এক খোদাভীরু আল্লাহওয়ালার কবর
আল্লামা ইয়াফেরী ইয়ামেনী (রহঃ) বলেন- বিখ্যাত বুজুর্গ শায়েখ আঃ আজীজ (রহঃ) এর এক মুরীদ আমার নিকট নিজের এক ঘটনা বর্ণনা করেছেন, একদা হযরত শায়েখের সাথে আমি এক সফরে ছিলাম। দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর আমরা একটি বিরাণভূমিতে পৌছলাম। যে বিরান ভূমিতে পৌছলাম সেই বিরান ছিল একটি কবর। শায়েখ সেই কবরের নিকট বসে কাঁদতে লাগলেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, এ কবরবাসী ছিলেন একজন আল্লাহওয়ালা বুজুর্গ। তার সাথে একবার আমার সাক্ষাত হয়েছিলো। অতঃপর তিনি ঘটনার বিবরণ দিয়ে বললেন-
একদিন আমি বিশেষ প্রয়োজনে এক শহরে যাবার উদ্দেশ্যে ভ্রমণে বের হলাম। পথে মাগরীবের আজান হলে আমি পিকটবর্তী এক মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হলাম। তখন এক ফকীর জামাতে ইমামতি করছিলেন। আমি লক্ষ্য করলাম, ফকীর কেরা’আতের মধ্যে বেশ ভুল করছে। ফলে আমি নামাজের মধ্যে অস্বস্তিবোধ করছিলাম। আমি আমার ভ্রমণ এখানেই স্থগিত রেখে উক্ত ইমাম সাহেবের কেরাত সংশোধন করার কাজে লেগে যাব কি না? তা নামাজের মধ্যেই ভাবছিলাম। কিন্তু নামায শেষ হবার পর ফকীর ইমাম আমাকে নিকটে ডেকে নিয়ে বললেন, আয় শায়েখ আঃ আজীজ! তুমি তো এক ব্যক্তির সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে অমুক শহরে যাচ্ছিলে। এদিকে সেই ব্যক্তিও অন্যত্র সফরের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সুতরাং তুমি কোন প্রকার বিলম্ব না করে ভ্রমণে যাত্রা কর। আর আমার কেরাত সংশোধন করার তোমার কোন প্রয়োজন নেই।
বর্ণনাকারী আঃ আজীজ (রহঃ) বলেন, আমি ঐ বুজুর্গের আধ্যাত্মিক শক্তি দেখে বিস্মিত হলাম এবং কোন দেরী না করে ভ্রমণে বের হলাম। যখন সে শহরে পৌছলাম তখন আমার সেই উদ্দেশ্যিত ব্যক্তি অন্যত্র ভ্রমণের উদ্দেশ্য যাত্রা করে সওয়ারীতে আরোহণ করছিলেন। একটু বিলম্ব হলেই আমার এ সুদীর্ঘ ভ্রমণের উদ্দেশ্য ব্যাহত হত। এবার সেই ফকীরের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও ভক্তি আরো বেড়ে গেল। পরে আমি পুনরায় ভ্রমণ করে তার নিকট গমন করলাম। কিন্তু খুব বেশী দিন তার সংস্পর্শে থাকার সুযোগ হয়নি। আমি তার খেদমতে যাত্রার কিছুদিন পরই তিনি মারা গেলেন। এটিই সে বুজুর্গের কবর।