আত্নহত্যা

ঘটনাটি ঘটেছিল আমাদের গ্রামে ১৯৯৫ সালের কোন এক মাসের ২২ তারিখ সকালে। ঘুম থেকে উঠার শুনতে পাই আমাদেরগ্রামের এক ছেলে ফাঁসি নিয়ে আত্নহত্যা করছে। শুনে মনটা ভিষণ খারাপ হয়ে গেল দুই দিন আগে তার সাথে নাস্তা করলাম মনটাকে মানাতে পারছিলামনা।ছেলে টা ছিল হিন্দু আর তার নাম ছিল রাতুল সাহা। আমরা সবাই তাকেরাতুল’দা বলে ডাকতাম। রাতুল’দা পড়াশুনা করতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে র বাংলা বিভাগে। তার মৃত্যু তার বন্ধুরাও সহজে মেনে নিতে পারে নি। খুব খারাপ লাগলেও তাকে সৎকার করার জন্য তার বাড়িতে সবাই যাই।দাহ শেষ করে আমরা চলে আসি। এ ঘটনার পাঁচ দিন পর রাতুলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বনন্ধু ছিল, তার নাম রানা, এক সে রাত্রে বাড়ি যাবার সময় শোনে কে যেন তার নাম ধরে ডাকছে।

গলাটা রাতুলের মত লাগলেও সে বিশ্বাস করতে পারছিলোনা। মনে মনে ভাবছিলো রাতুল তো পাঁচ দিন আগেই মারা গেছে, ও আমাকে কেন ডাকবে। মনের ভুল ভেবে সে আবার হাঁটতে লাগলো। আবারকিছু দূর হাঁটার পর শুনতে পেল কে যেন খুব কাছ থেকে বলে উঠলো – “কিরে রানা শুনছিস না তোকে আমি ডাকছি!” এবার রানা ভয় পেইয়ে গেলো।এরপর আর কি হল রানা বলতে পারে নি।
এর সাত দিন পরের ঘটনা। রাতুল’দার পাশের বাড়ির এক বয়সী হিন্দু ভদ্রলোক থাকতেন।

তাকে সবাই কাকা বলেডাকতো। তিনি মাঝরাতে বাথরুম করার জন্য প্রায়ই উঠতেন। তো সেদিনও তিনি বাথরুম সেরে ঘরে আসছিলেন। আসার সময় তিনি হঠাৎ শুনতে পেলেন কে যেন তাকে বলছে – “কাকা ভাল আছো?” এ কথা শুনেকাকা একটু অবাক হলেন। ভাবলেন এই মাঝরাতে এখানে এসে কে তাকে ডাকলো! অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।

সেই কন্ঠটা আবারো বলে উঠলো-“কাকা ভালো আছো?” কাকা এরপর বুঝতে পারলেন যে এটা আসলে রাতুল’দা এর গলা। কাকা অনেকতুকতাক আর তন্ত্র-মন্ত্র জানেন, এই ধরনের ঘটনা তার সাথে আগেও ঘটেছে। তাই তিনি তার স্বভাবমত কথা বলতে শুরুকরলেন। কাকা জিজ্ঞেশ করলেন – “তুই এখানে কেন?” উওরে রাতুল’দা বলল – “আসলাম তোমাদের দেখতে।“ কাকা বললেন – “তুই এখান থেকে চলেযা রাতুল” এই কথা শুনে রাতুল’দা কাকার সাথে তর্ক শুরু করে দিলো।

অনেক্ষন তর্কের ষেশে কাকা রাতুল’দা কে চলে যাবার জন্য বোঝাতে সক্ষম হলেন। এরপর রাতুল’দা ছলে গেলো। যাবার আগে কাকার সাথে তার ঠিক কি কি কথা হয়েছিলো তা আমাদের কাওকে কাকা কোনদিন বলেননি, আমরা জোর করলেও …………………।

সমাপ্ত

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!