কবরের বাস্তব ঘটনা

আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগের কথা। আমার এক ইঞ্জিনিয়ার বন্ধু পাঞ্জাবের সেচ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। আল্লাহ রাসূলে তার কোন বিশ্বাস ছিল না। এ বিষয়ে মাঝে মাঝে খারাপ মন্তব্য করতো। জেলা ডেরাগাজীখানে তিউনিসা ব্যারেজ থেকে পানি সরবরাহের লক্ষে যে খালটি খনন করা হয়, আমার বন্ধু ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তারই তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। খালটি খনন কাজ সমাপ্ত হওয়ার শেষ পর্যায়ে একদিন তিনি সরেজমিনে দেখতে গেলেন। এক জায়গায় খননকারী মজদুরেরা খালের তলদেশে মাটির ঝটলা করেছিল। খবর নিয়ে জানতে পারলেন, খালের তলদেশে মাটির নিচে একটি লাশের অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছে।

কৌতূহলী হয়ে তিনি লাশের উপর থেকে মাটি সরাবার নির্দেশ দিলেন। আশ্চর্যান্বিত হয়ে দেখতে পেলেন লাশটা সম্পূর্ণ অবিকৃত। লাশের স্বাভাবিক পোশাক রক্তে রঞ্জিত। লাশের মুখের কাছেই ফলের আকৃতির একটি অচেনা বস্তু রাখা আছে। কিছুক্ষণ পর পর বস্তুটি থেকে ফোঁটা ফোঁটা রস লাশের মুখের উপর পড়ছে। অবাক হয়ে দৃশ্য দেখে অনুমতি হলো যে, এটি কোন শহীদের লাশ। নুন্যতম বিশ ফুট মাটির নিচে প্রাপ্ত লাশটি কত বছর আগে থেকে এখানে প্রোথিত আছে তা কে জানে। হাশরের ময়দানে রক্ত সহকারে মহান আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়ার জন্য অপেক্ষারত এ মৃতুদেহ; এমনকি তার গায়ের কাফন মাটিতে বিনষ্ট হয়নি। উপরন্ত পবিত্র কোরআনের বক্তব্য অনুযায়ী শহীদগণের কবরজীবনে আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে রিজিক প্রদানের যে অঙ্গীকার রয়েছে তারও একটি বাস্তব চিত্র ইঞ্জিনিয়ার সাহেব তার দলবল নিয়ে চর্মচক্ষেই দেখলেন।

অজ্ঞাত শহীদের লাশ যথাযোগ্য মর্যাদায় পুনরায় দাফন করে লাহোরে ফিরে এসেই ইঞ্জিনিয়ার সাহেব আমার নিকট ছুটে এসে ঘটনাটি আদ্যোপান্ত বর্ণনা করার সময় তার বস্তুবাদী মানসিকতায় যে পরিবর্তনের আভাস লক্ষ্য করলাম, তা ছিল অনুবাধন করার মত। এই ঘটনা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়, মহান আল্লাহর সেই শাশ্বত ঘোষণার কথা, যারা আল্লাহ তায়ালার পথে নিহত হয়েছেন, তাদেরকে তোমরা মৃত্যু মনে কর না। প্রকৃতপক্ষে তারা জীবিত। তারা তাদের রবের নিকট থেকে রিজিক পাচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে যা কিছু দান করেছেন তা পেয়ে তারা খুশি ও পরিতৃপ্ত।

(সূরা আল-ইমরান)

সূত্রঃ চোখে দেখা কবরের আযাব

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।