গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আমেরিকা থেকে পিএইচডি ডিগ্রী প্রাপ্ত একজন সাইকোলজিক্যাল ডাক্তার। নিজের চেম্বারে বসে আসেন। চোখে মুখে অসস্তির গাঢ় ছাপ। আসলে মাঝে মাঝে এই লাইনের ডাক্তাররা দির্ঘদিন মানসিক রোগি দেখতে দেখতে এক সময় নিজেরাই একটু আধটু, কম বেশি মানসিক অস্তিরতায় ভোগেন। আর এটা তাদের কোন ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপারটা আজ তার বড় মেয়ের জন্মদিন। বড় মেয়েটা হয়েছে মায়ের মতন। প্রচন্ড জেদি আর একরোখা। বেলা ১:০০ টার আগেই যেতে হবে। আবার এদিকে হয়েছে রোগীদের নিয়ে ঝামেলা। একজন রোগী জরুরী তাকে দেখবার কথা আজ। রোগীটা গ্রামের। ডাঃ জামিলে ধারণা গ্রামের লোক খুব নরম আর লাজুক প্রকৃতির হয়। কিন্তু এ লোক তার ধারণার উল্টো। মানসিক রোগীদের আচরন গ্রাম আর শহর আলাদা নয়। ডাক্তার অবশ্য রোগীটাকে এখনো দেখেননি রোগীর সাথে যে মানুষ এসেছেন কেবল তার সাথেই কথা হয়েছে।
যাই হোক ডাক্তার এবার রোগীটা দেখার জন্য প্রস্তুত। রোগী এবং তার সাথে থাকা দুজনই ঢুকলেন ডাক্তারের রুমে। ডাক্তার জামিল তো অবাক একজন বাঙ্গালি মেয়ে যে এতো লম্বা হয় তিনি আগে কখনো ভাবেননি আজ তাই দেখছেন। আনুমানিক ৬ফুট ২ইঞ্চি। সারা শরীর বোরকায় আবৃত। হঠাৎ ডাক্তারের চিন্তা ভঙ্গ করে রোগীর খালাতো ভাই বলল,
ডাক্তার সাহেব বসতে পারি..
অবশ্যই, তা আপনার রোগির নামটা জানতে পারি?
ডাক্তার সাহেব বেয়াদবি নিবেন না, রোগীটা আমার নয় আপনার।
ডাক্তার সাহেবের গ্রামের লোকদের নিয়ে নতুন একটা ধারনা জন্মালো। আসলে গ্রামের লোকদের স্বভাব কথায় কথায় ভুল ধরা।
আচ্ছা, ঠিক আছে রোগী আমার।এখন রোগির নামটা বলুন।
আমার নাম আব্দুল কুদ্দুস আর আপনার রোগীর নাম মোঃ মতিন মিয়া।
এবার কিন্তু ডাক্তার সাহেবের চিন্তা ভাবনা কিছুক্ষণের জন্যে তালগোল পাকিয়ে গেল। একজন মহিলা সদৃশ্য বোরকা পরিহিত পুরুষ মানসিক রোগীকে আগে কখনো বোরখা পড়তে দেখেননি। ব্যাপারটা বেশ রহস্যময় কিন্তু তার চেয়ে বেশি হাস্যকর।কুদ্দুস ডাক্তারের চিন্তা ভঙ্গ করলেন। ডাক্তার সাহেব কিছু ভাবছেন?
না, না, ঠিক আছে রোগীর সমস্যা বলুন।
এবার বোরখা পরিহিত লোকটা মুখ খুলল, ডাক্তার সমস্যা যখন আমার আর যেহেতু অতি গোপনীয় এজন্য আমি বলতে চাইছি কি আমার সাথে যে এসেছে মানে কুদ্দুস এখানে না থাকাটাই ভালো।
তুমি তাকে বাহিরে যেতে বলো,
ঐ কুদ্দুইছা এইহানতন যা গা…
এর পর মতিন মিঞা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে ধরা গলায় বললো, ডাক্তার সাব মাফ কইরা দিয়েন। অযথা একটা বেয়াদবি করলাম।
ডাক্তার কিছু না বলে ইশারায় কুদ্দুস আলীকে বাইরে যেতে বললেন। এরপর কোন সুযোগ না দিয়ে মতিন মিঞাকে বলেন,
এবার দয়া করে আপনার সমস্যাটা বলুন তো।
ডাক্তার সাহেবের কথা শেষ করতেই মতিন মিঞা চট করে গায়ের বোরকা খুলে ফেললো। ডাক্তারের নিকট আরো স্পষ্ট হলো বিশেষ করে তার চেহারাটা মুখটা গোলগাল ফর্সা, বয়স আনুমানিক ৩০ বৎসর, লম্বা চুল, মুখে খোচা খোচা দাড়ি সারা শরীর আর চোখে মুখে বিধ্বস্থতার লক্ষণ। চোখ দুটো রক্ত জবার মতো লাল আর চারিদিকে সর্তকিত চাহনি।
ডাক্তার সাহেব আমার সমস্যা মনে হয় সকলের চেয়ে আলাদা।
সেটা তো অবশ্যই। সকলের সমস্যা তো আর এক হতে পারে না। আর সেটা সম্ভবও না।
তো এখন?
ঠিক আছে ডাক্তার সাব আর বাজে সময় নষ্ট করবো না । আমার কাহিনীটা শুরু করি। আমার বাড়ী হল ফরিদপুরে। গ্রামের নাম সোনাদীঘি। আমার আব্বাজান গ্রামের মাতববর। আমি ৫ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়। তখন আমার বয়স আঠের। ঘটনাটা ঘটেছে আমার ছোট চাচার কারণে । ছোট চাচার চেহারা খুবই কুৎসিত ছিল। গ্রামের লোকেরা চাচারে খুব ডরাইতো। চাচা সব সময় বাড়ীতে থাকতো না। বাড়ীতে ফিরলে ভোর রাইতে ফিরতো। খাওন দাওন করতো না। একদিন আমাগো পাশের বাড়ীর সলিম চাচা জ্বরে কাপতে কাপতে আইয়া আব্বাজানরে কইলেন,
গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।