একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সাঃ) আমাদেরকে আসরের নামায পড়ালেন। তিনি প্রথম রুকুতে এতই বিলম্ব করলেন যে, আমার ধারণা হল যে, তিনি মাথা উঠাবেন না। অতঃপর তিনি মাথা উঠালেন, আমরাও তাঁর পরে মাথা উঠালাম। নামায শেষে নবী করীম (সাঃ) মিহরাব থেকে এক পাশে সরে জিজ্ঞেস করলেন, আমার চাচাত ভাই আলী ইবনে আবূ তালিব কোথায়?
তখন হযরত আলী (রাঃ) সর্বশেষ কাতার থেকে জবাব দিলে “লাব্বাইকা ইয়া রাসূলুল্লাহ”। নবীজী (সাঃ) তখন বললেন, হে আবুল হাসান! (হযরত আলী (রাঃ) এর উপাধী) আমার কাছে এসো। তখন আলী (রাঃ) নবীজীর কাছে গেলেন। তিনি নবীজী (সাঃ) এর খুবই কাছে গিয়ে বসলেন। নবীজি (সাঃ) তখন বললেন, হে আবুল হাসান! তুমি কি শোননি যে আল্লাহ পাক প্রথম কাতার ও তাকবীরে উলার ব্যাপারে কোরআনের আয়াত নাযিল করেছেন? তিনি বললেন-ইয়া রাসূলুল্লাহ! অবশ্যই শুনেছি।
তখন নবীজী (সাঃ) বললেন, তাহলে কোন জিনিসে তোমাকে তাকবীরে উলার এবং প্রথম কাতারে অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখল? তোমাকে কি হাসান হোসাইনের মহব্বতে মশগুল করেছিল? হযরত আলী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! বিলাল যখন আজান দেন তখনও আমি মসজিদেই ছিলাম। বিলাল ইকামত দিলে আমিও আপনার সাথে তাকবীরে উলা বলি। অতঃপর অযূর ব্যাপারে আমার কিছুটা সন্দেহ হলে আমি মসজিদ থেকে বের হয়ে ফাতেমার ঘরে চলে যাই এবং আমি হাসান হোসাইনকে ডাক দিলাম।
আমার ডাকে কেউ সাড়া দিল না। আমার অবস্থা তখন সন্তান প্রসবকারী মহিলার ন্যায় হয়ে গেল কিংবা ডেক্সিতে শস্য দানা রান্না করার মত হয়ে গেল। আর আমি ওযূ করতে পানি তালাশ করছিলাম। হঠাৎ করে আমার ডাক শুনে কে জেন আওয়াজ দিল এবং স্বর্ণের একটি পানির পাত্র চলে এল। পাত্রটি সবুজ রুমাল দ্বারা আবৃত ছিল। আমি রুমাল সরিয়ে দেখি তাতে দুধ অপেক্ষা শুভ্র এবং মধু অপেক্ষা মিষ্টি এবং ফেনা অপেক্ষা নরম পানি রয়েছে। আমি তা দিয়েই নামাজের জন্য ওযূ করলাম, রুমাল ব্যবহার করলাম হাত মুখ মুছে নিলাম। অতঃপর রুলামটি পিয়ালার উপর রেখে দিলাম। তার পর পরই আমি ঘাড় ফিরিয়ে কিছু দেখতে পেলাম না। আর আমি তাও দেখিনি কেবা পিয়ালাটি রেখে আর কেবা নিয়ে গেল।
তখন নবীজী (সাঃ) মুচকি হেসে বললেন, সাব্বাস! সাব্বাস! হে আবুল হাসান! তুমি কি জান এ রুমাল এবং পানির পাত্রটি কে দিয়েছিল? হযরত আলী বললেন, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। নবীজী (সাঃ) বললেন, তোমার নিকট পাত্র নিয়ে জিব্রাইল এসেছিল। এ পানি ছিল হাযিরাতুল কুদছ এর। আর তোমাকে রুমাল দিয়েছিলন হযরত মিকাইল (আঃ)। যিনি আমার হাত আমার হাটুতে আটকে দিয়েছিলেন ফলে তুমি এ রাকা’আতে এসে অংশগ্রহণ করেছ। তিনি ছিলেন ইস্রাফিল (আঃ)। হে আবুল হাসান! যে তোমাকে ভালোবাসবে আল্লাহ তাঁকে ভালবাসবেন। আর যে তোমার সাথে বৈরীতা পোষণ করবে আল্লাহ ও তাঁর সাথে বৈরিতা পোষণ করবেন।