গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
কিন্তু কেবল নাইটিঙ্গেলই ছেলেটার ব্যথা বুঝতে পারলো। ওকগাছের ডালে চুপচাপ বসে ভালবাসার রহস্য নিয়ে ভাবতে লাগলো সে।
হঠাৎ বাদামি ডানা দুটো মেলে উড়াল দিলো সে বাতাসে, ছায়ার মত পেরোলো পুরোটা বাগান।
ঘাসের বিছানার ওপর সুন্দর একটা গোলাপ গাছ দেখে সেদিকে উড়ে গেলো নাইটিঙ্গেল। এসে বসলো একটা ডালের ওপর।
“একটা লাল গোলাপ দিতে পারো যদি, তবে আমার সবচেয়ে মিষ্টি গানটা শোনাবো আজ তোমাকে,” ডেকে বললো নাইটিঙ্গেল।
কিন্তু মাথা নাড়লো গোলাপ গাছ।
“আমার গোলাপেরা সাদা,” উত্তর দিলো সে; “সাগরের ফেনার মতন, আর পাহাড়ের চুড়োয় জমে থাকা বরফের চেয়েও বেশি সাদা। তবে পুরনো সূর্যঘড়িটাকে জড়িয়ে উঠেছে আমার যে ভাই, ওর কাছে যেতে পারো; তুমি যা চাইছো তা হয়তো পাবে।”
শুনে নাইটিঙ্গেল উড়াল দিলো সূর্যঘড়ি পেঁচিয়ে উঠেছে যে গোলাপগাছ, সে দিকে।
“একটা লাল গোলাপ দিতে পারো যদি, তবে আমার সবচেয়ে মিষ্টি গানটা শোনাবো আজ তোমাকে,” গোলাপগাছকে ডেকে বললো নাইটিঙ্গেল।
কিন্তু মাথা নাড়লো গোলাপ গাছ।
“আমার গোলাপেরা হলদে,” উত্তর দিলো সে; “পীতরঙা সিংহাসনে বসে থাকা মৎসকন্যার চুলের মতন, আর ঘাস কাটার লোকেরা কাস্তে নিয়ে আসার আগে মাঠে ফুটে থাকা ড্যাফোডিলের চেয়েও বেশি হলদে। তবে ছেলেটার জানালার নিচে আছে আমার যে ভাই, ওর কাছে যেতে পারো; তুমি যা চাইছো তা হয়তো পাবে।”
শুনে নাইটিঙ্গেল উড়াল দিলো ছেলেটার জানালার নিচে যে গোলাপগাছ, সে দিকে।
“একটা লাল গোলাপ দিতে পারো যদি, তবে আমার সবচেয়ে মিষ্টি গানটা শোনাবো আজ তোমাকে,” গোলাপগাছকে ডেকে বললো নাইটিঙ্গেল।
কিন্তু মাথা নাড়লো গোলাপ গাছ।
“আমার গোলাপেরা লাল,” উত্তর দিলো সে; “ঘুঘুর পায়ের মতন, আর সাগরতলের গুহার ঢেউ খেলে যাওয়া প্রবালের চেয়েও লাল। কিন্তু শীত এসে আমার শিরাগুলোকে জমিয়ে ফেলেছে, বরফে নষ্ট হয়ে গেছে আমার অঙ্কুরগুলো, আর ঝড়ে ডাল গেছে ভেঙে। এ বছর আমি আর কোন গোলাপ ফোটাতে পারবো না।”
“একটামাত্র লাল গোলাপ চাই আমার,” মিনতি করলো নাইটিঙ্গেল, “মাত্র একটা! আমার পাওয়ার কি কোনই উপায় নেই?”
“একটা উপায় আছে,” গোলাপগাছের উত্তর, “কিন্তু সেটা এত ভয়াবহ, তোমাকে বলার মত সাহস আমার নেই।”
“বলো আমাকে,” নাইটিঙ্গেল বললো, “আমি ভয় পাই না।”
“লাল গোলাপ পেতে চাইলে তোমাকে চাঁদের আলোয় সুর দিয়ে সেটা তৈরি করে নিতে হবে, আর নিজের হৃদয়ের রক্তে রাঙাতে হবে তাকে। আমার কাঁটায় বুক পেতে দিয়ে আমাকে তোমার গান শোনাতে হবে।
সারারাত তুমি আমাকে গান শোনাবে, আমার কাঁটা তোমার হৃৎপিণ্ড ভেদ করবে আর তোমার রক্ত আমার শিরায় শিরায় বইবে, তোমার রক্ত আমার হবে”, গোলাপগাছ উত্তর দিলো।
গল্পের ৩য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।