কবি আক্কাইচ্চার স্বভাব হল সে কারনে অকারণে তার বৌকে নানান ব্যাপারে সন্দেহ করে । বৌ যদি বাপের
বাড়ি যেতে চায় আক্কাইচ্চা দরজা ধরে চ্যাগায়া দাঁড়ায় বলে, – আই সে স্টুপ । আই সে স্টুপ
কবি আক্কাইচ্চা কথায় কথায় ইংলিশ বলার ট্রাই করে ।
সে বিয়ে করার দিন তার শশুর কে ইচ্ছা মত । ইংলিশে কথা বলেছে । ভাবটা এমন । দেখ ব্যাটা আমি কি
ইংলিশ পারি । ইংলিশ ম্যান । সে শশুর কে দেখেই বলল,
– আসসালামু আলাই কুম ব্রাদার ইন লো । কেমন আছেন ব্রাদার ইন লো?
আক্কাইচ্চার শশুর আক্কাইচ্চার মুখে ব্রাদার ইন লো ডাক শুনে বেহুঁশ হয়ে গেল ।
আক্কাইচ্চার তখনই মনে পড়ল । ব্রাদার ইন লো অর্থ তো “শালা” ইশ বিগ মিসটেক বিগ মিসটেক ।
আক্কাইচ্চা মাঝে মাঝেই বিগ মিসটেক করে ফেলে । অফিসে কাজে বসেও তার বিগ মিসটেক হয়ে যায় ।
একদিন অফিসে বসে আক্কাইচ্চার চায়ে বিস্কুট ভিজিয়ে খেতে ইচ্ছা করল ।
সে চোখ বন্ধ করে ভ্রমর কইও গিয়া গানটা গুনগুণ করে গাইতে গাইতে ফোন করল কেরানীকে , – ফ্রি আছো?
– মানে?
– আরে মানে কি? বলতেছি তুমি কি কাজ করতেছ নাকি
ফ্রি আছ?
– ফ্রি আছি ।
– তাইলে এক কাপ দুধ চা আন । তিন চামচ চিনি দিবা ।
সাথে টোস্ট বিস্কুট
– মানে?
– এতো এতো মানে কর কেন রে বাপ । যা বলছি তা কর?
– হোয়াট দ্যা হেল ইয়ু আর?
– মানে?
– আপনি কে আক্কাইচ্চা সাহেব?
– হ্যাঁ ।
– আপনার মাথা ঠিক আছে? আমি আপনার অফিসের বস ।
আপনি আমাকে ফোন দিয়ে চা আনতে বলছেন
এই কথা শুনে আক্কাইচ্চা লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গেল । হায় হায় সে কেরানি কে ফোন দিতে গিয়ে ভুল করে বস কে ফোন দিয়ে বসে গেছে । এমন ভুল মাঝে মাঝেই আক্কাইচ্চার হয়ে যায় । ইদানীং
সমস্যার মধ্যে যোগ হয়েছে অকারণে স্ত্রীকে সন্দেহ
করা । তার কেন জানি মনে হয় বাসার বাড়িওয়ালার
সাথে তার বৌ এর একটা ইয়ের ব্যাপার আছে ।
বাড়িওয়ালা শালা কেমন জানি দাঁত কেলিয়ে কথা
বলে । সামথিং ভেরি রং । আক্কাইচ্চা তলে তলে কম
যায় নি । বাড়িওয়ালাকে গভীর রাতে ফোন দিয়েছে ।
অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে ভরাট গলায়
বলেছে,
– হ্যালো আপনার স্ত্রী কে একটু ফোনটা দেন
– কেন আপনি কে?
– আহা আমাকে আপনে চিনবেন না আপনার স্ত্রী
আমাকে চিনে
– আমার স্ত্রী আপনাকে চিনে
– হ্যাঁ
– ওকে কথা বলুন আমার স্ত্রীর সাথে
বাড়িওয়ালার স্ত্রী ফোন ধরেই বলেছে,
– হ্যালো কিডা আপনে?
– আমি তোমার প্রেম কুমার?
– কি নাম আপনের ?
– প্রেম কুমার । প্রেম কুমার ।
– প্রেম কুমার? ফাইজলামি করার জাগা পাছ না?
লাত্থায়া তোর কোমর ভাইঙ্গালামু ।
আক্কাইচ্চার ঔষধে কাজ হয় নি । বরং পরের দিন
সকালে আবার বাড়িওয়ালা এসে দাঁত কেলিয়ে গেছে ।
আক্কাইচ্চা সকাল বেলা বৌ এর সাথে বিশাল বকা
বাধ্য করে অফিসে গেছে । অফিসে কেউ নাই । বস আসে
নাই । কিন্তু বসের সাথে কথা বলা দরকার । আক্কাইচ্চা
বসের বাসায় ফোন দিল ।
ওপাশ থেকে একজন মহিলার কণ্ঠ শোনা গেল ।
আক্কাইচ্চা মিষ্টি করে বলল,
– ভাবী ভালো আছেন? আমি আক্কাইচ্চা । আপনার কথা
বস খুব বলে । ভাবী আসলে বস আপনাকে অনেক
ভালোবাসে
– এইডি আপনে কি কইন?
– জি ভাবী বস আপনাকে অনেক লাভ করে । লাইক করে ।
– সত্য?
– সত্য মানে এক শ ভাগ সত্য ।
– থেংকু থেংকু
আক্কাইচ্চা ফোন রেখে দিল । আর তখনই বস এল অফিসে
। একটু পর বস থাকে বসের রুমে ডাকলেন । এবং
জানালেন বসের স্ত্রী বসের সাথে খুব ঝগড়া করতেছে ।
কারন আক্কাইচ্চা বসের বাসায় ফোন করে বসের বাসার
কাজের মহিলাকে বলেছেন । বস নাকি ঐ মহিলাকে
অনেক ভালোবাসেন ।
আক্কাইচ্চা বসের সব কথা শুনে বিড়বিড় করে বলল,
– মাইরালা রে আম্রে মাইরালা
বস মুখের চামড়া শক্ত করে বলল,
– আপনার চাকরি শেষ । আপনি কাল থেকে আর অফিসে
আসবেন না ।
আক্কাইচ্চা মুখ কালো করে ঘর থেকে বের হল । গিয়ে
নিজের রুমে বসল । আজ এই রুমে তার শেষ দিন । শেষ এক
কাপ চা খেয়ে সে অফিস থেকে বের হয়ে দু চোখ
যেদিকে যায় চলে যাবে । লাথি মারি এই দুনিয়ার ।
টেলিফোন তুলে আক্কাইচ্চা ফোন দিল,
– হ্যালো এক কাপ চা নিয়ে আস
– মানে?
– মানে মানে করবা না । মানে মানে করলে গরম চা
তোমার ইয়ে দিয়ে ঢুকায়া দেব ।
– হোয়াট ?
– থ্যাবড়া খাইছিস? আমারে চিনস তুই? এক কাপ চা আন ।
নাহলে তোর তিন দিনের ভেতর খবর করাই দেব ।
– হোয়াট? আক্কাস আমি তোমার অফিসের বস । তোমার
চাকরি খেয়েছি দেখে এভাবে ধমক দিবা? প্লীজ
আক্কাইচ্চা আবার ভুল করে বস কে ফোন দিয়ে দিয়েছে
। হায় হায় । বস ওদিক দিয়ে টানা বলে যাচ্ছেন ,
– দেখ আক্কাস রাগ করে লাভ নাই । নিজেদের মধ্যে
ঝগড়া করে লাভ । ওকে তোমার চাকরি আছে । রাগ
করিও না । আমি চা দেবার ব্যাবস্থা করতেছি । শত্রুতা
করিও না ।
আক্কাইচ্চা ফোন রেখে দিল । বাসা থেকে ফোন
এসেছে । স্ত্রীর ফোন ।
– হ্যালো
– হ্যালো বল
– আমি একটু বাপের বাড়ি যাই?
– না
– কেন যাব না কেন?
– আমি বলছি না তাই যাবে না
– তুমি এমন কেন
– কেমন আমি?
– এই যে এমন
– কেমন?
– এই যে আমাকে কোথাও যেতে দেও না
– কেন যেতে দেই না জানো?
– কেন ?
– কারন আমি তোমারে ভালোবাসি
– ইশ কত ভালোবাসা
– হু । সত্য আমার বৌকে ছাড়া আমার একদিন ও চলে না
– ইশ ঢং কত
– হুম ঢং । আই ল্যাবু ভেরি মাচ আই ল্যাবু
– ল্যাবু কি? ঠিক আছে বাজার থেকে ল্যাবু নিয়ে আসিও
। মাংস রান্না করব
– ওকে ল্যাবু বেগুন সব নিয়ে আসব
– ছিঃ তুমি এতো পচা কেন
– পচার কি হইল । আই ল্যাবু সো মাচ
আক্কাইচ্চার বৌ বলল,
– আই বেগুন সো মাচ হি হি হি
কবি আক্কাইচ্চা বিড়বিড় করে বলল,
– মাইরালা মাইরালা
– কেউ আমারে ধর
– আমার বৌ তো দেখি
– আমার চেয়ে বেশী ইতর …
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।