
গোপালের প্রখরভাবে স্মৃতি-শক্তি ছিল। ভালভাবে বলতে হলে বলা যায় অসাধারণ। তার মনের পর্দায় যেন সবকিছু ছাপা হয়ে যায় অবিকল। হাবভাব এমনকি কথার টুকিটাকিও। সাধারণ মানুষের মধ্যে অমন স্মৃতি শক্তি থাকার কথা নয়। একবার নিশ্চিন্ত পুরের জমিদার ঘোড়ায়ে চড়ে যেতে যেতে ন পাড়ার মোড়ে গোপালকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘গোপাল তোমার অসুখ সেরেছে তো?’ গোপাল কোন জবাব দেওয়ার আগেই জোর কদমে ঘোড়া ছুটিয়ে নিশ্চিন্ত পুরের জমিদার সেদিন ওখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। ঐ ঘটনার সাত-আট বছর পরে, আবার ন’পাড়ার মোড়েই গোপালের সঙ্গে নিশ্চিন্ত পুরের জমিদারের হঠাৎ দেখা হয়ে গেল। এবার কিন্তু জমিদার পাল্কি করে যাচ্ছিলেন। ভীষণ গরম পড়ে ছিল বলে পাল্কির দরকা খোলাই ছিল। হাওয়া লাগার জন্য জমিদার নতুন করে প্রশ্ন করার আগেই, সেই সাত-আট বছর আগেকার প্রশ্নের জবাব দিল, ‘আমার অসুখ-সেরে গেছে হুজুর। এখন আমি ভাল আছি।’ জমিদার এ কথার মানে না বুঝতে পেরে, অবাক হয়ে গোপালের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। কিছুক্ষণ পরে যখন কথাটার মানে বুঝতে পারলেন তখন হো-হো করে হেসে উঠে বললেন, ‘ধন্যি গোপাল তোমার দ্বারাই এটা সম্ভব। ঠিক মনে রেখেছ’ …