সোয়াইন ফ্লুর ভ্যাকসিন দিয়ে দুইদিন বিছানায় ঝিম মেরে পড়ে আছি, ব্লগে ঢুকিনি এক সপ্তাহেরও বেশি। জানিনা বড় বড় কোন ঘটনা ঘটে গেছে কিনা। কাফি সাহেব কি বিদেয় হয়েছেন? যাক, ঝামেলা চুকেছে। তাকে নিয়ে ছেলেপুলের ভেতর যে চেচামেচি শুরু হয়েছিল! তার যাওয়াই ভাল। এরপর কার টার্ন কে জানে! অপছন্দের মানুষদের আমাদের পৃথিবীতে না থাকাই ভাল।
মহল্লায় একজন নতুন ভাড়াটিয়া আসলে পাড়ার সর্দারদের খাতির করে চলতে হয় নইলে ব্যগ প্যাটরা নিয়ে পথ মাপা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আমাদের পাড়ায় এসে আমাদের সাথে পোদ্দারি?…
অনেকদিন পরে ব্লগে আসলাম, একটু আগডুম বাগডুম লিখবো। আমার সমস্যা হলো মাথায় গাদা গাদা কথা, যেই না লিখতে গেলাম সব হাওয়া। আমার ব্লগে লিখতে গেলে আবার নার্ভাসও লাগে। কি লিখতে কি লিখবো আবার কাফির পরিনতি হয় কিনা কে জানে। একটা নিরিহ বিষয় খুঁজছি, পাচ্ছিনা।
চিতই পইঠে নি্যে লিখি। গত শনিবারে জেনিভায় একটি সম্মেলনে গেছিলাম। বাংগালিদের যা হয়, যেখানেই যাবে বাংগালীদের সাথে পানখিলি না খেলে মনটা ঠিক ভরেনা। শুক্রবার রাত দশটা পর্যন্ত একটি শপিং মলে আড্ডা দিয়ে হোটেলে ফিরেছি, সকালে ঘুম ভাংলো দরজায় ধাক্কাধাক্কিতে। দরজা খুলেছি, সামনে অরুনদার ভূবন ভোলানও হাসি, হাতে একটি পাত্র, সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা। চোখ মুছতে মুছতে তড়ি ঘড়ি প্রশ্নটা কখন মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো,
-কি?
-খুলে দেখুন।
-ওমা চিতই পিঠা!
জেনিভার এই নভেম্বর সকালে একটি বিদেশী হোটেলরুমের সামনে সাদা ধবধবে চিতই পিঠা। অবিশ্বাস্য। এই বাংগালীরাই পৃথিবির কোন জায়গায় একত্রিত থাকতে পারেনা। দশজন বাংগালী যেখানে নয়টি দল সেখানে এমন সব কথা সবার জানা। আমি কি বলবো ভেবে পেলামনা। স্কুল জীবনে পড়া শংকরের একটি কথা হাতড়ে ফিরলাম, ‘বিদেশে বাংগালী মাত্র সজ্জন’।
আমি শিল্পী নই, তাইলে অনুভূতিটি রং তুলিতে এঁকে রাখতে পারতাম, কবি নই তাইলে অক্ষরের যাদু দিয়ে অভিব্যাক্তি তৈরী করতে পারতাম।
আমার সেই মুহুর্তের অনুভূতি নিজের ভেতর বন্দি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। নষ্টদের দখলে যাওয়া এ পৃথিবীতে আজও এমন কিছু চমৎকার সকাল হয়, যা মানুষকে এ পৃথিবীতে আরও কিছুকাল বাঁচতে অনুপ্রাণিত করে। জেনিভার সেই সকালটি মনের ফ্রেমে ছবি হয়ে রইলো এ হূদয় প্রানে!