তালুত ও জালুতের ঘটনা – পর্ব ২
এভাবে তারা পুনঃপুনঃ হযরত শামভীল (আঃ)-এর কাছে আবেদন করার পর তিনি আল্লাহর কাছে তাদের জন্য দোয়া করলেন। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন এবং তাঁকে অবগত করালেন যে, তালুত নামক এক ব্যক্তিকে তাদের জন্য বাদশাহ নিয়োগ করা হয়েছে। তালুত এক গরীব আলেম ছিলেন।
তিনি হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কনিষ্ঠ ভ্রাতা বেনইয়ামীনের বংশধর। বিখ্যাত মোহাদ্দেস হযরত সায়লাবী (রঃ) তালুতের নসবনামা নিম্নরূপ বর্ণনা করেছেন। সাওল (তালুত) তাঁর পিতা আনীস তাঁর পিতা বেনইয়ামীন তাঁর পিতা ইয়াকুব (আঃ) তাঁর পিতা ইসহাক (আঃ) তাঁর পিতা ইবরাহিম (আঃ)।
হযরত শামভীল (আঃ) বনী ইসরাইলীদেরকে আল্লাহ পাকের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন যে, তালুতকে তাদের বাদশাহ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে-
وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ اللَّهَ قَدْ بَعَثَ لَكُمْ طَالُوتَ مَلِكًا
অর্থঃ তাদের নবী তাদেরকে বলেন যে, আল্লাহ পাক তোমাদের জন্য তালুতকে বাদশাহ নিযুক্ত করেছেন। (সূরা বাকারা)
ইতিহাসবিত্তারা লিখেন যে সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত বনী ইসরাইলীদের সর্দারী ও নেতৃত্বের ধারা হযরত ইয়াকুব (আঃ)-এর পুত্র ইয়াহুহার বংশধরদের মধ্যে চলে আসছিল। কিন্তু এখন হযরত শামভীল (আঃ)-এর খবরের মাধ্যমে বুঝা গেল যে, নেতৃত্বের ধারা পরিবর্তিত হয়ে ইয়াহুদার বংশধর হতে কাউকে তাদের বাদশাহ হিসেবে মনোনীত করবেন।
এখন তা তাদের ইচ্ছার সম্পূর্ণ বিপরীত হয়েছে বিধায় তারা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। অধিকন্তু তালুত সম্পদশালী ছিলেন না। আর ইয়াহুদা বংশের সর্দাররা ছিল সম্পদশালী। এও তাদের ইচ্ছার পরিপন্থী হল। কেননা, দরিদ্র কি ভাবে সম্পদশালীর উপর বাদশাহ হতে পারে। এজন্য তারা আল্লাহ তায়ালার এ সিদ্ধান্তের উপর মারাত্মক আপত্তি করেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে-
قَالُوا أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُ الْمُلْكُ عَلَيْنَا وَنَحْنُ أَحَقُّ بِالْمُلْكِ مِنْهُ وَلَمْ يُؤْتَ سَعَةً مِّنَ الْمَالِ
অর্থঃ তারা বলল, আমাদের উপর তার রাজত্ব করার অধিকার কিভাবে থাকতে পারে? তার চেয়ে আমরাই রাজত্বের অধিক হকদার। তাকে তো আর্থিক সচ্চলতাও প্রদান করা হয়নি। (সূরা বাকারা)
বনী ইসরাইলীদের মজ্জাগত হয়ে পড়েছিল যে, তার কোন বিষয় প্রথমে স্বীকার করার পর প্রয়োজনের সময় তা অস্বীকার করা। এ ক্ষেত্রেও তারা ব্যতিক্রম করেনি।