আজব এক ভাসমান গ্রাম

গ্রামটি ভাসমান, তবে এমন এক জায়গা যেখানে কেউ ডাঙায় পা দেয় না।  জলের দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগত।  যেখানকার বাসিন্দারা কখনো ডাঙায় পা দেননি।

গ্রামের নাম সান্তাদু।  চীনের নিঙদে শহর থেকে ৩০ কিমি দূরে গ্রামটি।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের এই গ্রামটা জাপানি বোমার আঘাতে একেবারে তছনছ হয়ে গিয়েছিল।

গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল গ্রাম।  কিন্তু জীবন ভারী অদ্ভুত, সৃষ্টিও ভারী অবাক করা।  ধ্বংসের মধ্যেও তৈরি হলো আশ্চর্য এক গ্রাম, যা শুধু ভেসে থাকে জলের ওপর।

বাঁশ, ফেলে দেয়া প্লাস্টিক দিয়ে নতুন গ্রাম গড়লেন বাসিন্দারা।  গ্রামে কাঠের তৈরি অনেক বাড়ি আছে, রেস্তোরাঁ আছে, একটা থানাও আছে।  কিন্তু সবগুলোই শুধু ভেসে থাকে।  কাঠের বাড়িগুলোর মধ্যে এমনভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে যে, ভেসে থাকাটা সহজ হয়।

মাছ ধরাই গ্রামের বাসিন্দাদের মূল জীবিকা।  প্রকৃতিও একেবারে ঢেলে দিয়েছে এই গ্রামকে।  চিংড়ি, কুচো চিংড়ি, গলদা চিংড়ি থেকে শুরু করে নানা ধরনের মাছ আছে এই গ্রামের জলের তলায়।

এখান থেকেই পাওয়া যায় চীনের সেরা ‘সি ফুড’।  মনের আনন্দে এখানকার বাসিন্দারা দিনভর মাছ ধরে বেড়ান।  আর রাতে ভাসমান গ্রামে চলে উত্‍সব। তখন দূর থেকে ভারী অদ্ভূত দেখায় এই গ্রামকে।

মনে হয় যেন প্রতিকূলতাকে অন্ধকারে রেখে আলোয় ভেসে চলছে উত্‍সব। প্রকৃতির রোষানলে মানুষকে পড়তে হয় মাঝেমধ্যেই।  তবু তার মোকাবেলা করেই বেঁচে থাকে মানুষ।  যেমন বেঁচে আছে সান্তাদু গ্রাম।  বেঁচে আছে ভেসে থেকেই।  আছে বেঁচে থাকার পণ নিয়ে কিছু মানুষের চোয়ালচাপা লড়াই ।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!