
আসসালামু আলাইকুম। চলে এসেছি আপনাদের আরেকটু বিরক্ত করতে।সাথে দিবো মোস্ট কমন কতগুলো প্রবলেমের সলিউশন।ড্রাই স্কিনের বেইজ মেকআপ পারফেক্ট করতে যে কতটা কষ্ট,সেটা যারা ড্রাই স্কিনের আপুরা আছেন,তারা ছাড়া কেউ বোঝেন না।গরমকাল তো যেমন তেমন,কিন্তু শীতকাল হলে কথাই নেই! তাই আজকে শেয়ার করবো ড্রাই এমনকি মোস্ট ড্রাই স্কিনের স্মুদ বেইজ মেকআপ করার জন্য স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন। কাজেই,সববারের মতো,এবারও কিন্তু স্টে টিউন্ড!🤎
মেকআপ নিয়ে সবারই অনেক প্রশ্ন থাকে।তাই আমি আজকে প্রশ্ন তৈরি করবো আর সেগুলোর উত্তর দিয়ে দিবো।মোস্ট কমন প্রশ্ন যেগুলো আপনারা সবাই ফেস করে থাকেন কোন না কোন সময়ে,এবং বিগিনার হলে তো মেকআপ মানেই প্রশ্ন।আমাকে কিন্তু কমেন্টে প্রশ্ন করতে ভুলবেন না।🤎সাধ্যমত উত্তর দিয়ে পাশে থাকার চেষ্টা করবো আমার এই ছোট্ট মাথার অল্প অল্প জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে।
প্রশ্ন ১:আপু,মেকআপ বেইজ করার জন্য কি ব্যবহার করবো? আমার তো ফাউন্ডেশন ভাল্লাগেনা,ড্রাই স্কিন,তাই বসতেও চায় না।প্যানকেক ইউজ করবো?
উত্তর: না।প্যানকেক ব্যবহার করা মেকআপের ক্ষেত্রে মোটেও ভালো কোন রেজাল্ট দিতে পারেনা।সাদা ভূত সেজে যদি কাউকে ভয় দেখাতে চান,সেক্ষেত্রে অবশ্য প্যানকেক খাবলা খাবলা ব্যবহার করতে পারেন।🤦♀️আচ্ছা,মানুষের মতো যদি মেকআপ চান তাহলে অবশ্যই ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করবেন।এর পরিবর্তে অবশ্য কনসিলার বা বিবি ক্রিম/সিসি ক্রিম ও ইউজ করতে পারেন।
প্রশ্ন ২: আপু,ড্রাই স্কিনে মেকআপ যাতে ক্র্যাকি না লাগে এর জন্য কি করবো?
উত্তর: এবার লিখবো লম্বা একটা রচনা।ধৈর্য ধরে কিন্তু পড়তে বসতে হবে এখন এই রচনা।কাজে দিবে তাহলে।ড্রাই স্কিনের মেকআপ বসার ব্যাপারটা ৭০% ডিপেন্ড করে স্কিন প্রিপারেশন এর উপর।আমার লাস্ট ব্লগে এটা নিয়ে টিপ্স দেওয়া আছে কিছু।সুযোগ বুঝে পড়ে নিতে পারেন। স্কিন প্রিপারেশন যত ভালো হবে,তত আপনার মেকআপের ফিনিশিং স্মুদ হবে এবং লংলাস্টিং হবে।সাথে পর্যাপ্ত ঘুম এবং সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়াও কিন্তু মাস্ট।এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে নেক্সট ব্লগে।তো যাকগে,মূল কথায় ফেরত আসি।বেসিক স্কিন প্রেপ এর ১০-১৫মিনিট পর মেকআপ করতে বসবেন,যাতে করে স্কিনের উপর থাকা সিরাম,ময়েশ্চারাইজার, টোনার, সানস্ক্রিন ঠিকঠাকভাবে শোষিত হতে পারে। এরপর একটি ফেস সিরাম ২-৩ ড্রপ্স নিয়ে স্কিনে ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন।যদি ত্বক বেশি ড্রাই থাকে,আরো ১-২ফোঁটা অ্যাড করুন।ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করার পর ২–৩মিনিট স্কিনকে রেস্ট দিন।মেকআপ মূলত একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।যত তাড়াহুড়ায় মেকাপ করবেন, মেকআপ ততটাই বাজে হবে।কোথাও যাওয়ার আগে ফ্ললেস মেকআপের জন্য তাই হাতে মিনিমাম ১ঘণ্টা সময় রাখুন।রেস্ট দেওয়ার পর একটি ভালো মানের প্রাইমার অ্যাপ্লাই করুন।প্রাইমার অ্যাপ্লাই করাটা খুবই ইম্পরট্যান্ট একটা কাজ যেটা আমরা অনেক সময়ই স্কিপ করে ফেলি।প্রাইমারের ক্ষেত্রে পোরলেস প্রাইমার অ্যাপ্লাই করুন।তাহলে পোরগুলো তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করা যাবে এবং এতে করে মেকআপ স্মুদ হবে।পোর বলতে মূলত ত্বকের উপরে ভিজুয়াল ছোট ছোট গর্তগুলোকে বোঝায়,যেটা বলা হয় স্কিনের অরেঞ্জ পিলিং টেক্সচার অর্থাৎ কমলার খোসার মতো একটা অবস্থাকে।পোরসের কাজ কি এবং ওপেন পোরস কি -এগুলো নিয়ে সামনে ডিটেইল্স আলোচনা আসবে। প্রাইমার অ্যাপ্লাইয়ের পর ২-৩মিনিট স্কিন কে রেস্ট দিয়ে কালার কারেকশন(যদি প্রয়োজন হয়) করতে পারেন।এরপর বেইজ মেকআপ শুরু করার পালা।আপনার স্কিন টোনের সাথে মিলিয়ে অথবা ১শেড ব্রাইট ফাউন্ডেশন নিন।নাহলে প্যানকেকের মতো ভূত সুন্দরী হয়ে যেতে পারেন। যেহেতু আজকের মূল টপিক ড্রাই অথবা এক্সট্রিম ড্রাই স্কিন,কাজেই এমন ভাবে ফাউন্ডেশন চুজ করুন যেগুলো আপনাকে ডিউই বেইজ দিবে।অর্থাৎ আপনার স্কিন শুকিয়ে ফেটে মাঠের মতো চৌচির হলেও মেকআপ করার পর যাতে মনে হয় মাত্র মুখ ধুয়ে ফেস চিকচিক করছে-এমন একটি অবস্থা। 🦥 এক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন নির্বাচনের ক্ষেত্রে লিকুইড ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করুন যাতে আপনার ত্বকে মাখনের মতো সেট হয়ে যায়৷ যদি আপনার কাছে লিকুইড কোন ফাউন্ডেশন না থাকে অর্থাৎ ম্যাট ফিনিশিংয়ের ফাউন্ডেশন থাকে,তাহলে কোম এসেনশিয়াল অয়েল অথবা খাঁটি নারিকেল তেল একটু খানি মিক্স করে করে বানিয়ে নিতে পারে তেল চকচকা টাকের মতো চকচকা ডিউই অথবা গ্লোয়ি ফাউন্ডেশন। লিকুইড হাইলাইটার ও ব্যবহার করতে পারেন ফাউন্ডেশনের সাথে মিশিয়ে।ফেসে একটা এক্সট্রা চকচকা বড়লোকি ভাব চলে আসবে সাথে সাথে।🥱
অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে যতটুকু প্রোডাক্ট লাগবে ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করুন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রোডাক্ট আপনার স্কিনকে কেকি এবং পাউডারি বানিয়ে ফেলবে।পরে কিছু সময় পরেই ক্র্যাক দেখা দেবে।কাজেই ঘপঘপ করে বেশি বেশি ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করতে যাবেন না। বিউটি ব্লেন্ডার ভিজিয়ে সুন্দরমতো ব্লেড করবেন।ব্যবহার করার আগে মিনিমাম ৩০ মিনিট আগে বিউটি ব্লেন্ডার ভিজিয়ে নিবেন যাতে পুরোপুরি পানি শুষে নিতে পারে।তা নাহলে ভেজা বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে ফেসে ব্লেন্ড তো হবেই না,উল্টে ফাউন্ডেশন উঠে যাবে। মনে রাখবেন,ঘষে ঘষে ব্লেন্ড করবেন না।তাতে ব্লেন্ড সুন্দর করে হয়না।ড্যাব ড্যাব করে ব্লেন্ড করবেন এবং সময় নিয়ে ব্লেন্ড করবেন যাতে স্কিন মেকআপ কে পুরোপুরি অ্যাবজর্ব করে নিতে পারে। এরপর নিয়মমত কনসিলার,কন্টোর, ব্লাশ ইউজ করবেন।তবে প্রাথমিকভাবে শুধু ক্রিম টাইপের লিকুইড প্রোডাক্ট ইউজ করবেন,তাতে মেকআপ কেকি হওয়ার চান্স থাকে অনেক কম।ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ইউজ করবেন হাইলাইট করার জন্য।পাফ দিয়ে একগাদা পাউডার মুখে ঢেলে দিবেন না।পাউডার অল্প করে নিয়ে সেটাকে হাতে বা কোথাও একটা ভালোভাবে এক্সেস প্রোডাক্ট রিমুভ করে তারপর অ্যাপ্লাই করবেন।এতে করে পাউডারি ভাবটা কম আসবে,স্কিন সেট ও হয়ে যাবে। সবশেষে ভালো একটি মেকআপ ফিক্সার মানে সেটিং স্প্রে দিয়ে ভালোভাবে মেকআপটিকে সেট করে ফেলবেন।