ইমাম সাহেবের অক্ষত লাশ
মুহাদ্দিস ও বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব মরহুম মাওলানা শওকত আলী (র.)। গত মঙ্গলবারে রাতে বৃষ্টি আর পাহাড়ী ঢলে সংখ নদীর উক্ত এলাকার ভাঙ্গন দেখা দিলে কবর ভেঙ্গে মাওলানার লাশটি বেরিয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার ওলীদের মৃত্যু হয় না। তাঁরা লোক চক্ষুর অন্তরাল থেকে আড়াল হন মাত্র। বাশঁখালীর পুকুরিয়া গ্রামের মরহুম মাওলানা শওকত আলী (র.)-এর মৃত্যুর ১০ বছর পরও লাশ অক্ষত থাকার ঘটনায় এ খবরের বাস্তব প্রমাণ মিলেছে। বর্তমানে লাশটি নদীর ভাঙ্গন এলাকা থেকে তুলে আধা কিলোমিটার দূরত্বে স্থানীয় পুকুরিয়া ইউপির পাইদ্দা পুকুর পাড়ে (বর্তমানে মাদ্রাসা সংলগ্ন) জায়গায় ফের দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাশঁখালীতে ব্যাপক চাঞ্চচল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিশেষগুণের অধিকারী ব্যক্তির কবরটি জিয়ারত ও এক নজর দেখতে গত দুদিন ধরে দূর-দূরান্ত থেকে তার কবরে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানায়, বাশঁখালীর পুকুরিয়া মোখলিছিয়া মাদ্রাসার সাবেক মুহতামিম, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জিরি-ইসলামীয়া মাদ্রাসা ও জামিয়া আরাবিয়া হাইলধর বালক বালিকা মাদ্রাসা সহ অসংখ্য দ্বীনী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও শিক্ষক মাওলানা শওকত আলী (র.) আজ থেকে ১০ বছর পূর্বে ১৯৯৭ সালে ইন্তেকাল করলে স্থানীয়রা পশ্চিম পুকুরিয়াস্ত মোখলেছিয়া ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। কবরস্থানের পাশে বয়ে যাওয়া শংখ নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মাদ্রাসাটি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজনের নজরে পড়ে মাওলানা শওকত আলী (র.)-এর কাফনসহ দাফন করা অক্ষত লাশ। বিষয়টি স্থানীয় মোখলেছিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম আলহজ্জ হযরত মাওলানা ক্বারী নূর আহমাদকে জানালে তিনি মাদ্রাসার কয়েকজন আলেমকে নিয়ে বিষয়টি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। এরপর তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান নূরুল আলম সিকদারকেও বিষয়টি জানালে চেয়ারম্যান ও ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী হাজার হাজার নারী-পুরুষ লাশটি দেখতে ভীড় জমায়।
লাশ দাফন করার পর মাওলানা নূর মোহাম্মাদ ও প্রতক্ষ্যদর্শী আলেমরা জানান, দীর্ঘ ১০ বছর পরও লাশের কাফনে কোন দাগ লাগেনি এবং পুরা লাশটি ছিল অক্ষত। এ ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং দূর দূরান্ত থেকে লোকজন এসে তার নতুন কবর জিয়ারত করে ও খতমে কোরআন পড়ে দোয়া করেছে।
এ ব্যাপারে পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল আমিন শিকদার জানান, লাশটি দেখার পর স্থানীয় লোকজনের মধ্যে নতুন করে উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। তিনি এ ঘটনা মাওলানা শওকত আলী (র.) যে আল্লাহ তায়ালার খাঁটি অলি ও ইসলাম সত্য ধর্ম তার প্রমাণ মিলেয়েছে বলে জানান।
সূত্রঃ চোখে দেখা কবরের আযাব