আমার হাতে একদিন দেখতে পাবে বাইতুল্লাহর চাবী
হযরত ওসমান বিন তালহা (রাঃ) বলেন, জাহেলিয়াতের যুগে আমরা প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার বাইতুল্লাহর দরজা খোলা রাখতাম। সপ্তাহের অন্যান্য দিনসমূহে কা’বার দরজা বন্ধ থাকত। একদিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার কতিপয় সাহাবীসহ কা’বা ঘরে প্রবেশের উদ্দেশ্যে তাশরীফ আনলেন। এ সময় আমি তার সাথে কর্কশ ভাষায় অসৌজন্যমূলক আচরণ করলাম।
কিন্তু অত্যন্ত সংযম ও ধৈর্যধারণ পূর্বক শান্ত ভাবে বললেন, ওসমান! বাইতুল্লাহর চাবী একদিন তুমি আমার হাতে দেখতে পাবে। আমি যাকে ইচ্ছা তাঁকে তা দান করব। যে কা’বার চাবী তোমার হাতে চলে যাবে? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , সেদিন কোরাইশরা আরো বেশী মর্যাদার অধিকারী হবে। অতঃপর তিনি কা’বা ঘরে প্রবেশ করলেন। ওসমান বিন তালহা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কথাগুলো আমার মনে এমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করল যে, অতঃপর আমি নিশ্চিতভাবে অনুভব করতে লাগলাম, তিনি যা বলেছেন, একদিন তা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। মক্কা বিজয়ের পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমার নিকট থেকে চাবী নেয়ালেন।
পরে আমি তার দরবারে উপস্থিত হলে সে চাবী পুনরায় তিনি আমার হাতে ফেরত দিয়ে বললেন, এ চাবী রাখ, কেয়ামত পর্যন্ত এটা তোমাদের খান্দানের হাতেই থাকবে। জালেম ও বল প্রয়োগকারী ছাড়া কেউ এটা তোমাদের হাত থেকে নেবে না। অতঃপর আমি ফিরে আসতে লাগলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পুনরায় আমাকে ডেকে বললেন, সেদিনের কথা তোমার মনে পড়ে, যেদিন আমি বলেছিলাম, কা’বার চাবী একদিন আমার হাতে আসবে এবং আমি যাকে ইচ্ছা তাঁকে তা প্রদান করব? উত্তরে আমি বললাম, নিশ্চয়! আপনি যা বলেছিলেন তাই হয়েছে। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহ পাকের সত্য নবী।
উল্লেখিত বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর দুটি ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হয়েছে।
প্রথম ভবিষ্যদ্বাণীটি হিজরতের পূর্বে করেছিলেন এবং দ্বিতীয়টি মক্কা বিজয়ের দিন। অর্থাৎ বাইতুল্লাহর চাবীও তাঁর হাতে এসেছিল এবং ওসমান বিন তালহার হাতে চাবী প্রদানের পর হতে অদ্যবাঁদি তাদের খান্দানের হাতেই তা রয়েছে এবং তারাই বাইতুল্লাহর ফটক খোলেন ও বন্ধ করেন। (তাবাকাত ইবনে ছায়াদ)