ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – শেষ পর্ব

আমার ও মুশরিকগণের মাঝখানে অপর এক ব্যক্তিকে দেখিলাম, যাই হোক আমি চিনিতে পারিতেছিলাম না। তাহার অপেক্ষা আমি রাসূল (সাঃ) বেশী নিকটে ছিলাম। তিনি আমার অপেক্ষা দ্রুত চলিতেছিলেন। হঠাৎ দেখি তিনি আবু ওবায়দা ইবনে জাররাহ (রাঃ)। আমরা উভয়ে রাসূল (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছিয়া দেখিলাম, তাঁহার সামনের দুইটি দাঁত ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, চেহারা মুবারক আঘাতপ্রাপ্ত হইয়াছে এবং চেহারার উপর শিরস্ত্রাণের দুইটি কড়া (আংটা) ঢুকিয়া গিয়াছে। তিনি আমাদিগকে বলিলেন, তোমাদের সঙ্গী তালহার খবর লও। কারণ তিনি অধিক রক্তক্ষণের দরুন দুর্বল হইয়া পড়িয়াছিলেন। কিন্তু (স্বয়ং রাসূল (সাঃ) যেহেতু গুরুতর আহত হইয়াছিলেন যেহেতু) আমরা তাঁহার কথার প্রতি খেয়াল করিলাম না। আমি রাসূল (সাঃ)-এর চেহারা মুবারক হইতে আংটা বাহির করিবার জন্য অগ্রসর হইলে হযরত আবু ওবাইয়দা (রাঃ) আমাকে বলিলেন, আপনাকে আমার হকের কসম, আমাকে এই সৌভাগ্য অর্জনের সুযোগ দিন। অতএব আমি তাঁহার জন্য এই সুযোগ ছাড়িয়া দিলাম।

রাসূল (সাঃ)-এর কষ্ট হইবে মনে করিয়া হযরত আবু ওবাইয়দা (রাঃ) হাত দিয়া টানিয়া বাহির করার পরিবর্তে দাঁতে কামড়াইয়া একটি আংটা টানিয়া বাহির করিলেন। ইহাতে তাহার সামনের একটি দাঁত পড়িয়া গেল। অতঃপর আমিও তাহার ন্যায় (দ্বিতীয় আংটা বাহির করিবার জন্য) অগ্রসর হইলে তিনি সৌভাগ্য অর্জনের সুযোগ ছাড়িয়া দিন। সুতরাং তিনি প্রথম বারের ন্যায় দ্বিতীয় বারও তাহাই করিলেন এবং ইহাতে তাহার সামনের অপর দাঁতটি পড়িয়া গেল।

হযরত ওবাইয়দা (রাঃ) কে এই দন্তহীন অবস্থায় দেখিতে সকলের চেয়ে সুন্দর লাগিল। আমরা রাসূল (সাঃ)-এর খেদমতে হইতে অবসর হইয়া হযরত তালহা (রাঃ)এর নিকট আসিলাম। তিনি একটি গর্তের ভিতর পড়িয়াছিলেন। তাহার শরীরে সত্তেরেরও বেশী তীর, তলোয়ার ও বল্লমের আঘাত লাগিয়াছিল, একটি আঙ্গুলও কাটিয়া গিয়াছিল। আমরা তাহার প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করিলাম। (বিদায়াহ)

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

ওহুদের দিন নবী কারীম (সাঃ )-এর কষ্ট সহ্য করা – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।