চোর জ্বিনের তৃতীয় ঘটনা
(হাদিস) বর্ণনায় হযরত আবুল আসওয়াদ দুয়াইলি (রহঃ) আমি হযরত মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ) অনুরোধ করেছিলাম, আপনি আমাকে সেই শয়তানের ঘটনা শোনান, যাকে আপনি গ্রেফতার করেছিলেন। তিনি বলেন, আমাকে একবার জনাব রাসূলে পাক (সাঃ) মুসলমানদের দান-খয়রাতের সম্পদ-সামগ্রী দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি (দান-সামগ্রীর মধ্য হতে) খেজুরগুলো একটি ঘরে রেখেছিলাম। পরে দেখলাম, খেজুর ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
একথা নবীজীকে বলতে উনি বলেন, খেজুর যে তুলে নিয়ে যাচ্ছে, সে হল শয়তান। এরপর আমি সেই কামরায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম। দেখলাম, ভীষণ এক অন্ধকার এসে দরজায় ছেয়ে গেল। তারপর সেটা হাতীর আকার ধারণ করল। পরে অন্য একাটা রূপ ধরল। তারপর দরজার ছিদ্র দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ল। আমিও সাহস সঞ্চয় করলাম। সে যখন খেজুর খেতে শুরু করল, আমি তখন লাফ দিয়ে তাকে ধরে ফেললাম। এবং তার দিকে হাত বাড়ানোর সময় বললাম, ওরে আল্লাহর দুশমন! সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন।
আমি একজন বৃদ্ধ। পোষ্য অনেক অথচ দরিদ্র এবং আমি নাসীবাইনের জ্বিনদের অন্তর্গত। যে মহল্লায় আপনাদের নবী আবির্ভূত হয়েছেন, ওখানে আগে আমরা থাকতাম। ওঁর আবির্ভাবের পর আমাদের ওখান থেকে বহিষ্কার করা হয়। আমাকে আপনি ছেড়ে দিন। এরপর আর কখনও আমি আপনার কাছে আসব না। (ওর কথা শুনে) আমি অকে ছেড়ে দিলাম। (ওদিকে) জনাব রাসূলে পাক (সাঃ)-এর কাছে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এসে ঘটনাটি জানিয়ে দিলেন।
নবীজী ফজরের নামাজ পড়ালেন। তারপর একজন ঘোষক ঘোষণা করলেন, মুয়াজ বিন জাবাল কোথায়? আমি উঠে দাঁড়ালাম। তখন নবীজী বললেন, তোমার কয়েদী কি করল? আমি তাঁকে (সমস্ত ঘটনা) নিবেদন করলাম। তিনি বললেন, ও ফের আসবে, তুমি তৈরি থেকো।
সুতরাং আমি ফের (পরের রাতে) সেই কামরায় প্রবেশ করলাম। দরজা বন্ধ করে দিলাম। সেও ফের এল। এবং দরজার ফাঁক দিয়ে ঢুকল। তারপর খেজুর খেতে শুরু করল। আমিও আগের মতই তাকে ধরে ফেললাম। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি এরপর আর কখনও আসব না। আমি বললাম, ওহে খোদার দুশমন! তুমি তো আগেও বলেছিলে যে, এরপর আর কখনও আসবে না! সে বলল, এরপর আর আমি কোনও মতেই আসব না। এবং এর নিদর্শন (হিসেবে আপনাকে বলছি), যে ব্যক্তি সূরা আল বাকারার শেষ অংশ পড়বে, রাতে তার ঘরে আমাদের জ্বিনদের মধ্যে কেউ ঢুকতে পারবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্যঃ অন্য এক বর্ণনায় আছে, হযরত মুয়াজ বলেছেন, সেই জ্বিন আয়াতুল কুরসী ও সূরা আল বাকারাহ শেষাংশ (আমানার রসূলু থেকে শেষ পর্যন্ত) পড়ার কথা উল্লেখ করে। তখন আমি তাকে ছেড়ে দিই এবং সকালে নবীজীর কাছে হাজির হয়ে তার কথা উল্লেখ করি। তিনি (সাঃ) বলেন, ওই মিথ্যুক খবীস, একথাটি সত্যই বলেছে। হযরত মুয়াজ বলেন, আমি (রাতে) আয়াত দুটি পড়তাম। ফলে খেজুর আর কমতে দেখতাম না।