আচ্ছালামু আলাইকুম। আশাকরি ভাল আছেন।
আমি । আমি বর্তমানে খুলনা … … …
বিভাগে পড়াশুনা করছি। আমি আজ যে ঘটনাটা বলব
সেটি আমার চাচার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা,
যে ঘটনাটা আমার চাচার জীবনে কাল হয়ে আছে।
আমার গ্রামের বাড়ি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার অন্তর্গত …
গ্রামে। ঘটনাটা আমাদের গ্রাম থেকে আরো ১০
কি.মি. দূরে। জায়গাটার নাম গোলাখালী,
যেটাকে আমরা সচারচর দ্বীপ বলে থাকি।
এখানে পুরো অঞ্চল জুড়ে ৫০-৬০ টি পরিবার বাস
করে। বাঁকি জায়গা জুড়ে রয়েছে অনেক বড় বড়
চিংড়ি মাছের ঘের। শেষ
অংশটা মিশে গেছে সুন্দরবনের সাথে। ঘের গুলোর
মধ্যে একটি ছিল আমার চাচার। ঘের
দেখাশুনা করার জন্য চাচা ঘেরের পাশেই একটি ছোট
ঘর বানিয়ে রাতে সেখানে থাকতেন।
ঘেরটি দৈর্ঘ্যে অনেক বেশি থাকলেও প্রস্থে ছিল
অনেক কম।
ঘটনাটি প্রায় ৫ বছর আগের। দিনটি ছিল
মঙ্গলবার, সেদিন ছিল ভরা পূর্ণিমা। সন্ধ্যার
সময় চাচা গৌণ জোয়ারে আঁটল (মাছ ধরার খাঁচা)
পেতে ঘরটিতে আসলেন। তারপর তিনি এশা’র নামাজ
পড়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে শুয়ে পড়লেন। গভীর
রাতে কিছু একটার শব্দে হঠাৎ চাচার ঘুম
ভেঙ্গে যায়। ঘুম ভাঙ্গার পর চাচা শব্দ
শুনে বুঝতে পারলেন যে, আঁটলে অনেক মাছ পড়েছে।
চাচা তাঁর কাছে থাকা টর্চটি নিয়ে ঘর থেকে বের
হলেন। তারপর তিনি চাঁদের আলোয় ঘেরের পাড়
ধরে হাঁটছিলেন। প্রথম আঁটল অতিক্রম করার পর
তিনি বিপরীত পাড়ে একটি নবজাতকের কান্নার
আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি থমকে দাঁড়িয়ে বিপরীত
পাড়ের দিকে টর্চের আলো ফেললেন। কিন্তু
তিনি কিছু দেখতে না পেয়ে আবার সামনে হাঁটা শুরু
করলেন। এবার তিনি সামান্য হাঁটার পরেই পুনরায়
কান্নার আওয়াজটি শুনতে পেলেন। আবার
তিনি বিপরীত পাড়ে টর্চের আলো ফেলে দেখার
চেষ্টা করলেন। কিন্তু টর্চটি জ্বলল না।
ঘটনাটা বোঝার জন্য তিনি পিছন ঘুরে বিপরীত
পাড়ের দিকে হাঁটা শুরু করলেন। বিপরীত
পাড়ে পৌঁছে কিছুটা হাঁটার পর তিনি দেখতে পেলেন
পাড়ের ওপর কাঁথা জড়ানো অবস্থায়
একটি নবজাতক শিশু পড়ে আছে। তিনি বাচ্চাটার
কাছে যেতেই সে আবার কেঁদে উঠল। তখন
চাচা ভাবলেন, হয়তো কারো অবৈধ সন্তান
ফেলে গেছে। ভাবতেই চাচার বাচ্চাটির
প্রতি মায়া হল, তিনি কোলে তুলে নিলেন।
কোলে তুলে নিতেই তিনি বাচ্চাটির
অস্বাভাবিকতা বুঝতে পারলেন। কারণ বাচ্চাটির
ওজন ছিল তার শরীরের তুলনায় অনেক বেশি।
কিন্তু তবুও তিনি বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে ঘরের
দিকে হাঁটতে থাকলেন। হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন
বাচ্চাটির হাত-পা লম্বা হচ্ছে এবং বিকট
শব্দে হাসতে শুরু করেছে। তখন চাচা প্রচন্ড
ভয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে বাচ্চাটিকে ঘেরের
পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। সাথে সাথে পানিতে আগুন
জ্বলে উঠল। তাই দেখে চাচা প্রচন্ড চিৎকার
দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন।
চিৎকার শুনে পাশের ঘেরের লোকজন
এসে চাচাকে উদ্ধার করে। কিন্তু সারা রাতেও তার
জ্ঞান ফেরেনি। ভোরে নৌকায়
করে তাকে ভেটখালী বাজারে আনা হয়
এবং চিকিৎসা করে তার জ্ঞান ফেরানো হয়। কিন্তু
তার শরীরের ডান পাশ পুরো অচল হয়ে যায়।
এরপর তিনি ঘটনাটি সবার সাথে খুলে বলেন।
এই ছিল আমার ঘটনা