আরিয়ানা–১ম পর্ব

গল্পের ২য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

গল্পটার শুরু আজ থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর আগের এক সভ্যতাকে ঘিরে ।  সভ্যতার নাম ছিল  মিনোয়ান । মিনোয়ান  ব্রোঞ্চ যুগের এক অতুলনীয় সভ্যতা যা টিকে ছিল খ্রিস্ট পূর্ব ২৭ থেকে ১৫ শতক পর্যন্ত । প্রাচীন গ্রিসের মুল ভূমি থেকে দক্ষিনে ভু মধ্যসাগরের এক ছোট্ট ছবির মত সুন্দর দ্বীপ ছিল ক্রিট ।  ক্রিটের  সভ্যতাই মিনোয়ান নামে সুপরিচিত ।  সেই সময়ের ক্রিটের যে  রাজা ছিলেন তার  নাম মিনোস । মিনোস ছিলেন দেবতা জিউস এবং দেবী ইউরোপার সন্তান ।  আর সব রাজার মতো এই রাজার ও ছিল অপূর্ব সুন্দর এক রানী , রানীর নাম পাসিফা । রাজা রানীর কোল আলো করে এসেছিল অপূর্ব সুন্দরী দুই রাজকুমারি , রাজকুমারী আরিয়ানা ( যিনি গ্রীকদের কাছে আরিয়াদানে নামে পরিচিত ) এবং রাজকুমারী ফেদ্রা । আমাদের গল্প রাজকুমারী আরিয়ানা কে নিয়ে ।

রাজকুমারি দের হেসে খেলে বেড়ানোর দিন গুলিতে হঠাত ই যেন কারো নজর লেগে গিয়েছিল । রাজকুমারি আরিয়ানা হঠাত ই হারালেন তার প্রিয় ভাই এন্দ্রোজিয়াস কে ।

এন্দ্রোজিয়াস এথেন্স এ মারা যান , ক্ষিপ্ত হয়ে রাজা মিনোস আক্রমণ করেন এথেন্স । যুদ্ধের এক পর্যায়ে এথেন্স এর রাজার সাথে রাজা মিণস এর সন্ধি চুক্তি হয় । চুক্তি অনুযায়ী এথেন্স প্রতি ৯  বছর অন্তর    সাত জন যুবক এবং সাত জন যুবতি কে পাঠাবে ক্রিট এ , রাজা মিনোস এর পোশ্য মিনেটর এর ভুরিভজের জন্য ।

মিনেটর ছিল রাজা মিনোস এর পোষা এক দানব যার দেহের উপরের অর্ধেকটা ষাঁড়ের মতো আর বাকি অর্ধেকটা মানুষের মত । অনেকের মতে  এই মিনেটর আসলে রাজা মিনোস এর ই সন্তান ।

রাজ্য বাঁচাতে এথেন্স এর রাজা প্রতি ৯বছর অন্তর সাত জন যুবক যুবতী কে পাঠান ক্রিট এ , মিনেটর এর খাদ্য হতে । এভাবেই চলেছিল বেশ কিছু বছর ।   একবার এথেন্স এর রাজা পড়লেন মহাবিপাকে । তার অবশ্য কারন ও  ছিল ।  এথেন্স থেকে লোকজন তাদের যুবক বয়সী ছেলে মেয়েদের নিয়ে পালাতে শুরু করে ওই নিয়ম চালু হবার পরপরই  ।

কেই বা চায় নিজের সন্তান কে হারাতে ? কিন্তু বছর বছর ক্রিট রাজ্যে যুবক যুবতীদের না পাঠালে রাজা মিনোস খেপে গিয়ে যদি এথেন্স আক্রমন করে , তা হবে আরো  ভয়ানক ব্যাপার ।  এদিকে রাজ্যে যুবকের সংখ্যা অতি নগন্য ।

উজির খবর দিয়েছে সব মিলিয়ে মাত্র ৬ জন   যুবক যোগাড়  হয়েছে ।  দিন যত  এগোতে থাকে , এথেন্স রাজার  ঘুম ততোই হারাম হতে থাকে । বাবার অবস্থা দেখে অবশেষে এগিয়ে আসে রাজপুত্র স্বয়ং । আমাদের এই রাজপুত্রের নাম থেসিউস । থেসিউস ছিলেন  যোগ্য রাজপুত্র । পিতার সমস্ত নিষেধ অমান্য করে তিনি ক্রিটের উদ্দ্যেশে সমুদ্র যাত্রা শুরু করেন । অশ্রুসজল চোখে এক হতভাগ্য পিতা বিদায় দেন তার পুত্র কে ।

বিশাল জাহাজে কালো পাল তুলে  রওনা হয়ে যান রাজপুত্র থেসিউস , সাথে সাত জন মেয়ে আর ছয়টি ছেলে সহ ।  কিন্তু তার আগে পিতা কে কথা দিতে হয় যদি বেঁচে ফিরেন তো জাহাজে কালো এর  বদলে তুলতে  হবে সাদা পাল ।  তাই দেখে রাজা নিশ্চিন্ত হবেন , জানবেন ফিরে  এসেছে তার ছেলে ।

সমুদ্র পথে রওনা হয়ে গেলেন থেসিউস , জাহাজ যখন ক্রিটের তীরবর্তী আমাদের মূল গল্প আসলে সেখান থেকেই শুরু ।

 

গল্পের ২য় অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

দুঃখিত!