আমি যে ঘটনাটি শেয়ার করতে যাচ্ছি, সেটা আমার বাবার জীবনের ঘটনা।
শবে বরাতের রাতে বাবা প্রায়ই দাদা-দাদীর কবর (বনানী) যিয়ারত করতে যান।
দাদা-দাদীর কবরটা অনেকটা ডেড এন্ড-এর মতো জায়গায় — মানে, এর পর আরও ছয়-সাতটি কবর, তারপরই উঁচু দেয়াল; বেরিয়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই।
গোরস্থানের মূল গেট অনেক দূরে।
দাদা-দাদীর কবরের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা আছে, সেটি তুলনামূলকভাবে চওড়া — গোরস্থানের অন্যান্য রাস্তার চেয়ে কিছুটা বড়।
দাদা-দাদীর কবরের দিকে মুখ করে দাঁড়ালে বামদিকে থাকে ডেড এন্ড, আর ডানদিক দিয়ে আসতে হয়।
আমি নিজেও কয়েকবার শবে বরাতের রাতে সেখানে গিয়েছি, তাই জানি — এই রাতে কবরস্থানে সাধারণত বেশ জনসমাগম হয়।
যে রাতের ঘটনাটা বলছি, সেদিন অবশ্য আমি যাইনি।
বাবা একাই গিয়েছিলেন।
বরাবরের মতো সেদিনও কবর জিয়ারতের জন্য অনেক লোকজন ছিল।
বাবা দাদীর কবর জিয়ারতের সময় হঠাৎই বিদ্যুৎ চলে যায়।
দোয়া-দরূদ পড়া শেষ করে বাবা মোনাজাতের জন্য হাত তুললেন।
ঠিক সেই মুহূর্তে, ডানদিক থেকে কারও আসার শব্দ পেলেন —
পায়ের শব্দ।
শব্দটা বাবার একদম পেছনে এসে থেমে যায়।
মোনাজাতের সময় অনেকেই এসে যোগ দেয় — কেউ দোয়ায় শরিক হতে, কেউ হয়তো শুধু আশীর্বাদের আশায়।
তাই বাবা প্রথমে মনোযোগ দেননি, ভেবেছিলেন কেউ এসে দাঁড়িয়েছে পাশে।
মোনাজাত শেষ করে পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখলেন — কেউ নেই।
চারিদিকে কেবল অন্ধকার, নিস্তব্ধতা।
এরপর বাবা ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসেন।
আসার পথে খেয়াল করলেন — গেটের ভেতরে আর কেউ নেই,
বাইরেও মানুষজন প্রায় নেই বললেই চলে।
বাবা বাইরে এসে গাড়ির কাছে পৌঁছাতেই ড্রাইভার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,
— “স্যার, আপনি এতক্ষণ ভেতরে ছিলেন?
কারেন্ট চলে যেতেই তো সবাই বের হয়ে গেছে!”
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।