আগন্তুক ভূত

ঘটনা টা আমার আম্মুর কাছ থেকে শোনা। আম্মু তখন অনেক ছোট। আমি আম্মুর হয়ে বলছি – আমাদের বাড়ির বর্ণনা টা একটু দেই, বাড়ির পাশে ছিল একটা ঘন জঙ্গল, তার পাশে ছিল মাঠ, পুকুর ইত্যাদি। জঙ্গলের ভিতরে ছিল একটা শিমুল গাছ। জঙ্গল থেকে দূরে আরও দুটি বড় শিমুল গাছ ছিল। গাছগুলোকে সবাই ভুতুরে গাছ বলেই জানত।

এবার ঘটনায় আসি, আমার বয়স তখন ১৩ কি ১৪ হবে। আমরা এবং আমাদের চাচা, কাকারা একসাথে থাকতাম। আমার এক চাচির সারা শরীরে অনেক ব্যথা ছিল, যে জন্য সে একা একা চলাচল করতে পারত না। সে কোথাও গেলে তার সাথে একজনকে যেতে হত। একদিন রাতের বেলা সে বাথরুমে যেতে চাইলে আমি তার সাথে যাই। গ্রামে সাধারণত বাথরুম থাকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে। আমাদের বাথরুম টা ছিল জঙ্গলের দিকে।

আমি চাচিকে ধরে ধরে নিয়ে গেলাম বাথরুমের দিকে। সে যখন বাথরুমের কাছাকাছি গেল, তখন যেটা হল সেটা আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারি না। সে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে জঙ্গলের দিকে দিল দৌড়। আমি ভয় পেয়ে গেলাম, ভাবলাম এটা কিভাবে সম্ভব? যে একা কিছু করতে পারে না, সে কিভাবে আমাকে ধাক্কা মেরে দৌড় দিল?

আমি গিয়ে সবাইকে বিষয়টা বললাম। সবাই জঙ্গলের দিকে খুঁজতে চলে গেল, সাথে আমিও গেলাম। সে সময় টর্চ লাইট ছিল না। সবাই মোমবাতি, কুপি সাথে নিয়ে গেল। খুঁজতে খুঁজতে সবাই একসময় জঙ্গলের ভিতরের শিমুল গাছটার কাছে গেল। গিয়ে দেখল চাচি গাছটার গোড়ায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। সবাই তাকে কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে গেল।

জ্ঞান ফিরার পরও সে ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে পারল না। পরে একটা কবিরাজ আনা হল। তারপর কবিরাজ যেটা বলল সেটা হল, এই বাড়ীতে একটা ভাল জিন এবং ঐ শিমুল গাছটায় একটা খারাপ জিন বসবাস করে। শিমুল গাছটার জিন সবার অমঙ্গল করতে চায় এবং বাড়ির জিন তার খারাপ কাজে বাধা দেয়। খারাপ জিন আমার চাচিকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। সে জন্য তাকে বাথরুমের সামনে থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল।

খারাপ জিনটা যদি চাচিকে গাছের উপর তুলতে পারত, তাহলে চাচিকে বাঁচানো যেত না। ভাল জিন চাচিকে গাছের উপর তুলতে দেয়নি এবং তাকে মারতে দেয়নি।

জঙ্গলের ভূত

ভূতের আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *