চেষ্টা-সাধনা

চেষ্টা আর সাধনা ছাড়া আজকাল সাফল্য লাভ করা একপ্রকার অসম্ভবই বলা যায়। অবশ্য সবযুগেই পরিশ্রমী ও অধ্যবসায়ী মানুষরাই সফলতার মুখ দেখেছে। আর যারা অলস ও কর্মবিমুখ তারাই ব্যর্থ মানুষ হিসেবে সমাজে পরিচিতি পেয়েছে। সুতরাং মানুষের জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি হলো পরিশ্রম ও চেষ্টা-সাধনা। এ সম্পর্কেই আমরা রংধনু আসরে অনুষ্ঠান প্রচার করেছি। এতে থাকবে একটি গল্প ও নতুন এক বন্ধুর সাক্ষাৎকার।

 

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে- ‘পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসুতি।’ অর্থাৎ পরিশ্রম ও চেষ্টা-সাধনার মাধ্যমেই মানুষ সৌভাগ্য লাভ করে। বিশ্বের ইতিহাসও একথারই সাক্ষ্য দেয়। নবুয়ত পাওয়ার পরপরই মক্কার কুরাইশরা রাসূল (সাঃ)এর বিরুদ্ধে বাধার পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে গেল ৷ এমন সময় সিংহপুরুষ আবু তালিবও ঘাবড়ে গিয়ে ভাতিজা মুহাম্মদ (সাঃ) কে কুরাইশ নেতৃবৃন্দের সাথে একটি আপোসরফা করে চলার জন্য বলল ৷ তখন কি হলো ? আমাদের প্রিয় নবী কি ঘাবড়ে গেলেন ? না, মোটেই না ৷ বরং দ্বিগুণ তেজে বললেন , “ওরা আমার এক হাতে যদি চন্দ্র এবং আরেক হাতে সূর্যকেও এনে দেয় তবু আমার পথ থেকে আমি এক চুল পরিমাণও বিচ্যুত হবো না ৷” জীবনে এমন কঠিন অঙ্গীকার ছিল বলেই মক্কার সেই কিশোর রাখাল বালকটি বড় হয়ে সমগ্র জাহানের অধিপতি হয়েছিলেন। এত অল্প সময়ে রাসূল (সাঃ) এর অবিস্মরনীয় সাফল্যের পেছনে শুধুমাত্র আল্লাহর সাহায্যই নয় বরং তার সুদৃঢ় আকাঙক্ষা এবং সাধনাও মূল কারণ হিসেবে কাজ করেছে ৷ আর তাইতো আমেরিকার সবচেয়ে সফল প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন বলেছেন ,” যদি কেউ গভীরভাবে উকিল হওয়ার ইচছা করে তবে অর্ধেক ওকালতি পড়া হয়ে যায় , আর বাকি অর্ধেকটা তাকে বই পড়ে শিখতে হয় ৷” ঠিক তেমনি আটলান্টিকের ওপর দিয়ে সবার আগে উড়ে যাওয়া অ্যামেলিয়া আরহার্ট বলেছেন,” আমি আটলান্টিকের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়েছিলাম কারণ আমি উড়তে ইচ্ছা করেছিলাম ৷”

শুধু সুদৃঢ় আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চুপটি করে সোফায় বসে থাকলেই সাফল্য আসবে ? না, এক্কেবারে না । তাহলে উপায় ? হ্যাঁ , আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে চাইলে দরকার চেষ্টা আর সাধনা ৷ একটি উদাহরণ দিলেই বিষয়টি তো মাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রায় এক হাজার নতুন বিষয়ের আবিষ্কারক বৈজ্ঞানিক এডিসনের মৃত্যুর পর নিউইয়র্ক পত্রিকায় লেখা হয় “মানুষের ইতিহাসে এডিসনের মাথার দাম সবচেয়ে বেশি ৷ কারণ এমন সৃজনশক্তি অন্য কারো মধ্যে দেখা যায়নি ৷” অথচ ১৮৭৯ সালের ২১ অক্টোবর তার আবিস্কৃত পৃথিবীর প্রথম বৈদ্যুতিক বাতিটি যখন জ্বলে উঠলো তখন ক’জন জানতো যে বিগত দু’বছরে তিনি এটি নিয়ে প্রায় দশ হাজার বার ব্যর্থ চেষ্টা করে আজ সফল হয়েছেন ! সত্যি সাফল্যের পেছনে কি নিদারুন সাধনা!

দুঃখিত!