আবদুল্লাহ ও সা’দের আভিলাষ—আমরা সেই সে জাতি –– আবুল আসাদ

উহুদের যুদ্ধক্ষেত্র। যুদ্ধের আগের দিন সন্ধ্যা। হযরত আবদুল্লাহ ইবন জাহাশ গিয়ে সা’দ ইবন রাবীকে বললেন,
“চল আমরা একত্রে দোয়া করি। আমি দোয়া করব, তুমি ‘আমীন’ বলবে। আবার তুমি দোয়া করবে, আমি ‘আমীন’ বলব।”

প্রথমেই প্রার্থনা করলেন হযরত সা’দ। তিনি দুটি হাত উর্ধে তুলে বললেন,
“হে আল্লাহ, আগামী কালের যুদ্ধে এক ভীষণ যোদ্ধা আমাকে জুটিয়ে দিন, তাকে যেন যুদ্ধে পরাজিত করে আমি গাজী হতে পারি, আর পরিত্যক্ত মাল-সম্ভার আমি লাভ করি।”

সা’দের এ প্রার্থনায় আবদুল্লাহ ইবন জাহাশ ‘আমীন’ বললেন। তারপর জাহাশের পালা। জাহাশ দু’টি হাত তুলে মহা প্রভুর দরবারে সানুনয় প্রার্থনা জানালেন,
“হে আল্লাহ, আগামী কাল যুদ্ধে আমাকে অতি বড় এক শত্রুর মুখোমুখি করুন। আমি যেন সর্বশক্তি দিয়ে তার মোকাবিলা করি এবং অবশেষে যেন শাহাদাতের অমৃত স্বাদ লাভ করতে পারি। শত্রুরা যেন আমার নাক-কান কেটে নেয়। পরে কিয়ামতের দিন আমি যখন আপনার সমীপে উপস্থিত হব, তখন আপনি জিজ্ঞেস করবেন, ‘আবদুল্লাহ, তোমার নাক-কান কেন কাটা গেছে?’ তখন আমি উত্তর দেবো, ‘হে আল্লাহ, আপনার এবং আপনার রাসূলের রাস্তায় কাটা গেছে।’”

আব্দুল্লাহ প্রার্থনা শেষ করলে সা’দ ‘আমীন’ বললেন।

পরের দিন উহুদের ঘোরতর যুদ্ধে তাঁদের প্রার্থনা অনুসারে ঘটনা ঘটল। সা’দ গাজী হয়ে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে এলেন। কিন্তু হযরত আবদুল্লাহ ইবন জাহাশ তাঁর প্রার্থনার মুতাবিক শহীদ হলেন। সন্ধ্যার সময় যখন শহীদদের লাশগুলোর সন্ধান করা হলো, তখন দেখা গেল যুদ্ধক্ষেত্রের কেন্দ্রভূমিতে আবদুল্লাহ শহীদ হয়ে পড়ে আছেন। তাঁর নাক-কান কাটা। তাঁর হাতে তখনও তরবারি ধরা। কিন্তু শহীদদের সে তরবারির অর্ধাংশ ভাঙা।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!