মূর্তি স্ব স্থানে স্থাপন করত। কিন্তু পরের দিনও তারা একই অবস্থা দেখতে পেত। যখন তারা প্রতিদিনই প্রতিমার এ অবস্থা দেখতে পাচ্ছিল তখন তাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হল।
তদুপরি এ সময়ে তাদের বিভিন্ন শহরে ইঁদুর এত অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল যে, এরা ফিলিস্তিনীদের সমস্ত শস্যদানা বিনষ্ট করে দিয়েছিল। আবার তাদের দেহ এক বিশেষ ধরণের ফোঁড়া দেখা দিল।