সেদিন আমি নিশ্চুপ মনে ছাদে বসে আছি।আমাদের বাসাটি তিনতলা।
ছাদে এখন প্রায় আমি বসে থাকি একা।আকাশে চাদ দেখি আর চাদের
সাথে কথা বলি। আসলে মিমের সাথে রিলেশন ব্রেকাপ হওয়ার পর থেকে
এখন একা থাকতেই পছন্দ করি। কি ভেবে জানি পকেট থেকে সিগারেটের
প্যাকেট বাহির করলাম,একটি দেশলাই কাঠি দিয়ে জ্বালাতে যাবো।
ওমনি আকাশের দিকে লক্ষ করলাম। সাদা কি জানি।।
নাহ আমি জ্বিন ভূত
বিশ্বাস করি না।তবে সাদা ঐ টা কি।। কিছুটা রকেটের মত।।দূর ছাই এটা কি
বলছি, এটা তো অন্য কিছু। আর আমাদের তিন কাঠা বাড়ির ছাদে
হ্যালিকাপ্টারি নামতে পারবেনা।আর এই স্পেসশিপ। ওমা কিরে বাপ এটা
এখানেই মানে আমাদের বাড়ির নিচেই নামছে।নাহ আমি রহস্যপ্রিয় ,
দেখি কি হয়।হে একদম কোন শব্দ ছাড়াই নিঃশব্দে আমাদের বাসার ছাদের
ঠিক দুহাত উপরে স্পেইসশিপ টা ল্যান্ড করলো।আমি ভয়ে উঠতে যাবো, ঠিক
এ মুহূর্ত বেশি লম্বা না তিন ফুটের একটা প্রানী নেমে আসলো।দেখতে
মাথাটা গিনিপিগের মত কিন্ত সাদা পুরাই গিনিপিগের মত।হাত পা সব
আছে। আমি ভয়ে পালাতে যাবো।এই মুহূর্তে সেই প্রানী আমাকে ইংগিত
করলো। ভয় পেলাম অনেক। বুঝলাম সে আমায় পালাতে মানা করছে।হাতে
জানি কি একটা ট্যাবের মত।আমি থতমত খেয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
এসে দেখি সে আমার পাশে দাড়াল।
আর কি জানি বল্ল আর মেশিন থেকে,
যাকে আমি টেব ভেবেছি তা দিয়ে কথা গুলো সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়
রূপান্তরিত হলো।।ঠিক আমার মত কথা।কথা গুলোর মানে হলো বন্ধ ভয় পেয়ো
না,আমি তোমার ক্ষতি করবোনা। আমি বুঝলাম ইহা ট্রান্সলেটর।তাও মনে
মনে ভয় পেতে লাগলাম।তাও সাহস করে বল্লাম আমাকে কেন দরকার
আপনার।।সে তার কথায় যা বল্ল আমি পুরাই অবাক।।সে বল্ল প্রায় তোমার
বাসার উপরে দিয়ে যাই,দেখি তোমার মন খারাপ করে প্রায়শই বসে
থাকো,একা কাদো, আবার একা যেন কার সাথে কথা বলো।আমি তাকে
বল্লাম না আকাশের চাঁদের সাথে কথা বলি।আমার মনে কোন দুঃখ নেই।সে
আমাকে তার হাতের দিকে তাকাতে বল্ল,দেখলাম একটা ঘড়ির মত যন্ত্র। সে
বল্ল এটা দিয়ে অতিতের ফেলে আসা সব কিছু দেখা যায়।আমি তোমার
অতিত দেখতে পাচ্ছি। কেন জানি মনে হল এমন একটা যন্ত্রই তো আমি চাই।
যা দিয়ে আমার ফেলে আসা দিন গুলো দেখবো। আর মিমের সাথে
কাটানো দিন গুলো দেখবো।।
ভাবতে ভাবতে হঠাত সেই এলিয়েন আমাকে
বল্ল বড়ই আজিব এই পৃথিবী নামক গ্রহের প্রানিরা।প্রথমে আমার যেই ভয় কাজ
করছিল মানে ঐ এলিয়ন কি আমাকে আবার তার গ্রহে নিয়ে যায় নাকি তা
এখন আর কাজ করলো না।এখন আমি নিজেই তাকে তার গ্রহ সম্পূকে জিজ্ঞাসা
করলাম।সে যা বল্ল শুনে অবাক। আমাদের গ্রহে শুধু বালি আর মরুভূমি।
তোমাদের পৃথিবীর মত কোন গাছ নেই।পৃথিবী অনেক সুন্দর কিন্ত এর মধ্য
তোমাদের এ অঞ্চল আরর সুন্দর। আমার খুব ভাল লাগে এই সবুজ
।তাই বেশিরভাগ সময় এদিক দিয়েই যাই।এবার আমি তাকে তাদের গ্রহের
অবস্থান সম্পুকে জিজ্ঞাস করলাম। এলিয়ন আমাকে বল্ল তাদের গ্রহ আমাদের
এখান হতে অনেক কোটি মাইল দূরে কিন্ত এখানে আসতে আমাদের সময়
লাগে মাত্র আধা ঘন্টা।আমাদের দেশে কোন গাছ নেই।তোমরা যেমন
অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারো না।আমরা ঠিক নাইট্টোজেন আর হিলয়াম
ছাড়া বাঁচতে পারি না।তাই আমাদের গ্রহে তোমরা যেতে পারো না।
কিন্ত পরিক্ষা মূলক ভাবে তোমাদের পৃথিবী থেকে গাছ নিয়ে
লাগিয়েছি। এবার আমি বল্লাম তোমরা খুব চালাক, আর আমাদের চেয়ে
এগিয়ে আছো। এলিয়ন আমাকে বল্ল তোমাদের পৃথিবীর মানুষ অনেক
বুদ্ধিমান।তাদের নিজস্ব বুদ্ধিমাত্তা আর ব্রেইন আছে। আর আমাদের কোন
মেমোরি নেই, সে আমাকে আলগা একটা চিপ খুলে দেখালো মাথা
থেকে।সে বল্ল এই চিপ হচ্ছে আমার মেমোরি। এজন্য আমরা কল্পনা করতে
পারি না,আর স্বপ্ন দেখি না।
আর কোন কাজ মেশিনের ফরমেট ছাড়া বুঝি
না।তোমরা খুব ভাগ্যবান। এত বড় প্রানিদের কে নিজেদের অধিনে কাজ
করাও।কিন্ত তোমাদের সমস্যা কি জানো,তোমরা এত বেশি বুদ্ধিমান তাও
আমাদের চেয়ে পিছিয়ে এর প্রধান কারন হচ্ছে তোমাদের স্বার্থপরতা।
এটা যতদিন থাকবে ততদিন তোমরা যতচাও উন্নত করতে পারবে না।।
আসি বন্ধু।।কাজ আছে আর হিলিয়ামের সিলিন্ডার প্রায় শেষ পর্যায়, যাওয়া
লাগবে।খুব ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর কারো সাথে কথা বলার।।আর এই নাও বন্ধুত্বর
নিদর্শন স্বরূপ আমাকে উপহার গুলো নেও।ঐ হাত থেকে ঘড়ির মত জিনিস টা
খুলে দিলো আর একটা পাথর এর মত কি জানি দিলো।আমি নিবো না,সে
বল্ল না নিলে কষ্ট পাবে।তাই অবশেষে তার উপহার নিলাম।এরকিছু ক্ষন পর
সে তার শিপে উঠে ফিরে গেলো।আর দুই সেকেন্ড পর পুরাই শিপ অদৃশ্য।
পরদিন সকালে আমি উক্ত ঘড়ি পরে রাস্তা দিয়ে হাটছি।
আর দেখি সব মানুষ
আমার দিকে তাকিয়ে রইছে।জানি আমি এলিয়েন।চিন্তা করেছিলাম আজ
সকালে পাথর টা নিয়ে কোন জুয়েলারির দোকানে যাবো। হে পাথর টা
নিয়ে এসেছি।ঐ যে সামনে অনেক বড় জুয়েলারি দোকান। অবশেষে
দোকানে গিয়ে প্রথমে পাথর টা দেখানোর চেস্টা করলাম।আরে এত
কাষ্টমারের ভিরে কেউ দাম দিচ্ছে না।রাগ করে বের হয়ে আসছি।
দোকানের মালিক তাচ্ছিল্যর সুরে বল্ল দেখি কি পাথর।।যখন দেখালাম তার
চক্ষু পুরাই বড় বড় হয়ে গেছে।।সে তার সাথে সাথে সব কাষ্টমার কে দোকান
হতে চলে যেতে বল্ল।।আর যা বল্ল শুনে আমার মাথা চড়াক গাছ হয়ে গেলো।
বল্ল বাবা এই পাথরের যে দাম, আমার এমন হাজার দোকান বিক্রি করলে এর
মূল্যা আমি আমি তোমাকে দিতে পারবো না।পাথর টা অনেক দুর্লভ আর
অনেক মুল্যাবান।এর দাম পরিশোধ করার মত তার কাছে এত অর্থ নেই।তবে তার
পরিচত একজন আছে,আমাকে তার কাছে নিয়ে যাবে।।এভাবে আমার সাথে
পরিচয় হয় আন্তর্জাতিক মাফিয়া চক্রের সাথে।।
—-(কাল্পনিক লেখা)
—-ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত