আশ্বিনের ভোঁর।বিশাল ঠাকুরাণ নদীর ঢেউয়ের মাথায় দোল খেতে খেতে দুলকি তালে চলেছে বনদপ্তরের ছোট এক লঞ্চ,এম ভি বনমালা।ছাতের উপর গুটি কয়েক করে রয়েছে অধির আগ্রহে।বয়সে প্রায় প্রৌঢ় বলা চলে।একমাত্র দেবকান্ত রায়ই চল্লিশের আশেপাশে।আজকের এই সফরে মূল উদ্দেগতা তিনি।ভিতরে উত্তেজনা তাই সবচেয়ে বেশি।তাঁর উপর গতকাল যে কাণ্ড হল!সুন্দরবনে আগেও এসেছে।বেশ কয়েক বার।কিন্তু এমন কখনও হয়নি।গতকাল নামখানা ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে ভগবতপুর দেখে ঘণ্টা কেয়েক মধ্যেই ওরা ঢুকে পড়েছিল বেজায়ারদার জঙ্গলে।ব্যাপারটা সেই সময়ের।বিকালে সুর্য অনেকটাই ঢলে পড়েছে তখন।নদিতে উথালপাথাল ঢেউ ফুরফুরে হাওয়াই লঞ্চের ছাদে জমিয়ে গল্প জুড়ে সবাই।খানিক আগে ভগতপুর কুমির প্রকল্প নিয়েই কথা হয়েছে।
সুন্দরবনের নদী নালায় একসময় প্রচুর কুমির থাকলেও এখন অনেক কমে গেছে।ভগতপুরে তাই কুমিরের ডিম সংগ্রহ করে ফুটিয়ে বাচ্চা বড় করা হচ্ছে।তাঁর পর সেয়ানা হলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে নদীতে খাঁচায় পোষা সেই কুমির বাবাজিরা নদিতে ছাড়ার পরে যে তেমন বহাল তবিতে থাকে না,তাঁর প্রনাম সেই সময়ে পাওয়া গিয়াছিল।বড় সেই ব্যাপারটা সবাই তখন গল্প শুনে মশগুল।অদুরে বন্ধুক হাতে বনদপ্তরের রক্ষী ভরত সাইফুই।হঠাৎ গলা নামিয়ে বলল,ওঁই দেখুন হরিণ।জঙ্গলের খুব কাছ দিয়েই লঞ্চ চলেছে।এক সাথে সব কয়টি পড়ল ঠিকরে পড়ল সেই দিকে।নদীর পারে অনেকটাই পোতলা।গোটা কয়েক ছোট একদল সেখানে বিকেলের ভোজ সারতে বের হয়েছে।পছনের পায়ে ভোঁর দিয়ে চারা গরান গাছের পাতা ছিড়ে খাচ্ছে।দেখেই হই হই হই করে উঠল কয়েকজন।সুতরাং হরিণের দলের মুহূর্তে বনের আড়ালে।
অনেকেই তাই নিরাশ হতে হল।দেবকান্তই প্রস্তাব করল,সঙ্গে রাইফেল ভরতবাবু যখন রয়েছে,লঞ্চ থেকে একটু নামলে মন্দ হয় না।সায়ও মিলল কয়েকজন কাছ থেকে বনরক্ষী ভরতবাবুর বয়সও বেশি নয়,উৎসাহী মানুষ।খানিক ভেবে মত দিলেন শেষে।ততক্ষণে লঞ্চ খানিক এগিয়ে গেছে।সামনে একটা নেমে একটু বেড়িয়ে নেবে সবাই,জঙ্গলের দিকে না গেলেই হল।অগ্যতা ভেড়ানো হল লঞ্চ।একে একে নেমে পড়ল ওরা।বিকেলের আলো মরে আসছে তখন।চমৎকার ফুরফুরে হাওয়া বইছে।বিশালঠাকুরান নদীর ঢেউ ছলাত ছলাত শব্দে এসে পড়েছে।এ ছাড়া চারপাশ টু শব্দ নেই।অসম্ভব নিস্তব্ধ পায়ো পায়ে খানিক এগিয়ে সবাই।পিছনে রাইফেল হাতে ভরত বাবু।সজাগ দৃষ্টি চারিপাশ দেবকান্ত ছিল সবার আগে সামনে কি দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল সে।ততক্ষণে অন্যদের নজর পড়েছে ব্যাপারটা।অদুরে এক ঘাস ঝোপের মধ্যে আধাকাওয়া একটা কুমিরের দেহ।আকারে বব নয় তেমন।এক ঝাক মাছি ভন ভন করেছে তাঁর উপর।
অন্যদের নজরে না পড়লে অদুরে নদীর চড়ায় নরম মাটিতে ঘাসের পায়ের দাগ বনরক্ষিরা ভরতবাবুর চোখ এড়াল না,দেখেই বুঝলেন ব্যাপারটা।ভগবতপুরের কুমির বেচারার বাদার হালচাল রপ্ত হয়নি এখনও।নিচিন্তে তাই বিশ্রাম নিচ্ছিল নদীর চড়ায়।সুযোগে পেয়ে ধূর্ত বাঘ বাবাজি তাঁর ব্যবস্থা করে ফেলেছেনল।দিন শেষে জমাটা তারপর সেরে নিচ্ছিল মউজে।মানুষের দাড়া পেয়ে সরে পড়েছে,মানে কাছেই কোথাও ঘাপ্টি মেরে বসে আছে।আরও ভয়ানক কিছু মতলব থাকাও বুচিত্র নয়।দেখে ভরতবাবু আর ঝুকি নেয়নি।হুশিয়ার করে দিয়ে লঞ্চের ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেলেন সবাইকে।লঞ্চ থেকে তখন অনেক টা এগিয়ে এসেছে ওরা।প্রায় পঞ্চাশ গজের মতো।এই পথ টুকু যখন পার হয়ে এর পর যখন লঞ্চে উঠা হল,তখন কুল কুল করে ঘামছে অনেকেই।কয়েক জনের রক্তের চাপ ও বেড়েছে,তা মুখ চোখ দেখে বোঝা যায়।কয়েক বতল জল খালি হবার পরে কথা ফুটে মুখে।বায়োজ্যেষ্ঠ মানুষ সদান্দবাবু তো প্রায় গুম হয়ে উঠেছেন সেই থেকে।দেবকান্তবাবু ভাবনা সেই কারনে বেড়েছে আরও।ইতিমধ্যে মস্ত পণ্ডিত মানুষ সনানন্দ চৌধুরী।
অনেক কষ্টে রাজি করেয়ে এই সফরে সামিল করা হয়েছে ওকে।আসলে ওদের এবার বেড়াতে আসা নিছক বেড়াবার জন্য নয়।প্রাচীন এক ইতিহাসের সন্ধানে।ব্যাপার হল,দেবকান্ত আর তাঁর সঙ্গী সাথিরা সবাই অল্পবিস্তার প্রত্নচর্চার সঙ্গে জড়িত।নিজেদের একটা সমিতি আছে।সংসারের কাজের ফাকে অনেকটা সময় কাটে ওদের।অনেক দিন থেকেই দক্ষিনবঙ্গের নানা যায়গায় ইতিহাসের নানা রহস্যময় উপাদান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।পুরনো দিনের মুদ্রা,পোড়া মাটির ফলক,বিদেশে আসলে তৈরি অতি প্রাচীন কালের মাটির পাত্র লিপি।এসবের খোঁজ পেলেই আর দেরি করে না কেউ।ছুটে গিয়ে সংগ্রহ করে আনে।তাই নিয়ে আলচনা হয়।আর তাঁর ফলে ওদের বিশ্বাস,এখন থেকে কয়েকশ বছর আগে থেকেই দক্ষিন বঙ্গের এসব অঞ্চালে নদী বা সাগরের ধারে কিছু বন্দর কেন্দ্রীক কিছু বন্দর বড় নগর ছিল।সাধারণ মানুষের সঙ্গে অনেক সঙ্গে ধনি শ্রেষ্ঠীও বাস করতেন সেখনে।নদী এবং সমুদ্রপথে দেশ বিদেশে জাহাজ এসে ভিড় পন্যের পসরা নিয়ে।
নদী পথে এসব নগরের সাথে যোগাযোগ ছিল গৌঢ়,পাটলিপি পুত্র প্রয়োগ কাশি মথরা ইত্যাদি।দক্ষিন বঙ্গের এই সব নগর ছিল তারি।কিন্তু ওদের সেসব কথা গুরুজনের কাছে তেমন গুরুত্ব পায়নি।তবে হাল ছাড়েনি কেউ।সদানবাবুকে নিয়ে ওদের এই অভিজান কতকটা সেই কারনে।বাদার এক মৎস্যজীবীর কাছে মাস খানেক খবরটা পেয়েছিল দেবকান্ত বাবু।সুন্দরবনে বেজোয়ারদার কাছে কাল এক জ জঙ্গলের ভিতর ভাঙাচোরা ইটের স্তূপ পোঁড়ামাটির নানা জিনিস ছড়িয়ে আছে।খবরটা পেয়েছিল লেগেপড়েছিল ও তারই ফলশ্রুতি বন্দপ্তরের সহযোগিতায় আজকের এই সফর।দেবকান্তবাবু চিন্ত তাই আরও বেশি।যায়গাটা খুঁজে না পেলে মাঠে মারা যাবে সব।চোখ তাই ওর চার পাশে সামনে ঘুরছিল।নদীর এক ফোঁড়ন খালের মুখেই নাকি রয়েছে বড় এক জোড়া কেওড়া গাছ।সেই খাল ধরেই ঢুকে পড়তে হবে ভিতরে ঢুকে পড়তে হবে ভীতরে।খানিক গেলেই ফাঁকা যায়গা।খুব সহজে মনে হলে দেবকান্ত বাবু জানে,ব্যাপারটা আদৌ তেমন নয়।
আসলে নদী থেকে বাদার জঙ্গলের যে দিক দিয়ে তাকাও একই দৃশ্য।গরান,গর্জন,আর হেঁতালের একই রকম জঙ্গল।সে সব গাছপালার কোন টাই বড় নয়।তাঁর মাঝে মাঝে কেওড়া জাতীয় বড় উঁচু জাতীয় গাছ সহজে নজরে পড়ে বলেই অভিজ্ঞ মাঝিদের কাছে মাথায় থেকেই যায়।কিন্তু সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত একটা খালের মুখ দেখা দিল।রোদ ইতিমধ্যে চড়া হয়েছে আরও মুখ ঘুরিয়ে ঢুকল সেই খলের ভিতরে দুধারে ঝিম ঝিম করা ঘন জঙ্গল।বড় আকারের গাছ বেশি।অনেক যায়গা তাই রোদ ঢোকেনি এখনও।গাঁ ছম ছম করা আলো আধার।এদিকে ভাটাশুরু হয়ে গেছে।জল নামতে শুরু করেছে।তাই চলতে হচ্ছিল সাবধানে।প্রায় ঘণ্টা খানেক চলার পরে একটা বাকের মুখে আসতে হঠাৎ কয়েক জন চিৎকার করে উঠল,ওঁই ওঁই।অদুরে গাছপালার ফাঁকে অনেকটা যায়গা নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে পুরনো ভাঙাচোরা ইট পোড়া মাটির ভাঙাটুকরা।সুতরাং ভেড়ান হল লঞ্চ।নামিয়ে দেওয়া হল লম্বা তক্তাটা।ফরেস্ট গাড ভরতবাবু তত্ক্ষেনে প্রস্তুত হয়ে নিয়েছেন,গতকালের সেই ঘটনার পরে মানুষ টি দমে গিয়েছিল একটু।তাঁর পর জায়গাটা মোটেই ভাল না।
একেই তো একালের দিকের বাদার ডাকও শোঁনা যাচ্ছে না।অন্য সব সময় হলে হয়ত নামতেই রাজি হতেন না।কিন্তু গত কয়েক ঘণ্টার মানুষগুলোর সাহসে ভিতরে একটা অন্য অনুভূতি হয়েছিল তাঁর।এই সুন্দর বনে কাজ করে অনেক দিন।গভির জঙ্গলের ভিতরে এমন ভাঙা ইটের ধ্বংসস্তূপ,পোঁড়ামাটির ভাঙা টুকরো অনেক দেখেছেন।কিন্তু তাঁর ভিতরে যে এত রোমাঞ্চকর ইতিহাস লুকিয়ে থাকতে পারে ভবতে পারি নি,তাই দুরচিন্তাটাকে বিশেষ আমল না দিয়ে হাতে রাইফেল ধরে সাবধানে নেমে পড়লাম।চারপাশে খানিক চোখ বুলিয়ে নিয়ে গোঁড়ায় অল্প দু একজন নামতে বললেন,কিন্তু উত্তেজনায় তোর সই ছিল না কারও।একমাত্র সদানন্দবাবুর সাহস করে উঠতে পারলেন না,বাকি সবাই নেমে পড়ল একে একে। গরান বাইন আর গোটা কেয়ক হাতালঝাড়ের ফাক দিয়ে পা এগোলেই হালকা ঘাসে ভরা ফাঁকা জমি।চারপাশে ভাঙাচোরা জমির ইটের অনেক টুকরো।পাতলা আকারের ইটগুলো দেখলে বোঝাযায় ইটগুলো অনেক আগের তৈরি।তাঁর মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা প্রত্নাত্তবিক বিচারের যথেষ্ট গুরুত্ব,বুঝতে তখন বাকি নেই আর কেউ। এতক্ষণ ভরত বাবুর কাছাকাছি ছিল সবাই।
কিন্তু অতি উৎসাহে এর পরেই ছড়িয়ে পড়ল যে যার মতো।তবে খুব দূরে নয় দেবকান্তর হাতে একটা খুপরি।সন্দেহ হলেই খুচিয়ে দেখছিল মাটি।হঠাৎ গোশা দশকে পুতি পেয় গেল ও।ফিকে সবুজ আর ফিকে নীল রঙ্গের চমৎকার পুতিগুলো অল্পমাটির তলায় পড়ে ছিল।এক যায়গায় এত গুলো পুতি একসাথে পাওয়া যায় না।তাঁর উপর গোটা কয়েক অসাপ্ত।পালিশ হয়নি।দুটো মালা গাথায় ফুটোও হয়নি।হাতের মুঠোর জুনিসগুলো নিয়ে ও ছুটল লঞ্চের দিকে। এদিকের কিছু কিছু খবর পৌঁছেগেছে সদানবাবুর কাছে।কৌতূহল হয়ে অপেক্ষা করেছিল তিনি।এই সময় দেবকান্ত বাবু হাজির হয়ে পুথিগুলো সামনে রাখল,দেখুন স্যার পেয়ছি এ গুলো।কয়েক মিনিট জিনিস গুলো উল্টে-পাল্টে দেখলেন ভদ্র লোক দুচোখ প্রায় বিস্মিত করে বললেন এ তো দারুন ব্যাপার হে!আবিষ্কারটা যে সত্যি চমকপ্রদ,তা দেবকান্তবাবু বুঝতে পেরেছিলেন শুধু বলল পাথরগুলো কি জাতের স্যার?উত্তজেতিত গলায় সদানন্দবাবু বললেন,বিশেষ জাতের পাথরের সঙ্গে লাইন মিশিয়ে নিদিষ্ঠ তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে সেকালে তৈরি হত কাচ জাতীয় এই রত্নাপাথর।
কৌশল জানা ছিল অনেকেরই কিন্তু বিশেষ ধরেনের চুল্লিতে তাপমাত্রা এবং সময়ের অতি সূক্ষণ হের ফের ঘটিয়ে এমন বাহিরি রং আনার কৌশল জানা ছিল না সবার।যারা ত পারত,তাদের চাহিদা ছিল সারা পৃথিবীর জুড়ে।অর্ধসমাপ্ত পুথিগুলো দেখে তো মনে হচ্ছে এ জুনিস এক সময়ের তৈরি হত এখানে। কাচামাল সম্ভাবত বাইরে থেকে আনা হত তাঁর পর তৈরি হয়ে চলে যেত দেশ বিদেশে।খোঁজ করলে এ জিনিস আরও মিলবে এখানে।চুল্লিও মিলতে পারে আধাটা।চলো আমি ও যাই।উত্তেজনায় সদানন্দবাবুর নেমে এলেন দেবকান্ত সঙ্গেল।মানুষটির মাথায় তখন পাক খেয়ে চলেছে খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে এক গ্রিক নাবিকের লেখা পেরিপ্লাস তেস ইরিথ্রাস থালাস্মের অর্থাৎ ভারত মহাসাগরের পথনির্দেশিকা নামে সেই বইটির কথা।সুদরে গ্রিস,মিশর প্রভৃতি দেশ থেকে সে-সময়ে নাবিকেরা নিয়ে আসত গঙ্গার মোহনার কাছে মস্ত গঙ্গের বন্দরে।পণ্য বোঝায় করে ফিরে যেত নিজের দেশে।সেই সব ভারতীয় পন্যের চাহিদা তখন রোম সাম্রাজের প্রতিটি শহরে আকাশ ছোঁয়া।
ঐতিহাসিক প্লিনি দুঃখ করে তাই বলেছিলাম।এভাবে রোমের স্বর্ণ মুদ্রা ভারতীয়ে পণ্যের কিনতে বয্য থাকলে রোম একদিন স্বর্ণহীন হয়ে পড়বে।সাহস করে এরপর আর একটু ভিতরে ঢুকল ওরা।নজরে পড়ল আর অনেক কিছু।সেই সঙ্গে ভাঙাচোরা ইটের উচু এক ঢিপি।লতাপাতায় ছেয়ে রয়েছে বেশিভাগ।জঙ্গলের ভিতর প্রায় সেড়ক পার রয়েছে বেশিভাগ।জঙ্গলের ভিতরে প্রায় দেড় ঘন্টা পার হয়ে গেল তখন।সাহস বেড়েছে।আবিষ্কারের নেশায় কমবেশি সকলেই বুধ হয়ে রয়েছে।ইতিমধ্যে খ্রিস্টপূর্ব যুগের মার্কড কয়েন পাওয়া গেছে গোটা কয়েক।সবচেয়ে উত্তেজিত সদানন্দভাবু নিজেই।হঠাৎ প্রস্তাব দিলেন ইটের ঢিবির এদিক টাও ঘুরে দেখা দরকার।রত্নপাথর তৈঁরির কারখানাটা এখানে থাকা সম্ভব।খোদ সাদানবাবুর উৎসাহ দেখে আর আপত্তি করলেন না কেউ।বাদার জঙ্গলে পোড়া ইটের পাজা অনেক ক্ষত্রে বিপদজনক।অভিজ্ঞ ভরত বাবু জানে ভালই।রাইফেল বানিয়ে এগিয়ে গেলেন তাঁরা পিছেন বাকি সবাই।গাছ পালার ভিতর দিয়ে এরপর মিনিট দুয়েক এগিয়েছে ওরা।
হঠাৎ ইটের পজার উপারে ঘড়াম করে চাপা আওয়াজ।নিরর্জন বনের ভিতরে সেই ভয়ানক মুহুর্তের পাল্টে গেল দৃশ্যপটি বাপরে বলে সবাই অজান্তে পিছিয়ে এল কেয়েক পা তারপর দাঁড়িয়ে পড়ল চিত্রার্পিতের মতো।কয়েক জনের তো সেটুকু শক্তি তখন অন্তর্হিত।ওঁই অবস্থায় প্রানটি যদি সামনে বেরিয়ে আসত তাহলে ভায়ানক কিছু একটা যেত হয়তো।কিন্তু তেমন কিছু শেষ পর্যন্ত হল না।আর তাতেই ধসে পড়ে শেষ পর্যন্ত প্রান ফিরে পেল মানুষগুলো।ভরতবাবুর সামনে উঠলেন প্রথম। রাইফেল নল সেই ইটের পাজার দিকে তাক করে হেকে উঠলেন,দেরি না করে সবাই ফিরে যান লঞ্চে।আমি পাহারায় র্যেছি ভয় পাবেন না।ওঁই সামান্য পথটুকু অতিক্রম করে এরপর লঞ্চে উঠতে যা অবস্থা হয়েছিল কেয়কজনের,টা না বলাই ভাল।
বরতবাবুর পরে জানিয়েছিলেন,ভাঙা ইটের ওঁই ঢিপি সম্ভত বাঘটার আস্তনা।সন্দেহ নেই,ভরা ছিল পেট তাই এত কাছে এতগুলো অসতর্ক মানুষ দেখেই আড়ামোড়া ভাঙেনি। কিন্তু যেই সেখল লোকগুলো তাঁর আস্তানার দিকে পা বাড়িয়েছে হেকে উঠেছিল তখনই।একটু দেরি না করে লঞ্চ ছেড়ে দিল ওরা।ডেকের উপর দাঁড়িয়ে সেই পত্নস্থলের দিকে হাপুস নয়নে তাকিয়ে দেবকান্ত হতাশ গলায় বলল,জঙ্গলের মধ্যে রত্নপুরি শেষ পর্যন্ত অধরাই র্যে গেল স্যার!ততক্ষণে খানিকটা সামনে উঠেছেন সদানন্দবাবু।হাতে ধরা জলের বোতল শেষ করে বললেন,থাক না ভাই জঙ্গলের মধ্যে আছে বলেই ওঁই রত্নপুরি টিকে আছে এখনও।নইলে লুট হয়ে যেত কবেই।