আদম (আঃ)-এর দেহে রুহের প্রবেশ
এ ঘটনার চল্লিশ দিন পর হযরত আদম (আঃ) এর রুহ সৃষ্টি হলে তখন জিব্রাইল, মিকাঈল, ইসরাফীল (আঃ) এর প্রতি আদমনের রুহ দেহ পিঞ্জরে পৌঁছে দেয়ার আদেশ করা হয়। তাঁদের প্রত্যেকের সাথে সত্তর হাজার ফেরেশতা। আদমের রুহ একটি নূরের পাত্রে করে আরেকটি নূরের ঢাকনা দিয়ে ঢেকে এনে আদম (আঃ) এর মস্তকের ওপর রেখে ঢাকনা উঠিয়ে ফেলে।
কেমন করে আদমের রুহ দেহ পিঞ্জরে প্রবেশ করে তা দেখার জন্য সপ্ত আকাশে ফেরেশতার আগমন হয়। যখন শব্দ হল- হে রুহ! এ দেহে পিঞ্জরে প্রবেশ কর। তখন আদম (আঃ) এর রুহ দেহ পিঞ্জরের চারিদিকে সাতবার চক্কর দেয়। কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে নিবেদন করে হে আল্লাহ! আমি নূরের তৈরি, আর এ দেহ পিঞ্জর অন্ধকার আবর্জনাপূর্ণ, কেমন করে এতে আমি প্রবেশ করব। আবার শব্দ হল হে আদমের রুহ! অনিচ্ছায় এ দেহে পিঞ্জরে প্রবেশ কর এবং অনিচ্ছায় বের হয়ে এসো।
এ নির্দেশ পেয়ে আদমের রুহ রন্ধ্র পথে দেহ পিঞ্জরে প্রবেশ করে মস্তিস্কের চতুর্দিকে ঘুরতে থাকে। যখন আদম (আঃ) চোখ খোলেন তখন তার রুহ মাথা থেকে কণ্ঠনালিতে, কণ্ঠনালি থেকে বক্ষে এবং বক্ষ থেকে নাভি পর্যন্ত পৌঁছে, কর্দমাক্ত দেহ পিঞ্জর গোশত, হাড় অস্থিমজ্জা ও অন্ত্রে রুপান্তরিত হওয়ার ফলে আল্লাহর কুদরতে যখন আদম (আঃ) যমীনের ওপর হাতে ঠেস দিয়ে উঠতে চান, তখন ফেরেশতা বলে উঠেন- এ বান্দাহ ত্বরাপ্রবণ হবে। এখনও তার শরীর অর্ধেক কর্দমাক্ত অথচ সে ওঠতে চাচ্ছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন,
অর্থঃ মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে ত্বরাপ্রবর্ণ করে। যখন আদম (আঃ) স্বীয় দেহের প্রতি তাকিয়ে দেখলেন, আল্লাহ পাক তাকে কি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। এ সময় তার রুহ জোড়া, রগহমূহ, গোশত, হাড় ও অস্থিমজ্জা, মোট কথা সমস্ত শরীরে বায়ুর ন্যায় ঘুরতে থাকে। তখন যখন আদম (আঃ) -এর মস্তককে শুইয়ে দেয়ার এবং চেহারা মর্দনের জন্য ফেরেশতাদের পাঠান হয়।
এ অল্পক্ষণ পরেই তার হাঁচি আসে। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আগত এলহামের শিক্ষানুসারে যখন হযরত যখন আদম (আঃ) আলহামুদ লিল্লাহ বলে উঠেন। উত্তরে আল্লাহ পাকের তরফ থেকে বলা হয় ইয়ারহামুকাল্লাহ। কেউ কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদু লিল্লাহ বললে উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা মুসলমানদের ওপর ওয়াযিব করা হয়েছে।