মাঝ রাতের ঘুম ঘুম চোখেও আজকাল একটু পুরনো ঘ্রাণ নিতে প্রাণ ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এ ঘ্রাণ ঠিক পুরনো না , এ ঘ্রাণটা অনেক প্রিয় কিছুর, খুব মাতাল করা কিছু। ঘ্রাণটা স্মৃতির , ঘ্রাণটা প্রিয় গানের একটা লাইনে। ঘ্রাণটা কবিতার ছন্দে। ঘ্রাণটা এক রাশ স্মৃতি ছুঁয়ে যাওয়া প্রিয় ফুলের।
কেন মন এত ব্যাকুল হয়ে ওঠে এই ঘ্রাণের জন্য। ছুঁয়েও ছুতে ইচ্ছে করে না।এক মুহূর্তে মনে হয় থাক সে দূরেই থাক ঠিক তার পর মুহূর্তে মনে হয় আরেকটু কাছে আসুক সে। কেন হাজারো স্মৃতির ঘ্রাণ আবার জাল বুনে। জাল বুনে যায় চক্রাকারে। যে চক্রের না আছে শুরু না আছে শেষ। অনবরত চলতে থাকা এ চক্রের মাঝে খুঁজে বেরানো হারানো সব ঘ্রাণ।
কেন খুঁজে ফেরে এ মন এত সব ঘ্রাণ? উত্তরটা বোধ হয় মনের জানা নেই।আশপাশের হাজারো স্মৃতির ভিড়ে কেন ঠিক মনটা সেই সব ঘ্রাণের পিছনেই ছুটে বেড়ায়। যেমনি পথ হারা পথিক আঁধার করা মেঘলা আকাশে তার সন্ধ্যা তারাকে খুঁজে বেড়ায়।
মাঝে মাঝে এই সব চক্রে নিজের নেই হয়ে যাওয়াটা ভীষণ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। ঐ তো ক্লাসের ফার্স্ট বেঞ্চে বসে নোট নিতে নিতে চোখ ঘোলা হয়ে ওঠার দিনে। বন্ধুদের আড্ডায় হাসতে হাসতে হুট করে হাসতে ভুলে যাওয়া সন্ধ্যায়। মাঝ রাতের গানের লাইনগুলো হঠাৎ টুকরো হয়ে ভাঙ্গা দেয়ালের মত আশে পাশে ছড়িয়ে পরা।
খুঁজে ফিরেও নিজেকে ঠিক নিজের মত পাওয়া যায় না। আঁধারে লুকিয়ে থাকা বিষাদের উকি ঝুঁকি মারে মহা আনন্দের সাথে। বিষাদ সে কি কখন ওই আঁধার থেকে হারায় ?? নাহ থাকে প্রতিটা হাসিতে , প্রতিটা আনন্দের সাথে। অনেক অনেক গহীনে বিষাদের চারারা ডালপালা মেলতে থাকে। চক্রটাকে আরও গভীর করে তোলে, আরও বেশি আঁধারময় করে তোলে। জমাট বাধা রক্তের মত বসে থাকে।
বিষাদের কোন ছায়া নেই কিন্তু ঠিক নিজের ছায়ার মাঝে বিষাদের নাচন দেখা যায়। মাঝ রাত্তির নির্ঘুম বালকের সিগারেটের মত কিংবা কোন এক রাজকুমারীর অকারণ ঘোলা হয়ে যাওয়া চোখের মাঝে। বিষাদ তুই কার ?? অতি আবেগী কারো নাকি অতি প্র্যাক্টিক্যাল কারো??
বিষাদটা হচ্ছিস তুই। চাইলেই ছুঁয়ে দেয়া যায় কিন্তু ছুঁয়ে দিলেই তো হারাবি ওই ঘ্রাণের মাঝে। চাইলেই তো হাটতে পারি তোর পাশে কিন্তু আসলেই কি পাই তোকে পাশে??
বিষাদের ভালোবাসার প্রার্থনার মত ভালো থাকুক। বিষাদেরা প্রিয় ফুলের ঘ্রাণ হয়ে মন ছুঁয়ে যাক। বিষাদের থাকুক বেঁচে ।