জোলেখার প্রেম-পর্ব ৫
জোলেখার প্রেম-পর্ব ৪ -পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এক পর্যায়ে ইউসুফ (আঃ) কে শরাব পান করাতে চেষ্টা করলেন। ইউসুফ (আঃ) এক ওজর পেশ করে প্রত্যাখ্যন করলেন। অতঃপর উপাদেয় খাদ্য পরিবেশন করলেন। ইউসুফ (আঃ) নাম মাত্র গ্রহণ করে মনিবের মন রক্ষা করলেন। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ইউসুফ (আঃ) এর মনে যৌন সম্ভোগের উত্তেজনা সৃষ্টির লক্ষ্যে কোন চেষ্টা আর বাকি রাখে নি। এক সময় অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় ইউসুফ (আঃ) কে জড়িয়ে ধরে তাঁর মুখের কাছে মুখ নিয়ে বললেন, “ইউসুফ! তুমি একবার আমার দিকে তাকিয়ে দেখ – আমি কত অপরূপ সুন্দরী। আমাকে এক নজর দেখার জন্য মিশরের হাজার হাজার মানুষ ব্যাকুল ছিল। আমি মিশর রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছি। আমার দিকে একবার তাকালে সে চক্ষু আর ফিরাতে পারে না।
কিন্তু তুমি কেন এতটা কঠিন, কেন তুমি আমার যৌবন সুধা পান করতে অনীহা প্রকাশ করছ? তোমার প্রামানলে আমি বছরের পর বছর তিলে তিলে জ্বলছি। আর পারছি না। এবার আমার জ্বালা জুড়াও, আমাকে কোলে তুলে নাও, তোমার চাঁদোয়া মুখখানি একবার আমার মুখের সাথে মিলাও। তোমার কানের ধারের চুলগুলো একবার আমার গালে লাগাও। একবার আমাকে ধর। তোমার বুকের শীতল পরশ দিয়ে আমার বুকের অনল দাহ চিরতরে শীতল করে দাও।”
জোলেখার এহেন কঠিন যৌন উন্মাদনার তাড়নায় ইউসুফ (আঃ) এক বার তার মুখের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন। জোলেখা তখন ভাবলেন তাঁর অদম্য চেষ্টার পরিণাম সম্ভবত শুভ হতে যাচ্ছে। জোলেখা তখন ক্ষুধার্ত বাঘের ন্যায় তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ল। ইউসুফ (আঃ) তখন বললেন, “জোলেখা! আজিজ মেছের আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন, এখন আমি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করব? তার স্ত্রীর সাথে আমি যৌন সম্ভোগে লিপ্ত হব, এটা কোন মানব চরিত্র হতে পারে না।
দ্বিতীয়ত আল্লাহ তা’য়ালা মহাবিপদের কবল থেকে আমাকে উদ্ধার করে অতি আড়ম্বরপূর্ণ জীবনের অধিকারী করেছেন। এখন আমি তাঁর নির্দেশকে উপেক্ষা করে তোমার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হব? যার পরিণামে আল্লাহর গজবের সম্মুখীন হতে হবে। এটা কোনক্রমে আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” জোলেখা ইতোমধ্যে তার পাজামার ফিতার কয়েকটি গিরা খুলে ফেললেন। ইউসুফ (আঃ) পূর্বের সতর্কতা অবলম্বনের নিমিত্ত নিজ পাজামার ফিতায় অনেক গিরা দিয়ে রেখে দিলেন।
হযরত ইউসুফ (আঃ) জোলেখার তীব্র কামনার মুখে ক্ষণিকের জন্য কিছুটা বিভ্রান্ত হলেন। একটু সময় তিনি নির্বাক থেকে চতুর্দিকে তাকালেন। তখন অদূরে কাপড়ে ঢাকা একটি বস্তু দেখতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, রত পরিপাটি মহলের মাঝে কাপড় দিয়ে ঢাকা ওটা কি? জোলেখা বললেন, ওটা আমার খোদা। আমি ওর পূজা অর্চনা করে থাকি। জোলেখা বললেন, তোমার সাথে আমার যৌন সম্পর্কের দৃশ্য দেবতা দেখলে তিনি আমার প্রতি বিরূপ হবে। তাই তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছি। এ কথা শুনে হযরত ইউসুফ (আঃ) বললেন, তোমার খোদাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে তুমি রক্ষা পেলে কিন্তু আমার খোদাকে আমি ঢেকে রাখতে পারি না। তিনি সপ্ত মহলের মধ্যকার অবস্থা পরিস্কারভাবে দেখছেন। অতএব আমার পক্ষে তোমার বাসনা পূর্ণ করা সম্ভব নয়। সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী