গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
জোছনা রাতে, সাদা পোশাকে বসে আছেন দাদা। চারপাশে গোল করে বসে আছে, দুই নাতি, তিন নাতিন, এক কাজের মেয়ে। সবাই আব্দার করল দাদার কাছে— ভূতের গল্প বলতে হবে। দাদাও রাজী হয়ে গেলেন ভূতের গল্প বলতে। মজা করে বলতে লাগলেন গল্প—।
—তোমরা কি কেউ জানো, মামার ভূতবাড়ি কোথায়?
সবাই এক সাথে বলে উঠল, না, জানি না।
—তা হলে ভূতের গল্প বলি, তোমরা শোনো। আমার গল্প বলার সময় তোমরা কেউ কথা বলতে পারবে না কিন্তু। জোছনা রাতে গল্প বলার মজাই আলাদা। আজকের গল্পের নাম— ‘ছোট মামার ভূতবাড়ি’, তা হলে আমি বলি, তোমরা শোনো।
নিমপুর। নিম একটি গাছের নাম। তাই তোমরা ভাবতে পারো নিমপুরে অনেক নিমগাছ আছে। নিমগাছ না থাকলে নিমপুর হবে কেন? নিমগাছ আমাদের ঔষধি বন্ধু। যে গ্রামে ঔষধি গাছ থাকে না, সে গ্রামে যেন অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে। গ্রামের সামনে বিশাল মাঠ, মাঝখানে বিশাল বটগাছ। ঝাঁকড়া চুল ছড়িয়ে, দাঁড়িয়ে আছে কাজী নজরুলের মতো। বটের ঝুরি দেখে মনে হয় রবি ঠাকুরের দাড়ি। এক বৃক্ষের দু’টি রূপ, বাহ্! কী চমৎকার না লাগছিল দুপুরের রোদে!
ছোট নাতি বলে ওঠল, দাদু আমরা ভূতের গল্প শুনব।
—বলছি তো, তোমরা শোনো।
সূর্য ডুবে যাচ্ছে। পশ্চিম আকাশে লাল লালিমার রেখা ফুটে ওঠেছে। মাঠে কাজ করে কৃষকরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। পাখিরা ফিরছে আপন নীড়ে। রাতের আঁধারে একটি পাখিও বাস করে না বটগাছে। সামনের পথ দিয়ে মানুষ চলাচল করে না মোটেও। রাতে বিরাজ করে ভূত-ভূতুড়ে পরিবেশ। গা ছমছম করা যত সব কাণ্ড ঘটে গাছতলে। পাশেই শিবনাথ চিতা। সেই চিতায়, পোড়ানো হয়েছে সেই গ্রামের দুষ্টু জমিদার ভবোচন্দ্র ভোলাকে। আরও ভাল মন্দ কত মানুষ। মানুষ মরে গেলে, তার আত্মা ঘোরাফেরা করে, আশেপাশে আকাশে বাতাসে।
সিপন ইন্টার ফাস্ট ইয়ারের ছাত্র, বাস করে নিমপুর। জরুরী কাজে ঢাকায় চলে আসে শনিবার ভোরে। সেই দিনই ফিরতে হবে নিমপুর। দিনের মধ্যেই করতে হবে যত সব কাজ। সিপনের তারুণ্য কাজকে এগিয়ে নিয়ে যায় অনেক দূর। তাড়াতাড়ি কাজ শেষে বাড়ি ফিরছে সিপন। রাত ১২টায় শহরতলী বাস ইস্টিশনে নামে। শহরতলী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে নিমপুর গ্রাম। গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়ায়। আশেপাশে কোনো লোকজন নেই। একটু দূরে চায়ের দোকান। দু’জন লোক দাঁড়িয়ে চা পান করছে। সিপন কী করে একা একা দাঁড়িয়ে থাকবে! মনে ভয় ভয় অনুভব করছে। তাই গুটি পায়ে চলে যায় চা দোকানের সামনে। দোকানের সামনে যে দু’টি লোক চা পান করছিল। তাদের মধ্যে একজনের পরনে ছিল, বেগুনী রঙের শার্ট, কালো প্যান্ট, চোখে সানগ্লাস। অন্যজনের পরনে সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট। সিপন দোকানের সামনে গিয়ে এক কাপ চা বানাতে অর্ডার দিল। সানগ্লাস পরা লোকটি সিপনকে বললেন, আপনি কোথায় যাবেন? আপনি কি নিমপুর গ্রামে যাবেন?
সিপন বলল, হ্যাঁ, আপনি কোথায় যাবেন?
অদ্ভুত ভঙ্গিতে লোকটি বললেন, হু… আমিও যাব।
সিপন ভাবতে থাকে রাতের বেলা কেউ কী কালো সানগ্লাস পরে!
দোকানী চা বানিয়ে বলল, চা। চা হাতে নিয়ে এক চুমুক দিতেই, পিপ করে তিন চাকার গাড়ি চলে এল। চালক বললেন, কোথায় যাবেন?
সাথে সাথে অদ্ভুত লোকটি বললেন, নিমপুর। চালক বললেন, নিমপুর তো যাওয়া যাবে না, যাওয়া যাবে রঘুনাথপুর।
সিপন বলল, রঘুনাথপুর যাব। মনে মনে বলল বাকী পথ হেঁটে হেঁটে যাব। দাম মিটাতে লাগল। চালক নিয়মিত ভাড়ার তিনগুণ বেশী চাইল।
—এত বেশী ভাড়া চাইলে কী করে যাব।
—না, কম হবে না রাতের ভাড়া একটু বেশীই হয়, আসতে হবে খালি। এই বলে চালক গাড়ি চালাতে চাইল।
—দাঁড়াও, দাঁড়াও যাব। অদ্ভুত লোকটি ফের বললেন, আমিও যাব তোমার সাথে।
সিপন বলল, ঠিক আছে।
তারপর সিপন দোকান থেকে একটি ম্যাচ ও সিগারেট কিনল।
গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।