আশ্চর্য ও ভয়ংকর নরমুণ্ডু গুহা !

দৈত্য-দানবের গল্প আমরা প্রায় পড়ে থাকি। বড় বড় মুখ আর বিশাল দেহের অধিকারী দৈত্যের কথা শুনলে আমরা ভয়ে আঁতকে উঠি। তবে সামনে থেকে দৈত্য দেখেছে এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। সামনে থেকে দৈত্য না দেখা গেলেও বিশাল নরমুণ্ডু দেখে ভয়ে আঁতকে উঠেছেন স্বয়ং বিজ্ঞানীরা। এখন প্রশ্ন কোথা থেকে এলো এই নরমুণ্ডু এবং কোথায় থেকে বিজ্ঞানীরা দেখলো বিশাল নরমুণ্ডুকে। বিশাল নরমুণ্ডু দেখতে হলে অবশ্যই বিশাল দেহের অধিকারী মানুষকে দেখতে হবে প্রথমে। না, বিশাল দেহের অধিকারী কোনও মানুষকে খুঁজে পাওয়া যায়নি পৃথিবীতে। তবে খুঁজে পাওয়া গেছে বিশাল একটি নরমুণ্ডু। আর এই নরমুণ্ডুটি কোনও মানুষের নয় বরং এটি একটি গুহা।
এটা এমন একটি গুহা যে গুহাটি দেখতে একেবারেই মানুষের মাথার মতো। রহস্যময়, অশুভ ও প্রাণসংহারী হিসেবে পরিচিতি এই  গুহাটি যুক্তরাজ্যের ‘হডজ ক্লোজ কুইয়ারি’ পার্বত্য গুহা। রহস্যাবৃত এই গুহাকে ঘিরে মানুষের মনে নানা প্রশ্ন উকি দিচ্ছে। কি আছে আসলে এই গুহাটিতে? অনুসন্ধানে জানা গেছে, রহস্যাবৃত এই গুহাটি আসলে জলমগ্ন। এর অবস্থান যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিয়া অঞ্চলের কোনিস্টন প্রশাসনিক এলাকার দুর্গম পর্বতে। এই গুহাটি দেখতে শশ্রু-গোঁফ মণ্ডিত একজন মানুষের মুণ্ডুর মতো। ভাল ভাবে দেখলে দেখা যায় গুহাটির রয়েছে মানুষের মতো নাক, মুখ, চোখ, দাড়ি ও গোঁফ। আর ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে এই গুহাটি খুবই রহস্যাবৃত ও ভয়ংকর। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানীরা ভয়ংকর এই রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করেছেন। গুহার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পানিতে নেমে প্রাণ হারিয়েছেন অনেক ডুবুরি। তারপরও থেমে নেই তাদের উৎসুকতা।
তারপরও কোনও ভয়কে তোয়াক্কা না করে একজন দুঃসাহসী ফটোগ্রাফার এবং ডুবুরি গিয়েছিলেন নরমুণ্ডু গুহার ছবি তুলতে এবং তিনি সফলও হয়েছেন। অনেক বিপদের মুখে পড়েও কোনোভাবেই পেছনে সরে আসেনি বরং ছবি তুলেই ক্ষান্ত হয়েছেন এই ফটোগ্রাফার। তারপর নিজের তোলা ছবি দেখে নিজেই আঁতকে উঠেছেন। কী ভয়ংকর এই গুহাটি! তিনি দেখেছেন গুহাটি কলজে কাঁপানো একেবারে অলক্ষুণে নরমুণ্ডুর মতো। বুক কেঁপে উঠা দৈত্য-দানব এবং রাক্ষস- খোক্ষস বলে পরিচিত ভয়ংকর কিছুর মতো দেখতে এই গুহাটি। যুক্তরাজ্যের কোনিস্টন এলাকার হডজ ক্লোজ কুইয়ারি পার্বত্য গুহা এলাকাটি পানির নিচে অবস্থিত। এখানের পানি বরফের মতো ঠাণ্ডা এবং সেখানের তাপমাত্রা মাত্র ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই গুহার দৈর্ঘ্য ২৫ মিটার এবং গোলাকৃতি গহ্বরের আয়তন দুই বর্গমিটার। পানি ভর্তি এই গুহাটি ডুবুরিদের কাছে খুব আদর্শ স্থান। প্রতি বছরই এখানে দুঃসাহসী ডুবুরিরা নামেন প্রকৃতির অপার রহস্য উদঘাটনের জন্য। এ গুহায় অভিযানে নেমে গত বছর ৩ ডুবুরি মারা গেছেন। ডুবুরিদের মাঝে-মধ্যেই মৃত্যু হয়। এ জন্য এই এলাকাটি সবার কাছে ভুতুড়ে ও অলক্ষুণে স্থান হিসেবে পরিচিত। এই স্থানের সতর্কতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, যেসব ডুবুরির প্রশিক্ষণ উঁচুমানের নয়, তারা যেন শখের বসে এ গুহায় না নামেন। কারণ প্রশিক্ষণ দুর্বল এবং অভিজ্ঞতার অভাবে গত বছর এখানে নেমে ৩ ডুবুরি অকালে প্রাণ হারিয়েছেন।
এমনও জনশ্রুতি চালু আছে, ২০০৫ সালের দিকে এক ডুবুরি এই গুহার নিচ দেখতে পানির নিচে যাচ্ছিলেন, তিনি যখন পানির নিচে নামছিলেন তখন নিচে তাকিয়ে হঠাৎ একটি বিরাটকায় মানুষের মাথা দেখে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান হারানো ওই ডুবুরিকে গুহার থেকে পাড়ে তুলে নিয়ে আসেন কোনিস্টন মাউনন্টেইন রেসকিউ টিমের সদস্যরা। জ্ঞান ফেরার পর সেই ডুবুরী জানান, তিনি পানির নিচে দৈত্য দেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি এই নরমুণ্ডু গুহাকে দেখেছিলেন। এই গুহার ফটোগ্রাফার পিটার বার্ডস্লে বলেছেন, তিনি ৯০ ডিগ্রি এংগেলে ক্যামেরা তাক করে গুহাটির ছবি তুলেছেন। তিনি আরও জানান তিনি গুহাটির ছবি তোলা বা পরে ছবিটি নিয়ে কোনও কারসাজি করেন নি।

ঈশ্বর যখন পৃথিবীতে

ক্রোধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *