গুনাহ ছেড়ে দাও। ইবাদত শুরু কর। তারপর দেখ, মনের মধ্যে কত রকম শান্তি ও সুখের ধারা প্রবাহিত হতে থাকে। আল্লাহপাকের ইবাদত এমন একটি জিনিস যে অনিচ্ছা সত্বেও যদি তা সম্পন্ন হয়ে যায়, তবু তার সুফল পাওয়া যায়। যেমন, কোনো কাপড় যদি ভুলে রঙের মধ্যে পড়ে যায়, তবু কাপড়ে রং লেগে যাবে। বিষয়টি আরও পরিষ্কারভাবে বুঝানোর জন্য একটি চোরের ঘটনা বর্ণনা করা হলো।
একজন বাদশাহ ছিলেন। তাঁর একজন পরম সুন্দরী কন্যা ছিল। একজন চোর সেই কন্যার প্রতি আকৃষ্ট ছিল। কিন্তু রাজকন্যাকে পাওয়া বড় কঠিন ব্যাপার ছিল।
ঘটনাক্রমে একদিন সে চুরি করার উদ্দেশ্যে বাদশার খাশমহলে প্রবেশ করল।
তখন বাদশাহ ও বেগম তাদের একমাত্র কন্যার বিবাহের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করছিলেন।
বাদশাহ বললেন, “আমাদের কন্যাকে বিবাহ দিব একজন আল্লাহওলা পরহেজগার লোকের সঙ্গে।”
চোর এ কথা শুনে রাজবাড়িতে চুরি করা ভুলে গেল এবং বাদশাহর সিদ্ধান্তের কথাকে এক বিরাট গণিমত মনে করল যে, তার প্রিয়তমাকে পাওয়ার সঠিক ব্যবস্থা জানা হয়ে গেছে। এখন আল্লাহ তায়ালার পরহেজগার হয়ে যাওয়াই তার জন্য সঠিক পথ।
চোর বাদশার ঘর থেকে বের হয়ে এক মসজিদে গিয়ে হাজির হলো এবং দিন-রাত আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয়ে পড়ল। তার খ্যাতি চারিদিক ছড়িয়ে পড়ল, যে মসজিদে একজন কামেল দরবেশ এসেছে।
এদিকে বাদশাহ তার কন্যার বিবাহের পাত্র খোঁজার জন্য বিভিন্ন জায়গায় লোক প্রেরণ করলেন।
পরহেজগার পাত্র খোঁজার জন্য চারিদিকে লোক ঠুটে গেল। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে জানা গেল যে, অমুক মসজিদে এমন এক আল্লাহওয়ালা অবস্থান করছেন যার চেয়ে অধিক পরহেজগার সারাদেশে আর কেউ নেই।
এ কথা শুনে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় বিবাহের পয়গাম নিয়ে বাদশাহর দূত তার কাছে গমন করলেন।
কিন্তু চোরের মন ততদিনে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল।
আল্লাহর ইবাদতের শান্তিতে তার অন্তর এতই ভরপুর হয়ে উঠেছিল যে রাজকন্যা এবং সাত রাজ্যের ধন-সম্পদ তার কাছে তখন তুচ্ছ মনে হতে লাগল।
সে রাজদূতকে বলল, “আপনারা চলে যান, আমার মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না।”
(তাসহীলুল মাওয়ায়েজ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৯)
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।