একজন প্রকৃত শিক্ষকের গল্প

মক্কা শহরের এক অংশে ছোট একটি স্কুলে শিক্ষক ছোট বালকদের ক্লাস নিচ্ছিলেন । ক্লাস শেষে বালকদের হাতে একটি করে খুরমা তুলে দিয়ে খেলার ছলে বললেন তিনি,

– আগামীকাল সকালে তোমরা ক্লাসে আসার আগে যে যার খুরমা- খেজুর কোন একটি গোপন জায়গায় রেখে আসবে যাতে কেউ না দেখে । বুঝতে পেরেছ?

– জ্বী জনাব! বালকদের সমস্বরে জবাবের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো সেদিনের ক্লাস ।

পরেরদিন সকালের কথা । শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন সবাই নিজ নিজ খুরমা লুকিয়ে এসেছে কি না । সবাই লুকিয়ে এসেছে– শুধু একটি ছেলে ছাড়া । শিক্ষক জানতে চাইলেন,

– তোমার সব বন্ধুরা যেখানে লুকিয়ে রেখে আসতে পেরেছে, তুমি কেন পারলে না খোকা? বালকের ধীর-স্থির উত্তর,

– জনাব, আপনি এমন একটি গোপন জায়গায় খুরমা লুকাতে বলেছেন যাতে কেউ না দেখে । আমার সেরকমের কোন

জায়গা নেই । কিঞ্চিত বিস্ময়ের আওয়াজ উঠলো ক্লাসে!

বালক বলে চলল– “আমি সকাল পর্যন্ত বিছানার নিচে, উঠোনের গর্তে, মায়ের তোষকের কোনা সহ অনেক জায়গায় আমার খুরমা লুকানোর চেষ্টা করেছি । কিন্তু এমন কোন জায়গা খুঁজে পাইনি যেখানে লুকালে আমার সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় দেখতে পাবেন না । সবকিছুই যে তাঁর সামনে দৃশ্যমান!”

বৃদ্ধ শিক্ষক ছোট বালকটির অসামান্য জ্ঞান ও চিন্তার ধরন দেখে মুগ্ধ হলেন । আনন্দের পানি চোখে নিয়ে ছেলেটিকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরলেন তিনি । তিনি বুঝতে পারলেন, এই ছেলের শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীর মানুষ তাঁকে মনে রাখবে চিরদিন ।

সেদিনের সেই ছোট ছেলেটি তার শিক্ষককের কথা সত্যি প্রমান করেছিলেন ।

ছেলেটির নাম ছিল আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস।

সারা পৃথিবী তাঁকে “ইমাম শাফেঈ’য়ী (রহঃ)” নামে জানে!

আরো পড়তে পারেন...

অপু ও ফলচুরি রহস্য

মহানগরের কোলাহলের মাঝে, ব্যস্ত জনপথের কিছুটা দূরে একফালি সবুজ ল্যান্ডস্কেপ । সদ্য গড়ে ওঠা আবাসন…

ভালুক ও কাঠবিড়ালী

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘খুকি ও কাঠবিড়ালী’ কবিতাটি কম-বেশি সবাই পড়েছে। এ কবিতাটির কারণেই ছোট্ট…

গাজা দিবস

শিশু-কিশোর বন্ধুরা, কেমন আছো তোমরা? আশা করি যে যেখানে আছো ভাল ও সুস্থ আছো। তোমরা…

একজন প্রকৃত শিক্ষকের গল্প

মক্কা শহরের এক অংশে ছোট একটি স্কুলে শিক্ষক ছোট বালকদের ক্লাস নিচ্ছিলেন । ক্লাস শেষে বালকদের হাতে একটি করে খুরমা তুলে দিয়ে খেলার ছলে বললেন তিনি,

– আগামীকাল সকালে তোমরা ক্লাসে আসার আগে যে যার খুরমা- খেজুর কোন একটি গোপন জায়গায় রেখে আসবে যাতে কেউ না দেখে । বুঝতে পেরেছ?

– জ্বী জনাব! বালকদের সমস্বরে জবাবের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো সেদিনের ক্লাস ।

পরেরদিন সকালের কথা । শিক্ষক সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন সবাই নিজ নিজ খুরমা লুকিয়ে এসেছে কি না । সবাই লুকিয়ে এসেছে– শুধু একটি ছেলে ছাড়া । শিক্ষক জানতে চাইলেন,

– তোমার সব বন্ধুরা যেখানে লুকিয়ে রেখে আসতে পেরেছে, তুমি কেন পারলে না খোকা? বালকের ধীর-স্থির উত্তর,

– জনাব, আপনি এমন একটি গোপন জায়গায় খুরমা লুকাতে বলেছেন যাতে কেউ না দেখে । আমার সেরকমের কোন

জায়গা নেই । কিঞ্চিত বিস্ময়ের আওয়াজ উঠলো ক্লাসে!

বালক বলে চলল– “আমি সকাল পর্যন্ত বিছানার নিচে, উঠোনের গর্তে, মায়ের তোষকের কোনা সহ অনেক জায়গায় আমার খুরমা লুকানোর চেষ্টা করেছি । কিন্তু এমন কোন জায়গা খুঁজে পাইনি যেখানে লুকালে আমার সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় দেখতে পাবেন না । সবকিছুই যে তাঁর সামনে দৃশ্যমান!”

বৃদ্ধ শিক্ষক ছোট বালকটির অসামান্য জ্ঞান ও চিন্তার ধরন দেখে মুগ্ধ হলেন । আনন্দের পানি চোখে নিয়ে ছেলেটিকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরলেন তিনি । তিনি বুঝতে পারলেন, এই ছেলের শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীর মানুষ তাঁকে মনে রাখবে চিরদিন ।

সেদিনের সেই ছোট ছেলেটি তার শিক্ষককের কথা সত্যি প্রমান করেছিলেন ।

ছেলেটির নাম ছিল আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস।

সারা পৃথিবী তাঁকে “ইমাম শাফেঈ’য়ী (রহঃ)” নামে জানে!