গোপালের সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধির কথা সবাই জানত। একদিন এক প্রতিবেশী তার মোকদ্দমা চালানোর জন্য গোপালের সাহায্য চাইল। গোপাল প্রথমে রাজি হচ্ছিল না, কিন্তু নাছোড়বান্দা প্রতিবেশীর অনুরোধে শেষ পর্যন্ত রাজি হলো। গোপাল যতটা সম্ভব চেষ্টা করল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মামলায় হেরে গেলেন ভদ্রলোক।
ভদ্রলোক কান্নায় ভেঙে পড়ে বললেন, “এ কী করলেন গোপাল, আমার সব গেল!” গোপাল হেসে উত্তর দিলেন, “দেখুন, অনেক সময় রোগী সেরে উঠতে উঠতেও হার্টফেল করে মারা যায়। তাকে কি আর ব্যারামে মারা বলা যায়? আপনার মামলার অবস্থাও তাই। বিচারকরা তিনটি বিষয় বিবেচনায় নেন—অনুমান, প্রমাণ এবং স্বীকারোক্তি।
প্রথমেই অনুমান আপনার পক্ষে ছিল। যে কেউ মামলার কথা শুনলেই বলত যে বিবাদী দোষী। বিচারকও তাই ভেবেছিলেন, কিন্তু অনুমানের ভিত্তিতে রায় দেওয়া যায় না। দ্বিতীয়ত, প্রমাণ। আমি যথাসাধ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেছি, কিন্তু প্রমাণের মধ্যে গলদ রয়ে গেছে। বিপক্ষের উকিল আমাদের প্রমাণগুলোকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিলেন। তৃতীয়ত, স্বীকারোক্তি। যদি আসামি দোষ স্বীকার করত, তাহলে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু সে তা করল না। তাহলে আমি আর কী করতে পারি? রোগ সেরে উঠতে উঠতেও হার্টফেল! এতে আমার কী দোষ বলুন?”
ভদ্রলোক গোপালের কথায় আরও রেগে গিয়ে চলে গেলেন।