আল্লাহ পাক শহীদদেরকে জিন্দা রেখেছেন
ইবনে আসাকের ওমায়ের ইবনে হাব্বাব সোলামী (রা.) হতে বর্ণনা করেন, ওমায়ের (রা.) বলেন, বনী উমাইয়া যুদ্ধের সময় আমাদের নয়জন লোককে রোমের বাদশাহর নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। বাদশা সকলেরই শিরোচ্ছেদ করতে আদেশ দিলেন। আট জনকে হত্যা করার পর নবম ব্যক্তির সময় আমার পালা এলো। এ সময় একজন সুবেদার বাদশার মস্তক ও পদচুম্বন করে আরয করলো, এই ব্যক্তিকে আমায় দান করুন। বাদশা আমাকে তার হাতে ছেড়ে দিলেন। সে আমাকে তার গৃহে নিয়ে গেল। তার এক পরমা সুন্দরী কন্যা ছিল। তাঁকে ডেকে এনে আমাকে বলল, তুমি জান, বাদশাহের দরবারে আমার মর্যাদা কত বড়? যদি তুমি আমার ধর্ম গ্রহণ কর, তবে আমার এই কন্যাকে তোমার সাথে বিবাহ দিব এবং আমার যাবতীয় ধনসম্পত্তি তোমাকে দান করবো। আমি বললাম, নারীর লোভে আমার ধর্ম পরিবর্তন করবো না অথবা ধন সম্পদের লোভে ও আমার ধর্ম ত্যাগ করতে পারবো না।
দিন যেতে লাগলো, সে প্রত্যেহ আমাকে বুঝাতে লাগলো। একদিন কন্যা আমাকে তার বাগানে নিয়ে গিয়ে বলল, কেন তুমি আমার পিতার কথা শুনছো না? আমি বললাম, স্ত্রী ও অর্থের বিনিময়ে স্বীয় ধর্ম কখনই পরিত্যাগ করতে পারি না আমি। সেই রমনী বলল, তুমি এখানে থাকা পছন্দ কর, নাকি, নিজ শহরে যেতে ইচ্ছা কর? আমি বললাম, নিজ শহরে যেতে পছন্দ করি।
আমার শহর এখান হতে অনেক দিনের পথ ছিল। সে আমাকে বললো, আকাশের ঐ নক্ষত্র ঠিক রেখে যেতে থাকবে। ভোর হলে কোন এক স্থানে লুকিয়ে থাকো, রাত্রি হলে পুনরায় যাত্রা করো। এরূপে তুমি নিজ শহরে পৌঁছতে পারবে।
আমি এখান হতে রওয়ানা হলাম। সমস্ত রাত্রি পথ চলে এক স্থানে লুকিয়ে থাকতাম, চতুর্থ দিন এক স্থানে লুকিয়ে আছি, এমন সময় দেখলাম, কয়েকজন অশ্বারোহী আগমন করছে। আমার ভয় হল, হয়তো শত্রু আমার সন্ধানে এসে এখানে পৌঁছেছে। তাঁরা অধিক নিকটবর্তী হলে দেখলাম, তাঁরা ঐ সকল সাথী যাদেরকে রোমের বাদশা হত্যা করেছিল। তাদের সাথে আরো কয়েকজন শ্বেত অশ্বের আরোহী ছিল। তাঁরা আমাকে ডেকে বলল, কে, ওমায়ের নাকি? আমি বললাম, হ্যাঁ, আমি ওমায়ের। আমি বললাম, তোমাদেরকে তো হত্যা করা হয়েছিল। পুনরায় কি করে এলে? তাঁরা বললো, আমাদেরকে হত্যা কয়া হয়েছিল ঠিক কিন্তু শহীদ মৃত নয়।