গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
চার মহিষ মনে করেছিল এবার বুঝি একটা স্থায়ী ঠিকানা হলো। কিন্তু দিন কয়েক পরে একদিন উদয় সিংয়ের বসার ঘর থেকে তাদের নিয়ে বেশ কথা শুনতে পায়। হরিয়ানার গ্রাম থেকে ছুটে আসা তাদের গৃহস্থের কণ্ঠও শোনা যায়। উদয় সিং গৃহস্তকে বলে, চার চারটে মহিষ চুরি যাচ্ছে, আর আপনারা কেউ টের পেলেন না। আমাকে উচিৎ মূল্য দিন, নিয়ে যান। আমি চুরি করা মাল ভাঙ্গাই না।
গৃহস্থকে দেখে খারাপই লাগছিল ওদের।
সবশেষে কলকাতার এই ব্যবসায়ীর কাছে ডাবল দামে একটা রফা হলে গতকাল দুপুরে তাদের যাত্রা শুরু হয়।
শুনেছে কলকাতার লোকেরাও বাঙালি। মহিষদের ভাত খাওয়ায়। এবং বেশ নরম শরম মানুষ তারা।
আকাশ একদম পরিষ্কার। সূর্য আজ মেঘের আড়ালেই থেকে যাবে মনে হচ্ছে।
চারদিকে সজিব গাছপালা। তারা হেঁটে যাচ্ছে একটা উঁচু টিলার গায়ে লাগানো আঁল দিয়ে। আঁলের দুই পাশে গজিয়ে উঠেছে সবুজ ঘাস। চার মহিষের জিহ্বায় পানি এসে গেল।
কিন্তু কোনও উপায় নেই, একটু থামলে নিতাই আর সুমন বাশের কঞ্চি দিয়ে পাছায় বাড়ি মারবে। এই মুহূর্তে বাঁশের কঞ্চির মার খাওয়া খুব কঠিন। জমিগুলোতে তিল আর বোরোর আবাদ। যতদূর চোখ যায় ফাঁকা।
তবে দূরে একটা বেড়া চোখে পড়ছে। চোখের সীমানা পেরিয়ে চলে গেছে বহুদূর। ভোরের হাওয়া এসে গায়ে লাগছে। বেশ আরাম লাগছে তাদের। নিতাই আর সুমন একটু দুরে বসেছে। ভেজা ঘাসের ওপর। সম্ভবত খাবার খাচ্ছে। নিতাই আর সুমন অত্যন্ত কিপ্টে প্রজাতির মানুষ। মন বলে কিছু নেই। এতটা পথ নিয়ে এলো একবারও খাবারের কথা বলল না।
কোথাও একটা বিকট শব্দ হলো। কিসের শব্দ? নিতাই আর সুমন উঠে দাঁড়ায়। চারপাশে তাকাচ্ছে। ভয়ের কিছু কি? নিতাই আর সুমন জানে। আরেকটা আওয়াজ ভেসে এলো।
মনে হলো কানের পাশ দিয়ে কী যেন ছুটে গেল। নিতাই আর সুমন রকেটের মতো দৌড় দিয়ে কোন দিকে চলে গেল? মহিষ চারটা আর একমুহূর্ত দেরি করল না।
চিৎকার দিতে দিতে দৌড়াতে লাগল।
মঈনুলের আজ ভালো ঘুম হয়েছে। প্রথম বর্ষা। বৃষ্টি আর ব্যাঙের ডাকাডাকিতে কখন ঘুমিয়েছে বলতে পারে না। ভোর রাতেই তার ঘুম ভেঙে গেল। তবে মহিষের ডাকে। এই গ্রামে তার জানামতে কারও মহিষ নেই।
তবে ডাকছে কোথায়? কয়েক মুহূর্ত ভয় হলো তার। পরক্ষণেই মনে পড়ল সীমান্তের এই গ্রামের রাস্তা দিয়ে প্রায়ই ভারতীয় গরু মহিষ ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়।
তবে মহিষের ডাকগুলো রাস্তার উল্টো দিক থেকে ভেসে আসে বলে সন্দেহটা বেড়ে যায়।
সীমান্তের কাছ থেকে মহিষের ডাকগুলো ভেসে আসছে নিশ্চিত হয়ে সে বিছানা থেকে ঝটপট উঠে পড়ে। মঈনুলের বাড়ির পেছনে মাত্র পঁচিশ গজ দূরেই বর্ডার। সে বের হতেই আবার মহিষের ডাক শুনতে পায়।
তার মুতুর চাপ আসে। শুকানো পুকুরে একটু একটু পানি জমেছে। ব্যাঙেরা ডাকাডাকি করছে সেখানে। মঈনুল মুতু করতে বসেই কয়েকটা মহিষের বিকট চিৎকার শুনতে পেল।
গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।