এক পাগলিণীর কাহিনী
শায়েখ ওতবা (রঃ) বলেন বসরার একটি জঙ্গলে আমি বিচরণ করছিলাম। গভীর জঙ্গলে গিয়ে দেখলাম সেখানে একদল যাযাবর তাবু পেতে বসবাস করছে। আমি তাবুগুলো অতিক্রমের সময় হঠাৎ এক তাবুতে দেখলাম, এক পাগলিনী দাঁড়িয়ে নামায পড়ছে। তার পরিধেয় পশমী জুব্বাটিতে লেখা ছিল এ দাসী বিক্রির যোগ্য নয় এবং ক্রয়ের যোগ্যও নয়। আমি নিকটে গিয়ে তাকে সালাম করলাম। কিন্তু মনে হল সে আমার সালাম শুনতে পায়নি।
এ সময় সে কয়েকটি বয়াত পাঠ করল। এর অর্থ হল, সেই বুজুর্গ সফলকাম হয়েছে, যে নিজের মাওলার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে অভুক্ত রেখেছে। তারা সারা রাত আল্লাহ্র ইবাদতে বিনিদ্র কাটিয়ে দেয়। আর আল্লাহ্ প্রেম তাদেরকে এমন পেরেশান করে রেখেছে যে, মানুষ তাদেরকে পাগল মনে করতে শুরু করেছে। অথচ তারাই যুগের শ্রেষ্ট বুদ্ধিমান। হযরত ওতবা (রঃ) বলেন, তাবুর আশেপাশে ফসলী জমির প্রতি ইশারা করে আমি সেই মহিলাকে জিজ্ঞেস করলাম। এ সব খামার কার? সে জবাব দিল যদি সহী সালামতে থাক, তবে আমাদের। আমি অন্য তাবু দেখতে গেলাম। এতক্ষণে ভীষণ বৃষ্টি আরম্ভ হল। আমি বৃষ্টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে সেই পাগলিনীর তাবুর দিকে রওয়ানা হলাম।
এদিকে এসে দেখলাম, অতি বর্ষণে জমির ফসল পানির নীচে প্লাবিত হচ্ছে। আর এর পাশে দাঁড়িয়ে পাগলিনী বলছে, ঐ জাতের কসম! যিনি স্বীয় মোহাব্বত আমার অন্তরে দান করেছেন। আমি তার সন্তুষ্টি ও ফয়সালার উপর রাজী আছি। তিনিই বীজ ফুটালেন, অঙ্কুর সৃষ্টি করলেন, অতঃপর বৃষ্টির পানি দ্বারা তাকে প্রতিপালন করে যখন ফসল কাটার সময় হলো তখন তাকে ধ্বংস করে দিলেন। অতঃপর আকাশের দিকে মুখ তুলে ফরিয়াদ করল ইয়া আল্লাহ্!
এরা সকলে তোমারই বান্দা আর তুমিই সকলের রিজিকের জিম্মাদার। এখন তোমার যা ইচ্ছা তাই কর। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম এত বড় মুসীবতে তুমি কিভাবে ধৈর্য ধারণ করলে? সে বলল তওবা আমার মনিব অফুরন্ত সম্পদের মালিক, তিনি প্রশংসিত, তার পক্ষ থেকে সর্বদা নতুন রিজিক আসছে। ওতবা বলেন, পরবর্তীতে যখনই তার কথা মনে হতো তখন তার জন্য আমার কান্না আসত।