আশ্চর্য ভূতের গল্প

তখন আমার বয়স দশ বছর। আমি বরাবর একটু ঘরকুনো টাইপের। আমার ছোটো চাচা ছিলো আমার সর্বক্ষণের সঙ্গী। সে ছিলো খুব সাহসী আর বেপরোয়া। আর তার উপর গ্রামে থাকে। কিছুই ভয় পেতোনা সে। তো এবার আসল ঘটনায় আসা যাক। ভাদ্র মাস, তাল পাকার মাস। তো একদিন রাত ৪ টায় সে গেল তাল টোকাতে। কিন্তু সেদিন কপালে তাল ছিলো না, কেউ তার আগে তা নিয়ে গেছে। ভীষণ রাগে গজগজ করতে করতে সে বাড়ির দিকে রওনা দিল। তালগাছটা ছিলো একটা মন্দিরের পাশে। আর তার চারদিকে ছিলো ঘন জঙ্গল। তো যখন সে রওনা দিল হঠাৎ জঙ্গলের ভেতর থেকে কেউ একজন পরপর তিনবার তার নাম ধরে ডাকলো। যেহেতু সে প্রচণ্ড সাহসী, সে সাড়া না দিয়ে বাড়ি চলে এলো। কিন্তু তারপর থেকে তার মনে
হয় কেউ তার উপর সবসময় নজর রাখছে।।। সে আমায় সব বলে। আর বলে আমি যেন তা কাউকে না বলি। তো আমি তাই করলাম।
জানুয়ারি ২০০৮। রাত ১২ টা বাজে। বাড়িতে মেহমান তাই। সে বাথরুম এ গেছে। তো বাথরুম সেরে সে বাইরে এলো। হঠাৎ লাইটের আবছা আলোয় সে দেখলো একটি মানুষের মতো অবয়ব তার সামনে দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে চলে গেল। যেহেতু গভীর রাত, সে ভাবলো হয়তো চোর এসেছে। তাই কাকু তার পিছু নিলো। আমাদের বাড়িতে চারটে ঘর। আমাদের ঘর দক্ষিণ মুখো। ঘরের ঠিক সামনেই বড় পুকুর। পুকুরের পাশেই বাথরুম। চারপাশে জঙ্গল। পরে মাঠ। তো কাকু লোকটার পিছু নিয়ে ঐ মাঠ পর্যন্ত গেলো। কিন্তু লোকটাকে আর কোথাও দেখা গেল না। কাকা যেই বাড়িমুখো হয়েছে হঠাৎ সে শুনলো জঙ্গলের ভেতর কে জেন কাশছে। এবার সে একটু ঘাবড়ে গেল। সে
এবার ঐ কাশির শব্দ অনুসরণ করে জঙ্গলের ভেতরে প্রবেশ করলো। সে শব্দ উৎসের কাছে যেতেই কে জেন তার গায়ে থু থু ছিটিয়ে দিলো এবং ভয়ঙ্করভাবে হাসতে লাগলো। কাকু আর নিজেকে সামলাতে পারলো না, দৌড় দিলো এবং দরজার কাছে এসে জ্ঞান হারালো। আমরা ছুটে গিয়ে দেখি কাকু অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। তার সারা দেহে থু থু এর মতো কি জেন লেগে আছে। তাকে পরিষ্কার করে ঘরে নিয়ে আসা হয়। দুদিন পর তার জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফিরলে সে সবাইকে ঘটনাটা খুলে বললো। কিন্তু আর কিছু করা সম্ভব হলো না। কয়েক দিনের মধ্যে তার সারা গায়ে পচন ধরে এবং ১৫ দিন পর সে মারা যায়। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা এখনো রাত ১২-১.০০ টা পর্যন্ত কাকুর কবরের ওপর
যেন কে কাদে। আর প্রতি পূর্ণিমারাতে জঙ্গলের ঐ জায়গা থেকে বীভৎস চিৎকারের আওয়াজ পাওয়া যায়। আমরা কেউ রাত ১০.০০ টার পরে বাইরে বেরোই না। কাকুর কথা আজো খুব মনে পরে। আর
মনে পরে ঐ ভয়ঙ্কর রাতের কথা। কাকুর মৃত্যু আজও আমাদের কাছে রহস্য। আরো অবাক লাগে একবার থু থু দিলে কিভাবে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ পুরোপুরি ভিজে যায়!!!!

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!