এক ভয়ঙ্কর ঘটনা
আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনই কোনও লোক থাকত, সকালে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার মরক্কোর এক লোক এল। ঘরটি সে পছন্দ করে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল। সকালে দেখা গেল, সে পুরোপুরি বহাল তবিয়তেই রয়েছে। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অবাক হল। লোকটি কিছুকাল ঐ ঘরে থাকল। তারপর অন্য কোথাও চলে গেল।
ওকে ঐ ঘরে নিরাপদে থাকার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ও বলেছিল- আমি যখন ঐ ঘরে (প্রথম রাতে) থাকি, তখন ঈশার নামায পড়েছি, কোরআন পাক থেকে কিছু পড়েছি। এমন সময় হঠাৎ দেখি এক যুবক কুঁয়ো থেকে উপরে উঠছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বলল ভয় পেও না। আমাকেও কিছু কোরআন পাক শেখাও। অতএব আমি তাকে কোরআন শেখাতে শুরু করে দেই।
পরে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি এই ঘরের রহস্যটা কি? সে বলে আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরআন পাঠও করি, নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশিরভাগ সময়ে বদমাশ লোকেরা থাকে, যারা মদ্যপানের মজলিশ বসায়। তাই আমরা ওদের গলা টিপে দেই। আমি তাকে বললাম, রাতের বেলা আমি তোমাকে ভয় পাই। তুমি দিনের বেলায় আসবে। সে বলল, খুব ভালো। এরপর সে দিনের বেলায় কুঁয়ো থেকে বের হত।
একবার সে কোরআন পাক পড়ছিল। এমন সময় বাইরে এক ওঝা এল এবং আওয়াজ দিয়ে বলল, আমি সাপে কাটা, বদনজর লাগা ও জ্বিনে ধরার ফুঁক দেই গো! – ও কথা শুনে জ্বিনটি বলল, ও আবার কে? আমি বললাম, ও হলো ঝাড়ফুঁককারী ওঝা। সে বলল, ওকে ডাকো। আমি উঠে গিয়ে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখলাম সেই জ্বিনটি বিরাট বড় সাপ হয়ে (ভিতরের) ছাদে উঠে রয়েছে। ওঝা এসে ঝাড়ফুঁক করতে সাপটি ঝটপট করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেতে পড়ে গেল। তখন তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরে নেওয়ার জন্য ওঝা উঠল। কিন্তু আমি তাকে মানা করলাম। সে বলল- তুমি আমাকে আমার শিকার ধরতে মানা করেছ। আমি তাকে একটি স্বর্ণমুদ্রা (আশরাফী) দিতে সে চলে গেল। তখন সেই অজগর নড়াচড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ পেল। কিন্তু সে দুর্বলতার দরুন হলদে হয়ে গিয়েছিল। আমি তাকে বললাম- তোমার কি হয়েছে? সে বলল, ঐ ওঝা আমাকে পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছে না। যদি তুমি এই কুঁয়ো থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও, তবে এখান থেকে চলে যেও। সেই রাতেই আমি (কুঁয়োর ভিতর থেকে) এই আওয়াজ শুনলাম, তুমি এবার দূরে চলে যাও।
বর্ণনাকারী ইবনে আকীল (রহঃ) বলেন, তারপর থেকে ঐ ঘরে লোক থাকা বন্ধ হয়ে গেছে।
বর্ণনায় হযরত ইবনে আক্বীল (রহঃ)