কিছু না, কিছু না-২য় পর্ব

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

একবার ভেবে দেখ দোস্ত এ’দুটো সোনার গয়না নিয়ে কী মুশকিলেই না পড়েছি আমি, এগুলো আমার কোন কাজে আসবে বলতে পার!’

বণিকের হাতে কাঁকনদুটো গছিয়ে ওয়ালি যেন পালিয়ে বাঁচল, আর যাবার আগে দূর থেকে হাঁক দিয়ে বলে গেল –

‘খাইস্তানের রাজকন্যেকে আমার নামটা বোলো কিন্তু দোস্ত! বোলো, এটা ওয়ালি দাদের উপহার!’

ঠিক এক সপ্তাহ পরে যখন খাইস্তানের রাজপ্রাসাদে বণিক যখন রাজকন্যের হাতে ওয়ালি ওস্তাদের দেওয়া তোফা পৌঁছে দিল, রাজকন্যে দারুন খুশি হলো | তবে অবাক হলো তার চেয়েও বেশি |

‘কে এই ওয়ালি দাদ! আর কেনই বা আমাকে এমন সুন্দর আর দামী উপহার পাঠিয়েছ?’

‘ওয়ালি দাদ যেই হোক, সে নিশ্চয়ই নিজের ধনসম্পদের বহর দেখিয়ে আপনার মন জয় করতে চায়’ – রাজসভার এক বুদ্ধিদাতা জানাল |

‘আপনি ওকে আরও দামী কোনো উপহার পাঠান, যাতে অর ধনসম্পদের গর্ব ফুট হয়ে যায়’ – বলল আরেক পরামর্শদাতা |

রাজকন্যা পাঠালো মহার্ঘ্য আর সুক্ষ্মতম রেশমের এক প্রকান্ড বোঝা | আর বণিক যখন খাইস্তানের রাজকন্যের দেওয়া সেই প্রকান্ড উপহারের বোঝা উটের পিঠে চড়িয়ে হাজির করলো ওয়ালি ওস্তাদের কুঁড়ে ঘরের সামনে, সে হয়ে উঠলো একটা দেখার মতো দৃশ্য | ওস্তাদ তো আরেকটু হলেই ভিরমি খাচ্ছিল!

‘এই রেশমের বোঝা নিয়ে আমি কী করব’ – কাঁদো কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করলো ওয়ালি |

‘তুমি এটা অন্য কাউকে দিয়ে দিতে পারো’ – বণিক বলল |

‘কিন্তু কাকে দেব? কে আছে এমন?’

‘একজনই আছে, যাকে এ তোফা মানায়, তিনি নেকবাদের সম্রাট মহীয়ান!’ – জানাল বণিক |

নেকবাদের তরুণ সম্রাট যখন সেই মহার্ঘ্য আর সুক্ষ্মতম রেশম উপহার পেলেন, মুগ্ধ হয়ে গেলেন ওয়ালি দাদের সুক্ষ্ম রুচিবোধ আর জিন্দা দিলের পরিচয় পেয়ে | কিন্তু কে এই ওয়ালি দাদ আর কেনই বা তাঁকে এত দামী উপহার পাঠিয়েছে সম্রাটের জন্য? একই প্রশ্ন উঠলো, আর এবারেও একই রকম টুপি বা দাড়িগোঁফওয়ালা একই রকম চশমা আঁটা কোনো বুদ্ধিদাতা ভারী গম্ভীর গলায় জানাল – ‘ওয়ালি দাদ যেই হোক, সে নিশ্চয়ই নিজের ধনসম্পদের বহর দেখিয়ে আপনার মন জয় করতে চায়!’

সুতরাং কয়েকদিনের মধ্যেই নেকবাদের মহীয়ান তরুণ সম্রাটের উপহার দেওয়া ১২ টা ধপধপে তেজী ঘোড়া এনে ওয়ালি দাদের কুঁড়েঘরের দোরগোড়ায় হাজির করলো সেই বণিক | ওয়ালি ওস্তাদের পিলে চমকে গেল | ঘোড়াগুলোকে সে পত্রপাঠ চালান করে দিল খাইস্তানের প্রাসাদে | এবার আরো মুগ্ধ আরো অবাক হলেন খুবসুরত সেই রাজকন্যে | ভ্রু-ধনুক বেঁকে উঠলো সুন্দরীর |

‘বণিক, তুমি তো মাননীয় ওয়ালি দাদকে নিষেধ করতে পার, কেন যে বারবার এত দামী দামী উপহার তিনি পাঠান, আর আমিই বা ওনার যোগ্য উপহার কি দিতে পারি প্রত্যেকবার!’

কয়েকদিন বাদে খাইস্তানের রাজকন্যের উপহার দেওয়া ২০ টা গাধার পিঠে বোঝাই রূপো নিয়ে বণিক যখন হাজির হলো ওয়ালি দাদের মকানে, ওস্তাদ আর এক মুহূর্ত দেরি করলো না, ২০ টা গাধা বোঝাই রূপো চলে গেল নেকবাদের প্রাসাদে | নেকবাদের মহীয়ান সম্রাট এবার বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন | শেষে রাজসভার সবচেয়ে বুজুর্গ বুদ্ধিদাতা যিনি, তিনি এসে দাড়ি চুমড়ে বললেন – ‘ওয়ালি দাদ নিশ্চয়ই এটা জাহির করতে চায় যে নেকবাদের মহীয়ান সম্রাটের থেকেও সে বেশি বড়লোক | ওকে এমন একটা উপহার পাঠান যা দুনিয়ার কেউ কোনদিন কল্পনা করতেও বিষম খাবে |’

নেকবাদের সম্রাট এবার ওয়ালি দাদকে উপহার হিসেবে পাঠালেন সোনার ঝালড়ে মোড়া ২০ টি পুরুষ্টু উট, সোনার লাগাম পরানো ২০ টা তেজি ঘোড়া, ২০ টা হাতি যাদের পিঠে সোনার তৈরি হাওদা, এবং সব দেখাশোনা করার জন্য কুড়িজন জওয়ান বান্দা!

 

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

দুঃখিত!