পৃথিবীর একটি বহুল প্রচলিত প্রশ্ন হচ্ছে- ভূত কি আছে?
এই লেখাটি না পড়েই তুমি উত্তর দিতে পারো, ভূত নেই।
তোমার সাথে আমিও বলবো ভূত নেই। তবে ভূতের ভয় আছে।
এটি একটি রহস্যময় প্রশ্ন এবং রহস্যময় উত্তর। যে জিনিস নেই তাকে আবার ভয় কি? কিন্তু ভূতের বেলায় এসব মানায় না। ভূত নেই কিন্তু ভূতের ভয় আছে। তাহলে একটা গল্প বলি। সত্যি গল্প।
Voot44.jpg ১৯৫৯ সাল। ম্যাবল চিনারি নামে এক ভদ্রমহিলার মা মারা গিয়েছেন কদিন আগে। মায়ের কবর দেখে আবার গাড়িতে উঠবেন। গাড়িতে অপেক্ষা করছেন তার স্বামী। গাড়িতে ওঠার ঠিক আগে স্বামীর ছবি তুললেন। কিন্তু ছবি তোলার পর দেখা গেল গাড়ির পেছনের সিটে বসে আছে তার মা। ক’দিন আগে যে মা মারা গিয়েছেন, একটু আগেই এই মায়ের কবর দেখে এসেছেন। তাহলে গাড়ির পিছনের আসনে কে বসা? মরা মা নিশ্চয়ই কবর থেকে উঠে এসে গাড়িতে বসেননি? এবং এটা সম্ভব নয়। তাহলে কে সে? এই প্রশ্নের উত্তর আজো পাওয়া যায়নি। এবং কখনো পাওয়া যাবে না। যদি তুমি ভূতে বিশ্বাস করো তাহলে এর জবাব একটাই-গাড়ির পিছনের আসনে একটি ভূত বসা। আর যদি ভূতে বিশ্বাস না করো তাহলে এর কোনো জবাব নেই। এবং এর জবাব কোনোদিনই মিলবে না।
এবার আরেকটি গল্প বলা যাক।
এস এস ওয়াটারটাউন নামে একটি তেলবাহী জাহাজে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনা ঘটল। দুজন শ্রমিক ওই খালি কার্গো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ করছিল। এমন খালি তেলবাহী কার্গোতে গ্যাস জমে যায়। এবং ঘটনা সেটাই ঘটেছিল। ওই বিষাক্ত গ্যাসেই মারা যায় দুই শ্রমিক। জাহাজটি তখন ছিল পানামা খালে। জাহাজের লোকজন ওই দুই শ্রমিককে সাগরে ফেলে দেয়। এটা ১৯২৪ সালের ৪ ডিসেম্বরের ঘটনা। কিন্তু পরদিন সকালে সমুদ্রে ওই দুই শ্রমিকের মুখ ভেসে ওঠে সাগরে। জাহাজের অনেকেই তাদের ওই ভেসে ওঠা চেহারা দেখেছিল। জাহাজ নিউ অরলিন্সে পৌঁছানোর পর জাহাজের ক্যাপ্টেন এই দুর্ঘটনার কথা জাহাজ কোম্পানিকে জানান। কিন্তু এরপর যখন জাহাজটি তার পরবর্তী যাত্রা শুরু করল, তখনও সাগরের বুকে ওই দুই শ্রমিকের মুখ ভেসে উঠল। জাহাজের ক্যাপ্টেন ট্র্যাসি ওই ছবি তুলে রাখলেন। একটা দুটো নয়, ছয়টা ছবি তুলে রেখেছিলেন। তারপর ক্যামেরাটা জাহাজের একটা নিরাপদ জায়গায় তালা মেরে রেখে দিলেন। ওই ফটোগ্রাফ থেকেই জানা গিয়েছিল দুই শ্রমিকের নাম। তারা হলেন জেমস কার্টনি এবং মাইকেল মিহান। জাহাজ কোম্পানিও কিন’ ভড়কে গিয়েছিল এমন ফটোগ্রাফ দেখে। তারা কোনোভাবেই ভেবে পেল না দুজন মৃত মানুষ কেমন করে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে জাহাজের সাথে সাথে আসে।
পরবর্তী যাত্রায় জাহাজের পুরো নাবিকদের বদলে ফেলা হলো। তারপর থেকে আর তাদের দেখা যায়নি। তাহলে কি জাহাজের আগের নাবিকরা ভুল কিছু দেখেছিলেন? যদি উত্তর হয় হ্যাঁ, তাহলে জাহাজের ক্যাপ্টেন তাদের ছবি তুলেছিলেন কীভাবে? এর কিন্তু কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। কেবল একটি উত্তরই হতে পারে, মৃত দুই শ্রমিকের ভূতই বার বার ফিরে এসেছিল জাহাজের কাছে। তাদের কি কোনো আকুতি ছিল? হতে পারে। কারণ ভূত বিশেষজ্ঞরা এমনই মনে করে থাকেন। অতৃপ্ত কোনো আত্মাই নাকি বার বার ফিরে আসে। এবং এই আত্মাকেই আমরা জানি ভূত বলে।