
ঘটনাটা ২০০০ সালের।
আমরা যে বাসায় থাকতাম, তার উপর তলায় আমার আব্বুর এক কলিগ থাকতেন। বেশ কিছুদিন ধরেই গভীর রাতে তাঁর বাসার কলিংবেল বেজে উঠত—প্রায় রাত ২টা বা ৩টায়।
আংকেল যখন দরজার কাছে গিয়ে “কে, কে?” বলে জিজ্ঞেস করতেন, তখন কোনো উত্তর আসত না। প্রথমে তিনি ভাবলেন হয়তো কোনো দুষ্ট ছেলেপেলে দুষ্টুমি করছে। কিন্তু ঘটনা যখন বারবার ঘটতে লাগল, তখন তিনি চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
একদিন আব্বুকে পুরো ব্যাপারটা জানালেন।
আব্বু হাসিমুখে তাঁকে আশ্বস্ত করলেন, বললেন—”এটা হয়তো আপনার ভুল শুনা, অথবা কোনো বৈদ্যুতিক গোলযোগ। চিন্তা করবেন না।”
কিন্তু সেদিন রাতেই রহস্যময় কিছু ঘটে গেল।
আব্বু তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ছিলেন। তখন স্পষ্ট শুনতে পেলেন, তিনতলায় কলিংবেল বাজছে!
তিনি প্রথমে ভাবলেন, হয়তো সত্যিই কেউ এসেছে। কিন্তু ঠিক তখনই তাঁর মনে পড়ল—আংকেল তো বলেছিলেন, বেল বাজলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায় না!
আব্বু ধীরে ধীরে দরজা খুলে তিনতলায় উঠতে শুরু করলেন।
যেইমাত্র তিনি সিঁড়ি বেয়ে উঠলেন, অমনি দেখলেন—একটা সাদা ছায়ামূর্তি ধীরে ধীরে উপরে উঠছে!
আব্বু ভড়কে গেলেও ভয় পেলেন না। তিনি মুখে দোয়া-দরুদ পড়তে থাকলেন, আর ছায়াটার দিকে এগোতে লাগলেন।
বিস্ময়ের ব্যাপার, ছায়ামূর্তিটাও ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে লাগল!
আব্বু সেটিকে অনুসরণ করতে করতে ছাদ পর্যন্ত চলে গেলেন। তখনই দেখলেন, ছাদের দরজা আপনার আপনাআপনি খুলে গেল!
ছায়ামূর্তিটি ধীরগতিতে ছাদের কিনারায় গিয়ে দাঁড়াল।
তারপর হঠাৎ সে আব্বুর দিকে ফিরে তাকাল!
আব্বু দ্রুত দোয়া পড়ে চারপাশে ফুঁ দিতে লাগলেন এবং ধীরে ধীরে পেছাতে শুরু করলেন।
তখনই তিনি একবার উপরে তাকিয়ে দেখলেন… ছায়ামূর্তিটি গায়েব হয়ে গেছে!
পরদিন সকালে আব্বু সবকিছু আংকেলকে খুলে বললেন।
সেদিনের পর থেকে আর কোনো রাতে কলিংবেল বাজেনি।
আর সেই ছায়ামূর্তিটাকেও কেউ কখনো দেখেনি…!